|
|
|
|
|
|
|
পড়াশোনা... |
|
এ বার কোথায় পড়বে |
স্কুল শেষের রেজাল্ট বেরোল বলে। এ বার বিদেশ? বঙ্গের বাইরে? না এখানে? সন্ধান দিলেন স্বাতী ভট্টাচার্য |
স্কুল শেষ। এ বার কলেজ।
কলেজ নিয়ে কথা শুরু করা যাক দুটো সত্যি-গল্প দিয়ে। প্রথমটা কানে-শোনা, বলেছিলেন এক সাংবাদিক বন্ধু। তাঁর টি ভি চ্যানেলের আলোচনায় আমন্ত্রণ করবেন এক বিখ্যাত বিজ্ঞানীকে। ফোনে কথাটা হচ্ছে এই রকম: আপনার গবেষণার কাজটি তো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আপনি বিষয়টা ব্যাখ্যাও করেন চমৎকার...
হুম্।
সরকারও আপনাকেই এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কমিটিতে রেখেছে, তাই আপনার মতটা দর্শকের কাছে তুলে ধরা খুব দরকার...
হুম্।
আমিও আপনার কলেজেরই ছাত্র, আপনার জুনিয়ার ...
তাই নাকি? কোন ইয়ার তোমার? কোন সাবজেক্ট? আচ্ছা, তোমার অফিসে তো আসছিই, জমিয়ে আড্ডা হবে তখন, হাতে সময় রেখো কিন্তু!
অন্য গল্পটা চোখে-দেখা। এডিনবরার এক পাবের বাইরে টাঙানো ব্যানার। তাতে লেখা, ‘এখানে স্টুডেন্ট লোন থেকে বিয়ার তৈরি করা হয়।’ পয়লা শর্ত: কলেজের বছরগুলো যে কোনও দরজা খুলে দিতে পারে। কোনটা বেছে নেবে তুমি, সে তোমার ব্যাপার। তবে গোড়াতেই প্রশ্ন - কোন কলেজ? সাবজেক্ট বুঝে কলেজ ঠিক করবে, নাকি কলেজের ‘ব্র্যান্ডনেম’ দেখে? শিক্ষকদের নামডাক নিয়ে মাথা ঘামাবে, না চাকরি পাওয়ার চান্স নিয়ে? নাকি কলেজ বাছাইয়ের পয়লা শর্ত হবে ‘ক্যাম্পাস লাইফ’?
এগুলোর উত্তর দেওয়া সহজ নয়, মনে হয় সবই চাই। অথচ কলেজ বাছাই করতে হলে শেষ অবধি কোনও একটা শর্তকে গুরুত্ব দিতেই হয়। বরং দেখে নেওয়া যাক, গত কয়েক বছরে এ শহরের ছাত্রদের মধ্যে কেমন ঝোঁক দেখা যাচ্ছে। কলকাতার কোন কলেজগুলো ছাত্রছাত্রীদের পছন্দের প্রথমে থাকছে, অন্য রাজ্যের কোন কলেজে ছেলেমেয়েরা যাচ্ছে, কেনই বা যাচ্ছে। আর যারা একেবারে বিদেশ পাড়ি দিচ্ছে, তাদের মাথার মধ্যে কেরিয়ার তৈরির কোন ম্যাপ রয়েছে।
প্রবাসী পড়ুয়া:বিদেশে যারা পড়তে যায়, তাদের বেশির ভাগই যায় পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন, পিএইচ ডি করতে। কিন্তু আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্তরেও বিদেশ পাড়ি দেওয়ার ঝোঁক বাড়ছে। অধিকাংশই যাচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে, বাকিরা ম্যানেজমেন্ট পড়তে। ‘এডুকেশন আনলিমিটেড’ সংস্থার শেখর নিয়োগী বললেন, ‘অনেক ছাত্র সেই বিষয়গুলি পড়তে চায় যা এখানে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্তরে খুব বেশি পড়ানো হয় না, যেমন এয়ারোস্পেস, বা অটোমোবাইল, বা বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। এখানে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনের আগে যা শিখতে পারবে না, তার অনেক কিছু বিদেশে আন্ডার গ্র্যাজুয়েটেই শেখা যাবে, এই চিন্তা থেকেই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে বাইরে যেতে উৎসাহিত হচ্ছে ছাত্ররা।’ যারা ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (বি বি এম) পড়তে যাচ্ছে, তাদের প্রধান উদ্দেশ্য বিদেশের এম বি এ কোর্সে সুযোগ পাওয়া। লিবারাল আর্টস বা ইকনমিকস নিয়ে বি এ পড়তে যাচ্ছে অল্প কিছু ছেলেমেয়ে।
ওবামা থেকে অস্ট্রেলিয়া:এখনও যাওয়ার ঝোঁক প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই। আগে ব্রিটেন ছিল অনেকের প্রথম পছন্দ, কিন্তু এখন কোর্স শেষ করার পর দু’বছর ব্রিটেনে কাজ করার অনুমতি আর দেওয়া হচ্ছে না। ফলে কাজের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা, পড়ার খরচ কিছুটা তুলে আনার যে সুযোগ ছিল, তা আর এখন নেই। তাই কানাডা বা অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার ঝোঁক বেড়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় যারা যায়, তাদের অবশ্য কোনও একটা পেশাদারি কাজ শিখে ‘মাইগ্রেশন’ নিয়ে ও দেশে থেকে যাওয়ার আগ্রহই সাধারণত বেশি থাকে, বললেন শেখরবাবু।
কাছেই সিঙ্গাপুর:আরেকটি দেশ এখন কলকাতার ছাত্রদের টানছে, তা হল সিঙ্গাপুর। ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর, কিংবা নান ইয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি, এগুলো বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান, পড়ার খরচও পশ্চিমের তুলনায় কম। আর বিলেত-আমেরিকার মতো অত দূরের দেশ নয় সিঙ্গাপুর, এই ভেবেও একটু স্বস্তি পান অনেক বাবা-মা। ‘ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলে-তে সুযোগ পেয়েও আমাদের একটি ছাত্রী সিঙ্গাপুরে গিয়েছে,’ বললেন মডার্ন হাই স্কুলের ডিরেক্টর দেবী কর। |
|
রেস্তো: বিদেশে থাকা-খাওয়া, পড়াশোনা অবশ্যই খরচ সাপেক্ষ -ফাঁকা সময়ে কাজ করে কিছুটা টাকা তুলতে পারে ছাত্ররা, কিন্তু পরিবারকে বেশ কিছু টাকা দিতে হয়। তার অনেকটা এডুকেশন লোন হিসেবে পাওয়া যায়। বাবা-মায়েরা এই ঝুঁকিটা সন্তানের কেরিয়ারে বিনিয়োগ হিসেবেই দেখেন। এ রাজ্য থেকে বছরে ৩০০-৩৫০ ছাত্র বিদেশে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট পড়তে যাচ্ছে, শেখরবাবুর এমনই আন্দাজ।
ভিন্ রাজ্যে: বেঙ্গালুরু, পুণে, মুম্বই বা দিল্লির কলেজ থেকে প্লেসমেন্ট ভাল হয়, ছাত্রদের ‘স্মার্ট’ তৈরি করা হয়, যাতে তারা কাজের বাজারে চট করে জায়গা করে নিতে পারে, এই বিশ্বাস থেকেও অনেক ছাত্র অন্য রাজ্যে যাচ্ছে। ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে ‘টাই-আপ’ করার কাজে অন্য রাজ্যের কলেজ অনেক এগিয়ে কলকাতার চাইতে। তা ছাড়া মজাদার ক্যাম্পাস লাইফ, হস্টেলে কিংবা পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকার স্বাধীনতা, এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ, সামার ইন্টার্নশিপে কাজের সুযোগ, এগুলোও বাড়তি আকর্ষণ। মুম্বইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্সে ফিজিক্স অনার্স পড়েছে তিতাস রায়। তিতাসের কথায়, ‘কলকাতার বাইরে পড়তে যেতে চেয়েছিলাম। ক্যাম্পাস লাইফ একেবারে আলাদা। অর্ধেক ছেলেমেয়েই অন্য রাজ্য থেকে আসে। ওই তিন বছর আমার দারুণ কেটেছে।’
জাঁকিয়ে দক্ষিণে: ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য দক্ষিণের কলেজগুলোতে যাওয়ার যে ঝোঁক আগে ছিল, মাঝে তাতে ভাটা পড়েছিল এ রাজ্যে প্রচুর বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হওয়ার জন্য। কিন্তু সেগুলো সম্পর্কে অনেকেরই মোহভঙ্গ ঘটেছে। দক্ষিণে যাওয়ার প্রবণতা আবার ফিরছে। তার কারণ অনেকগুলো, জানালেন আশুতোষ গুপ্ত, যিনি বেঙ্গালুরুর ‘গার্ডেন সিটি’ বেসরকারি কলেজের কাউন্সেলার। এক, বায়োটেকনোলজি, মাইক্রোবায়োলজি, জেনেটিকস, বায়োকেমিস্ট্রি, এই বিষয়গুলি নিয়ে এ রাজ্যে বি এসসি করার সুযোগ রয়েছে খুব কম কলেজে। ব্যাঙ্গালোর ইউনিভার্সিটির অধীনে অনেকগুলো কলেজে রয়েছে সেই সুযোগ, আসনও অনেক। দুই, সেখানে নতুন ধরনের কিছু ‘কোর্স কমবিনেশন’ পাওয়া যায়, যেমন জার্নালিজম কিংবা ট্যুরিজম-এর সঙ্গে ইংরেজি এবং সাইকোলজি। সোহিনী মজুমদার কলকাতার কলেজে মাস কমিউনিকেশন নিয়ে ভর্তি হয়েও, এই কোর্সের আকর্ষণে চলে গিয়েছে বেঙ্গালুরু, জানালেন তাঁর মা শুক্লাদেবী। ‘ফ্যাশন টেকনোলজি অ্যান্ড অ্যাপারেল ডিজাইন’ কোর্সও করতে যাচ্ছে অনেকে। তিন, বি বি এম, বি সি এ কোর্সগুলো এ রাজ্যেও করা যায়, কিন্তু দক্ষিণে এগুলো করলে চাকরির সুযোগ বেশি, এমন ভাবছে অনেকেই। |
|
ব্র্যান্ড ভ্যালু: এ ছাড়া রয়েছে ‘ব্র্যান্ড নেম’-এর আকর্ষণ। দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স, মিরান্ডা হাউস বা লেডি শ্রী রাম, চেন্নাইয়ের লয়োলা কলেজ, চেন্নাই প্রেসিডেন্সি, পুণের ফার্গুসন কলেজ, মুম্বইয়ের এলফিনস্টোন বা (কেবল মেয়েদের) সোফিয়া কলেজ, এমন সব নামের ছাপটাই তো স্বপ্ন। কিছু ছাত্র চায় ‘ইন্টিগ্রেটেড কোর্স’-এর সুবিধে। দিল্লির জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি, বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি বা বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স (IISc)-এ বিজ্ঞান বা অর্থনীতি নিয়ে ভর্তি হলে একেবারে পাঁচ বছর পর পোস্ট গ্র্যাজুয়েট হয়ে বেরোনো যায়। হাতে-গোনা কিছু ছাত্র গবেষণার দিকে ঝোঁকে, নিজের বিষয়ের সেরা কাজ যেখানে হয় সেখানেই প্রথম থেকে পড়তে চায়। সেই তাগিদ থেকে গণিতের ছাত্ররা চেন্নাই ম্যাথমেটিক্যাল ইনস্টিটিউট, ইলাহাবাদের হরিশচন্দ্র রিসার্চ ইনস্টিটিউট যায়, বিজ্ঞানের ছাত্ররা যেতে চায় টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ কিংবা IISc তে।
ওহ্ কলকাতা: যাদের প্রথম পছন্দ কলকাতা, তারা পড়বে কোথায়? নানা বিষয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে কথা বললে সেরা কলেজের যে তালিকাটা উঠে আসে, তাতে রয়েছে বেথুন, ব্রেবোর্ন, সেন্ট জেভিয়ার্স, প্রেসিডেন্সি, স্কটিশ চার্চ, মৌলানা আজাদ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষকদের মান এবং ছাত্রদের পরীক্ষার ফল, দুটোর বিচারেই এই প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রায় সব বিভাগ উৎকৃষ্ট। বিষয় অনুসারে মাস্টারমশাইরা কেউ কেউ এর সঙ্গে আরও কিছু কলেজ যোগ করেন। অঙ্ক, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রির জন্য বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির, কেমিস্ট্রির জন্য আশুতোষ, মাইক্রোবায়োলজির জন্য সুরেন্দ্রনাথ, আশুতোষ, নৈহাটি ঋষি বঙ্কিম, ইংরেজির জন্য লোরেটো, ইকনমিকসের জন্য নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন, গোখেল, উইমেন্স ক্রিশ্চিয়ান কলেজ।
স্ট্যাটিসটিক্স-এর জন্য আশুতোষ, কল্যাণী ইউনিভার্সিটি। জিওগ্রাফির জন্য আশুতোষ, বিদ্যাসাগর (মর্নিং)। সাইকোলজির জন্য লরেটো, গোখেল। অঙ্কের সেরা ছাত্রদের জন্য ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট। জুওলজির পরিকাঠামোর জন্য মৌলানা আজাদ বিশেষ অনুদান পেয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে, যার ফলে গ্র্যাজুয়েশন স্তরেই ছাত্ররা গবেষণামূলক কাজ করতে পারবে।
বায়োটেকনোলজি অনেকের খুব পছন্দের বিষয়, কিন্তু কলকাতায় সেন্ট জেভিয়ার্স ছাড়া বি এসসি পড়ার সুযোগ তেমন নেই। তাই অনেকে জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিয়ে প্রাইভেট কলেজগুলোতে বায়োটেক নিয়ে পড়তে যায়। যদিও কাজের ক্ষেত্রে আই আই টি-র ছাত্রদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা তাদের কাছে যথেষ্ট কঠিন হয়। শেষ কথা: তবে একটা বিষয়ে সব মাস্টারমশাই একমত। কলেজে নাম লিখিয়ে টিউটরের কাছে পাঠ নেওয়া এ রাজ্যের কলেজ ছাত্রছাত্রীদের এক মস্ত রোগ। এর ফলে আত্মবিশ্বাস ক্ষয়ে যায়, জানা-বোঝার ভিত নড়বড়ে হয়। উচ্চশিক্ষা কিংবা চাকরির প্রতিযোগিতায় জায়গা করে নেওয়া কঠিন হয়। যেখানেই পড়ো, নিজে পড়ো - এই হল শেষ কথা।
শ্রীচরণেষু বাবা-মা
• কোন বিষয় নিয়ে আপনার সন্তান পড়াশোনা করবে, তা ওকেই নির্বাচন করতে দিন। যদি সে নিজে স্থির করতে না পারে, তা হলে ‘অ্যাপটিচিউড টেস্ট’ দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। মাস্টারমশাইদের সঙ্গেও পরামর্শ করুন।
• সন্তানকে ‘প্ল্যান এ’ তৈরির সঙ্গে সঙ্গে ‘প্ল্যান বি’ তৈরি করে রাখতে উৎসাহ দিন। জয়েন্ট এন্ট্রান্সে না পেলে কী নিয়ে পড়বে? কোথায় পড়বে?
• ওর বিষয়ের সেরা কলেজ কোনগুলি, সেখানে ভর্তির শর্ত কী কী, ফর্ম তোলা, ভর্তির পরীক্ষায় বসার দিন সম্পর্কে আগেই খোঁজ নিয়ে রাখুন। কলেজ নির্বাচনের বিষয়ে শিক্ষকদের সাহায্য নিন। রেজাল্ট বেরোনোর পর কলেজ খোঁজা শুরু করা নেহাত বোকামি।
• শিক্ষাঋণ প্রয়োজন হবে মনে হলে, দু’তিনটি ব্যাঙ্কের সঙ্গে গোড়াতেই কথা বলে রাখুন। গ্যারান্টি কে দেবেন, সম্পত্তি বন্ধক রাখতে হলে কী রাখবেন, যৌথ পরিবারের সম্পত্তি হলে অন্য ভাগিদাররা রাজি আছেন কি না, এই বিষয়গুলি আগেই পরিষ্কার করে রাখবেন। টাকা চাই
• পড়াশোনা, থাকা-খাওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খরচ হবে বছরে ১৮-২০ লক্ষ টাকা। খুব ভাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পড়লে বছরে ৪০ লক্ষ টাকাও লাগতে পারে। আন্ডারগ্র্যা-জুয়েট স্তরে সাধারণত আংশিক স্কলারশিপ-ই পাওয়া যায়। ব্রিটেনে অন্তত ২৫ লক্ষ টাকা প্রতি বছরে খরচ হবে। সিঙ্গাপুরে সরকারি স্কলারশিপ পেলে ৭৫ শতাংশ টিউশন ফি ছাড় পাওয়া যাবে, কিন্তু সই করতে হবে তিন বছরের বন্ড। অবশিষ্ট পড়ার খরচ, এবং থাকা-খাওয়া বাবদ লাগবে বছরে ৯ লক্ষ টাকা।
• মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে হলে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়তে পড়তেই SAT, TOEFL পরীক্ষা দেওয়া দরকার। বছরে ছ’বার পরীক্ষা হয়, মে, জুন মাসে, এবং অক্টোবর - জানুয়ারি প্রতি মাসে এক দিন করে। টোয়েফল প্রতি মাসে হয়। বিশদ জানতে যোগাযোগ USEFI, ফোন ৩৯৮৪৬৩০০। ব্রিটেনে পড়তে হলে দিতে হবে IELTS পরীক্ষা। যোগাযোগ: ব্রিটিশ কাউন্সিল, ২২৮২ ৫৩৭০।
• বেঙ্গালুরু, মুম্বই, দিল্লিতে থাকা-খাওয়ার খরচ মাসে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা ধরে রাখতে হবে। বেসরকারি কলেজ হলে আরও বেশি হতে পারে। থাকার জায়গা কলেজ থেকে দূরে হলে বাজেটে যাতায়াতের টাকা যোগ করতে হবে। সরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় হলে পড়াশোনার ফি সাধারণত সামান্যই হয়। বেসরকারি কলেজ ফি নেয় বিষয় অনুসারে।
• পরিবারের পক্ষে পড়ার টাকা জোগাড় করা যদি কঠিন হয়, তা হলে দুটি উপায় রয়েছে। এক, স্কলারশিপ। দুই, এডুকেশন লোন। দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়তে পড়তেই স্কলারশিপের জন্য তৈরি হতে হবে। www.scholarship-sinindia.com এবং www.studyguideindia.com ওয়েবসাইট দুটি দেখা যেতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকার নিম্নবিত্ত পরিবারের ছাত্রদের কলেজে পড়ার জন্য মাসে হাজার টাকা স্কলারশিপ দেয়। ওয়েবসাইট: www.mhrd.gov.in
• দেশে পড়ার জন্য ১০ লক্ষ টাকা এবং বিদেশে পড়ার জন্য ২০ লক্ষ টাকা অবধি শিক্ষা ঋণ পাওয়া যায়। চার লক্ষ টাকা অবধি কোনও বন্ধকের প্রয়োজন হয় না, তবে বাবা-মাকে ‘co-borrower’ হতে হয়। সাড়ে সাত লক্ষ টাকা অবধি ঋণ নিলে ‘third party guarantee’ দরকার হয়। তার বেশি টাকা নিলে ব্যাঙ্ক উপযুক্ত মূল্যের সম্পত্তি বন্ধক রাখে।
|
|
|
|
|
|