চলে গেল আরও একটা ২৫শে বৈশাখ। রবীন্দ্রতর্পণে মুখর হল রাজ্য। অথচ অবহেলায় অনাদরে কবিগুরুর স্মৃতি বিজড়িত কৃষ্ণনগরের ‘রানিকুঠী’ নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে। কৃষ্ণনগর পুরসভার তরফে ওই ভুতুড়ে ‘রানিকুঠী’র বাইরে অনেক আগে বাড়িটির পূর্ব পরিচয় জানিয়ে একটি ফলক লাগানো হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেখানেই শেষ। অথচ ওই বাড়িতে এক সময় থেকেছেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ওই বাড়ির আরও একটি ইতিহাস রয়েছে। দুর্গাদাস চৌধুরী ১৮৭৩-৭৪ সালে যশোহর থেকে চলে আসেন কৃষ্ণনগরে। তাঁর পুত্র প্রখ্যাত সাহিত্যিক বীরবল, অর্থাৎ প্রমথ চৌধুরির বয়স তখন মাত্র ৫ বছর। প্রথমে তাঁরা ভাড়া বাড়িতে বসবাস করলেও ১৮৭৭ সাল নাগাদ কৃষ্ণনগরের সাহেব পাড়ায় ওই বাড়িটি কেনেন। অবশ্য ‘রানিকুঠী’ নামকরণ হয় তার অনেক পরে। প্রমথবাবুরা ছিলেন ৭ ভাই ৩ বোন। বড়ভাই আশুতোষ ছিলেন প্রখ্যাত ব্যারিস্টার ও রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ১৮৬৬ সালে তিনি কবির দাদা হেমন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেয়ে প্রতিভাদেবীকে বিয়ে করেন। প্রমথবাবুর আরও দুই ভাই ঠাকুরবাড়ির জামাই ছিলেন। প্রমথ চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে হয় সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কন্যা রবীন্দ্রস্নেহধন্যা ইন্দিরাদেবীর। ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে চৌধুরি পরিবারের আত্মীয়তার সূত্রে বেশ কয়েকবার ‘রানিকুঠী’তে এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। তার মধ্যে ১৮৬৬ সালে বেশ কিছুদিন ওই বাড়িতেই কাটিয়েছেন তিনি। সেই বাড়িটি সংরক্ষণের অভাবে এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অবিলম্বে সংস্কার করে ‘হেরিটেজ’-এর তকমা দেওয়া জরুরি। প্রমথ চৌধুরী ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহৃত সামগ্রী রেখে বাড়িটি একটি সংগ্রহশালার রূপ দিতে পারলে সেটি একটি দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠবে।
শুভায়ু সাহা, বহরমপুর
|
রঘুনাথগঞ্জ-জঙ্গিপুর শহরে সম্প্রতি রিকশার দৌরাত্ম্য চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইচ্ছা মতো ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। অসুস্থ, শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও মহিলাদের অবস্থা আরও করুণ। তাঁদের অনেক সময় বাস ও ট্রেন ধরার জন্য রিকশা চড়তে হয়। সে ক্ষেত্রে অনেক সময় রিকশাচালকেরা যেতে চান না। গেলেও অস্বাভাবিক রকমের চড়া ভাড়া দাবি করেন। রাজ্যের বিভিন্ন পুর এলাকায় রিকশাভাড়ার চার্ট টাঙানো থাকলেও জঙ্গিপুর পুরসভায় তার বালাই নেই। অথচ রিকশা ভাড়ার চার্ট স্ট্যান্ডে টাঙানোর জন্য ওই পুরসভার নাগরিকেরা দীর্ঘ দিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। অবৈধ ভাড়ার দাপট ছাড়াও ভাগীরথী পাড়ের ওই ‘যমজ’ শহরে চলছে লাইসেন্সবিহীন মোটরচালিত বড় বড় ভ্যান। অনিয়ন্ত্রিত গতিতে চলছে মোটরবাইক। যেখানে সেখানে দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে চার চাকার যাত্রীবাহী গাড়ি ও মালবাহী গাড়ি। তার ফলে তৈরি হচ্ছে যানজট। বিপন্ন হচ্ছে পথচারীর নিরাপত্তা। পুর-কর্তৃপক্ষ নীরব। ফলে পুলিশ প্রশাসন কি এ ব্যাপারে সজাগ হয়ে বহরমপুরের মতো যানবাহণ নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক পদক্ষেপ করতে পারে না?
কাশীনাথ ভকত, রঘুনাথগঞ্জ
|
নিকাশি ব্যবস্থা ভাল না থাকায় জঙ্গিপুর পুরসভার দরবেশ পাড়া এলাকায় সবজি ও মাছ বাজারের পাশের পুকুরটিতে নোংরা দূষিত জল জমছে। সবজি ও মাছ বাজারের বর্জ্য পদার্থও ওই পুকুরে ফেলা হয়। ওই সব নোংরা-আবর্জনা পচে এলাকার পরিবেশ দূষিত করে তুলছে। তাতে রোগগ্রস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে। ওই সঙ্কটজনক অবস্থা থেকে এলাকার মানুষদের রেহাই দেওয়ার জন্য একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে পুরকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
শান্তনু রায়, রঘুনাথগঞ্জ
|
জঙ্গিপুর পুরসভার ধনপতনগর এলাকায় আলকাপ সম্রাট ঝাঁকসুর জন্মেভিটে ভাগীরথী নদীর পাড় থেকে মাত্র কয়েক হাত দূরে অবহেলায়, অনাদরে অবস্থান করছে। আগাছায়া ভরা জায়গাটি একদা জমজমাট সান্ধ্য আসরের মহড়ার নীরব সাক্ষী। আলকাপ প্রেমে মুগ্ধ হয়ে অনেক গুণীজন ঝাঁকসুর আখড়ায় এসেছিলেন। সেখানের অনগ্রসর চাঁই সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ধনঞ্জয় মণ্ডল ওরফে ঝাঁকসুর জন্ম ও বেড়ে ওঠা। সর্বোপরি ওই এলাকা থেকেই তিনি আলকাপকে লোক-সংস্কৃতির সম্মানজনক জায়গায় উন্নীত করেছেন। স্থানীয় সাংসদ প্রণব মুখোপাধ্যায় ও স্থানীয় বিধায়ক মহম্মদ সোহরব এবং স্থানীয় পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম-সহ জনপ্রতিনিধিদের সবাই বিষয়টি জানলেও ভাঙন প্রতিরোধে আজও কোনও কার্যকর উদ্যোগ দেখা গেল না। অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ করা অনুরোধ জানাই।
শান্তনু সিংহ রায়, জঙ্গিপুর |