রাজ্যের ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’-এর বিরুদ্ধে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে অভব্যতার অভিযোগটিকে ‘ছোট্ট ঘটনা’ বলে অভিহিত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই-ই নয়, ‘কোনও রাজনৈতিক দল’ ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে শাহরুখকে ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ‘কুৎসা রটাচ্ছে’ বলেও তাঁর মন্তব্য। শুক্রবার দু’ দফায় মহাকরণে শাহরুখের ‘পক্ষ’ নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ওয়াংখেড়েতে শাহরুখকে ঢুকতে না দেওয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা উচিত।” তবে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, এক জন
সাধারণ মানুষ হিসেবেই তিনি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করছেন বলে জানান। এ বিষয়ে কি তিনি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন? মমতা বলেন, “এখনই এ ব্যাপারে কিছু বলছি না।”
এ দিন দুপুরে প্রথম দফায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “বিষয়টি অন্য রাজ্যের। ওই রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলাটা ভাল দেখায় না। শাহরুখ এখন বাংলার ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’। কিছু আবেগপ্রবণ বাচ্চাদের নিয়ে সমস্যা হয়েছে বলে শুনেছি।”
পরে বিকেলে ফের সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মহারাষ্ট্রের ওই ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ সম্পর্কেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এটি ছোট্ট ঘটনা। ইচ্ছে করে তো কেউ গণ্ডগোল করতে যায় না! ওঁর (শাহরুখের) বাচ্চার সঙ্গে আরও অনেক বাচ্চা ছিল। পুলিশের দু’এক জন ওকে ধাক্কা দিয়েছে, মারধর করেছে। ও তার প্রতিবাদ করেছে। ঘটনাটি অনভিপ্রেত।” তাঁর মতে, “ঘটনাটিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে অযথা জলঘোলা করার চেষ্টা হচ্ছে। আমার মনে হয় না মহারাষ্ট্রের মানুষ চান, শাহরুখকে বয়কট করা হোক। এটি ওই কমিটির সিদ্ধান্ত।”
পাঁচ বছর ওয়াংখেড়েতে শাহরুখকে ঢুকতে না দেওয়া ‘লঘু পাপে গুরুদণ্ড’ বলেই মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রশ্ন, “কিন্তু কেন হল? কীসের জন্য হল?” নিজেই উত্তর দেন, “খেলাকে তো খেলা হিসেবেই দেখা উচিত। মুম্বই এখানে জিতেছে, এরাও ওখানে জিতেছে।” তবে কি তিনি ইঙ্গিত করছেন, সে দিনের ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ানস হেরে যাওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে? মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, “ইশারা হি কাফি হ্যায়।” এ প্রসঙ্গে ‘কোনও রাজনৈতিক দল’ সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ‘কুৎসা রটাচ্ছে’ বলে অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আগুন নিয়ে খেলবেন না। নিজেরা পারেননি বলে আঙুর ফল আচমকা টক হয়ে গেল?”
মুখ্যমন্ত্রী যেমন বলেছেন, “কোথাও ঢুকতে দেব না, বলাটা অগণতান্ত্রিক,” তেমন আইনজীবী হিসেবে শাহরুখকে ওয়াংখেড়েতে ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, যাবজ্জীবন আসামীও প্যারোলে ছাড়া পেলে টিকিট কেটে খেলার মাঠে যেতে পারে। তাই শাহরুখ ওয়াংখেড়েতে দর্শক হয়েও ঢুকতে পারবেন না, এই সিদ্ধান্ত আইনের চোখে টিকবে না। |