স্পষ্ট মত জয়রামের
অধিগ্রহণে রাষ্ট্রের ভূমিকা থাকা চাই
বেসরকারি শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণে রাষ্ট্রের ভূমিকা থাকতেই হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ। সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গত কাল তাদের সুপারিশে জানিয়েছিল, বেসরকারি শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণে রাষ্ট্রের ভূমিকা থাকতে পারে না। গত কালই ওই সুপারিশের বিরোধিতা করেছিলেন জয়রাম। আজ তিনি বলেন, “বেসরকারি শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণে রাষ্ট্রের ভূমিকা থাকতেই হবে। দ্রুত শিল্পায়ন ও নগরায়ণের জন্যই তা অপরিহার্য।” আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আনন্দ শর্মাও আজ জানিয়ে দেন, এই ধরনের সুপারিশ শিল্পোন্নয়নের গতিকে ব্যাহত করবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওই সুপারিশের বিরোধিতা করবেন বলেও জানিয়ে দেন আনন্দ শর্মা।
শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণে সরকারের ভূমিকার বিরুদ্ধে আগাগোড়াই সরব পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদীয় স্থায়ী কমিটিও তাঁর সুরেই মত দিতে আজ শিল্পমহল তাদের ক্ষোভ গোপন করেনি। তার পরেই মুখ খুলে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জানান, মমতার সঙ্গে দু’দফায় আলোচনা করেই সংসদে জমি বিলটি পেশ করেছে সরকার। প্রয়োজনে এ বিষয়ে আরও এক বার মমতার সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। তা ছাড়া জমি বিল নিয়ে আর এক দফা আলোচনার জন্য দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রীদের সম্মেলন ডাকা হতে পারে বলেও জানান তিনি।
জমি অধিগ্রহণ নিয়ে শতাব্দী প্রাচীন আইনটি বিলোপ করে নতুন আইন করতে প্রায় এক বছর আগে সংসদে ‘জমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন এবং পুনঃস্থাপন’ বিল পেশ করে সরকার। বর্তমান বিলে বলা হয়েছে, কোনও বেসরকারি শিল্প সংস্থা কমপক্ষে ৮০% জমি অধিগ্রহণের পর যদি দেখা যায় যে বাকি জমি অধিগ্রহণে সমস্যা হচ্ছে, তবে সরকার ওই বাকি ২০% জমি অধিগ্রহণে হস্তক্ষেপ করতে পারে। কিন্তু বিলটি বিবেচনা করে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কাল যে রিপোর্ট সংসদে পেশ করেছে, তাতে বেসরকারি শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণে রাষ্ট্রের ক্ষমতা বিলোপের সুপারিশ রয়েছে। এমনকী কমিটির মতে, কোনও প্রকল্প থেকে মুনাফা আয়ের উদ্দেশ্য থাকলেই তা অধিগ্রহণে সরকারের এক্তিয়ার থাকবে না।
স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ হতেই উদ্বিগ্ন শিল্পমহল প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে। বণিকসভাগুলির মতে, এমন কঠোর জমি আইন প্রণয়ন হলে তা দেশের শিল্পায়নের পথে বড় রকমের প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াবে। শিল্পমহলের প্রতিক্রিয়া জানার পরেই নড়েচড়ে বসে সরকার। দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে জয়রাম বলেন, “একটা বিষয় স্পষ্ট করে দিতে চাই এবং তা হল, বেসরকারি শিল্প স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণে সরকারের এক্তিয়ার থাকতেই হবে।” তাঁর বক্তব্য, এমন একটা সময়ে সংসদে বিলটি পেশ হয়েছে, যখন বিনিয়োগের বাতাবরণ অনিশ্চিত। শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণে সরকারের ন্যূনতম এক্তিয়ার বিলোপ করে দিলে সেই বাতাবরণ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। অথচ সময়ের দাবিই হল, আর্থিক বৃদ্ধিতে অগ্রাধিকার দেওয়া। তাই জমি বিল এমন হওয়া উচিত, যা কৃষক ও জমি মালিকদের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখার পাশাপাশি শিল্পায়ন ও উন্নয়নের সহায়ক হবে।
জয়রামের মতে, ভারত এখনও উন্নয়নের সেই স্তরে পৌঁছয়নি, যেখানে জমি অধিগ্রহণে সরকারের কোনও ভূমিকা থাকবে না। সেই পরিস্থিতি হতে আরও অন্তত কুড়ি বছর লাগবে। জয়রামের কথায়, “কুড়ি বছর পর হয়তো আর জমি বিলের কার্যকারিতাই থাকবে না। কারণ তখন মানুষ আরও সচেতন হবেন। জমিও অপ্রতুল হবে। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতা বসে শর্ত স্থির করে ফেলবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.