সৌমিত্র কুণ্ডু • শিলিগুড়ি |
অনিচ্ছুকদের জমি ফেরৎ দেওয়া-সহ পুনর্বাসন প্যাকেজের সমস্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল। অথচ তা না দিয়েই প্রস্তাবিত কাওয়াখালি উপনগরীর জমিতে দুইটি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জমির পাঁচিল দেওয়ার কাজ শুরু করার অভিযোগে ক্ষুব্ধ জমিহারারা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন। বুধবার তৃণমূলের পশ্চিমবঙ্গ কৃষি জমি জীবন এবং জীবিকা রক্ষা কমিটির ব্যানার নিয়ে ওই জমির মালিকেরা আন্দোলনে নামে। আধ ঘন্টা অবরোধের পর পুলিশ প্রশাসনের তরফে জমিহারাদের দাবির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর আশ্বাস দেওয়া হলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গ কৃষি জমি জীবন এবং জীবিকা রক্ষা কমিটি গড়েই বাম জমানায় কাওয়াখালি প্রকল্পে অনিচ্ছুকদের জমি ফেরতের দাবিতে আন্দোলনে নেমে ছিলেন উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের কোর কমিটির চেয়ারম্যান তথা বর্তমানে উত্তরবঙ্গ উন্নন মন্ত্রী গৌতম দেব, স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী জ্যোৎস্না অগ্রবালরা। জমিহারাদের অভিযোগ, এত দিন জমি ফেরতের দাবিতে যাঁরা আমাদের পাশে ছিলেন এখন ক্ষমতায় এসে তাঁরাই জমি ফেরত না দিয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চাইছেন। বিষয়টি তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বকে জানানোর পর তাঁরা দেখছি দেখব বলে কয়েকদিন কাটালেও কিছু করছেন না দেখে এ দিন বাধ্য হয়ে তাঁরা পথ অবরোধ করেছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “কারা কাজ শুরু করেছে খোঁজ নেব। |
অনিচ্ছুকদের জমি ফেরতের দাবিতে কাওয়াখালিতে পশ্চিমবঙ্গ কৃষি
জমি জীবন ও জীবিকা রক্ষা কমিটির পথ অবরোধ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
অনিচ্ছুক জমির মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। জমির বিষয়টি নিয়ে আমাদের সরকারের একটি নীতি রয়েছে। সেই মতো কাজ হবে। কলকাতা থেকে ফিরে বিষয়টি নিয়ে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।” এসজেডিএ’র উদ্যোগেই বাম জমানায় ৩০২ একর জমিতে প্রস্তাবিত কাওয়াখালি উপনগরীর গড়ার প্রস্তাব নেওয়া হয়। বর্তমানে এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “যাঁরা তৃণমূলের পশ্চিমবঙ্গ কৃষি জমি জীবন ও জীবিকা রক্ষা কমিটির নামে আন্দোলন করছেন তাঁরা দলের কেউ নয় বলেই খবর পেয়েছি। কিছু মানুষের উস্কানিতে তাঁরা পথ অবরোধ করেছেন। অনিচ্ছুকদের জমি ফেরত দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি একটি কমিটি গঠন করাও হয়। ওই কমিটির রিপোর্ট দ্রুত চাওয়া হয়েছে। তা পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” আন্দোলনকারীরা দলের লোক নয় বলে দাবি করলেও কুড়ানু দেব সিংহ নামে যে ব্যক্তির নেতৃত্বের এ দিন জমিহারারা আন্দোলনে নেমেছিলেন তিনি পশ্চিমবঙ্গ কৃষি জমি জীবন এবং জীবিকা রক্ষা কমিটির কাওয়াখালি কমিটির সভাপতি। অতীতে কাওয়াখালি আন্দোলনেও তিনি সামিল ছিলেন। কুড়ানু দেব সিংহ বলেন, “অনিচ্ছুকদের জমি ফেরত দেওয়া হবে বলেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী থেকে এসজেডিএ কর্তৃপক্ষ সকলেই সে কথা জানিয়েছিলেন। জমি ফেরৎ, প্যাকেজের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার পরেই কাজ শুরু করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়। এখন তা মানা হচ্ছে না।” সম্প্রতি অনিচ্ছুক জমির মালিকদের কোথায়, কার কতটা জমি রয়েছে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল তার চেয়ারম্যান জ্যোৎস্না দেবী। তিনি বলেন, “অনিচ্ছুকদের জমি ফেরত দেওয়া হবে বলেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রায় ৫০ বিঘার মতো অনিচ্ছুকদের জমি রয়েছে। বিস্তারিত রিপোর্ট শীঘ্রই এসজেডিএ’কে দেওয়া হবে। বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাজ শুরু করেছে বলে কিছু আমাকে জানানো হয়নি। তবে পড়ে থাকা জমি অনেক ক্ষেত্রে দখল করে ফের বাসিন্দাদের একাংশ ঘর বানাচ্ছে বলে অভিযোগ মিলছিল। সে কারণে জমি ঘেরা দেওয়ার ব্যাপারে একটা প্রাথমিক আলোচনা হয়েছিল।” |