জলের সমস্যা মিটেছে কিছু দিন আগে। প্রস্তাবিত আদ্রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা পেতে এ বার কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী শ্রীপ্রকাশ জয়সওয়ালের দ্বারস্থ হলেন রেলমন্ত্রী মুকুল রায়। কয়লা মঞ্জুরি সংক্রান্ত প্রস্তাবটি যাতে অবিলম্বে মন্ত্রিসভায় পাশ করানো হয়, তার জন্য কয়লামন্ত্রীর কাছে দরবার করেছেন মুকুল। কয়লা পাওয়ার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত মিললেই পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করবে রেল।
বছর দু’য়েক আগে রেল মন্ত্রক এবং এনটিপিসি-র যৌথ উদ্যোগে আদ্রায় ১৩২০ মেগাওয়াটের ওই বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেলের নিজস্ব তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকলে অর্থ সাশ্রয় হবে, এই যুক্তি থেকেই ওই প্রকল্প গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রেল মন্ত্রক। কিন্তু এত দিন পরেও তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা, নদীর জল এবং পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্রের অভাবে রেল কিংবা এনটিপিসি কোনও সংস্থাই কার্যত কাজে হাত দিতে পারছিল না। প্রকল্পের জন্য ১ কোটি ১০ লক্ষ গ্যালন জলের প্রয়োজন ছিল। দীর্ঘ জটিলতার পর সেই সমস্যা মিটেছে বলেই রেল মন্ত্রকের দাবি।
এ বার কয়লামন্ত্রীকে একটি চিঠিতে মুকুলবাবু জানিয়েছেন, ওই প্রকল্পটির জন্য বছরে প্রায় ৬৮ লক্ষ টন কয়লার নিরবচ্ছিন্ন জোগান দরকার। রেল মন্ত্রকের তরফে এর আগেও বিষয়টি নিয়ে কয়লা মন্ত্রকের কাছে দরবার করা হয়েছিল। তবে বিষয়টি যে হেতু কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদনসাপেক্ষ, তাই এ বার সরাসরি কয়লামন্ত্রীরই দ্বারস্থ হয়েছেন রেলমন্ত্রী।
আসলে প্রকল্পটি ঘোষণার সময়ে জানানো হয়েছিল, বিদ্যুৎ উৎপাদন ২০১৫ সালের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু যে ভাবে তা বিভিন্ন কারণে দীর্ঘসূত্রতার শিকার হচ্ছে, তাতে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কাজ শুরু করা যাবে না বলেই আশঙ্কা করছে মন্ত্রকের একাংশ। রেলের হিসাবে, এই প্রকল্পটি হলে ফি বছর তাদের প্রায় ৯৬৭ কোটি টাকা সাশ্রয় হওয়ার কথা। রেল ছাড়াও পুরুলিয়ার মতো পিছিয়ে থাকা জেলারও ওই বিদ্যুতের একটি অংশ পাওয়ার কথা। রেল মন্ত্রকের বক্তব্য, রাজনৈতিক পালাবদলের পরে পশ্চিমবঙ্গের জন্যও প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, গোটা পরিকল্পনাটির কারিগর ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই দ্রুত ওই প্রকল্পের কাজ শুরু হলে রাজ্যের তরফে সার্বিক ভাবে শিল্পমহলকে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া যাবে। মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে,এই বিষয়ে মহাকরণ থেকেও স্পষ্ট বার্তা এসেছে রেলের কাছে। বলা হয়েছে, রাজ্যের থমকে থাকা প্রকল্পগুলির কাজে গতি আনুক রেল মন্ত্রক। |