|
|
|
|
শিক্ষানুরাগী কিরণশশীকে শ্রদ্ধায় স্মরণ শিলচরে |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
প্রায় আট দশক আগের কথা। সে সময় গুরুচরণ কলেজ যে অসাধারণ রমণীর সহায়তা ছাড়া গড়েই উঠত না, সেই মহীয়সীকে শ্রদ্ধায় স্মরণ করল এ কালের শিলচর।
সেটা ১৯৩৫ সাল। শিলচরে একটি কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ চলছে। কিন্তু টাকা কই? দশ হাজার টাকার সংরক্ষিত তহবিল না থাকলে কলেজ তৈরির অনুমোদন মিলবে না। তখন দশ হাজার টাকা অনেক। সাহায্যে এগিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের বিধবা মহিলা কিরণশশী নাগ। কিছুদিনআগে স্বামী গুরুচরণ নাগ মারা গিয়েছেন। সরকারি কর্মী ছিলেন বলে তাঁর মৃত্যুতে বেশ টাকা পেয়েছিলেন কিরণশশী। আরও কিছু সঞ্চিত অর্থ মিলিয়ে তহবিলের প্রয়োজনীয় পুরো টাকাটাই তুলে দেন তিনি। স্বামীর নামে কলেজ হওয়া চাই, এমন কোনও শর্ত চাপাননি তিনি। শুধু চেয়েছিলেন, মেয়েদের পড়াশোনায় গুরুত্ব দিতে হবে। ৭৭ বছর আগের ওই মহীয়সীকে আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন গুরুচরণ কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা ছাত্র-ছাত্রীরা। ২০০৫ সালে তৈরি হয়েছে কলেজের কিরণশশী মহিলা সেল। আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত হয়েছে সেলের বার্ষিক পত্রিকা ‘কিরণশশী’। কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি সমরকান্তি রায়চৌধুরী আনুষ্ঠানিক ভাবে এটি প্রকাশ করে বলেন, “১৯৩৫ সালে যে মহিলার বিশেষ অবদানে এই অঞ্চলের প্রথম কলেজটি গড়ে ওঠে, তাঁকে অবিস্মরণীয় করে রাখবে এই পত্রিকা। তবে আক্ষেপ, যে কারণে কিরণশশী তাঁর সব কিছু দিয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের মেয়েদের পড়ায় গুরুত্ব দিতে বলেছিলেন, আজও সেই জায়গা থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারিনি।” মহিলা সেলের উপদেষ্টা ছায়া রায় কুণ্ডু বলেন, ছাত্রীদের মধ্যে চেতনা জাগ্রত করতে এবং মূল্যবোধের প্রতিষ্ঠা ও তার অগ্রগতি আনার কথা ভেবেই কিরণশশী নাগের মতো মহিলার আদর্শকে সামনে রেখে, তাঁরা এই সেলের জন্ম দিয়েছেন। কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ বিভাস দেবও জানান, অতি সাধারণ পরিবারের মহিলা কিরণশশী নাগ এগিয়ে না এলে তখন এই অঞ্চলে কলেজের জন্ম হত না। |
|
|
|
|
|