মোদী-ইয়েদুরাপ্পা-বসুন্ধরা, সঙ্কটে ‘ত্রাতা’ জেটলিই
মুম্বইয়ে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের আগে দলের তিন নেতাকে নিয়ে নাজেহাল বিজেপি নেতৃত্ব। আর এই তিন জনকে সামলানোর দায়িত্ব পেয়ে ধীরে ধীরে বিজেপির ‘সঙ্কটমোচক’-এর ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন অরুণ জেটলি।
নরেন্দ্র মোদী, বি এস ইয়েদুরাপ্পা আর বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া।
আর ঠিক এক সপ্তাহ পরেই মুম্বইয়ে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক। এখন থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে, বৈঠকে যাবেন না নরেন্দ্র মোদী। যেমনটি তিনি এর আগে দিল্লির বৈঠকে আসেননি। পাঁচ রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারেও যাননি। সঞ্জয় জোশীকে দলে আনা নিয়ে সভাপতি নিতিন গডকড়ীর উপর সেই যে রুষ্ট হলেন তিনি, সেই ক্ষোভ এখনও অব্যাহত। মোদীর সঙ্গে কথা বলে জেটলির মতো নেতাদের ধারণা হয়েছে, সভাপতি পদে গডকড়ীর মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে কোনও আপত্তি নেই গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু সঞ্জয় জোশীর বিষয়টি এখনও কাঁটার মতো বিঁধে রয়েছে। দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। ফলে গডকড়ীর মেয়াদ বাড়লে তাঁর কিছু এসে যায় না। গডকড়ীর সঙ্গে হৃদ্যতাও তেমন নেই। তবে এখনও পর্যন্ত তিনি মুম্বইয়ের বৈঠকে যাবেন না, সে ধরনের কোনও ইঙ্গিত অবশ্য দেননি। আবার পূর্ব অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে তিনি যাবেনই, সে কথাও বুক ঠুকে বলা যায় না।
দলের কাছে মাথাব্যথার আর এক কারণ কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা। কিছু দিন পরপরই তিনি বিদ্রোহ ঘোষণা করে দলকে চরম অস্বস্তির মুখে ফেলে দেন। কর্নাটক হাইকোর্ট থেকে রেহাই পাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীর গদি ফিরে পাওয়ার জন্য তিনি দলের উপর চাপ দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এখন সিবিআই তদন্ত শুরু হওয়ার পর তিনি চান, নিজে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ফিরে না পেলেও অন্তত তাঁর ঘনিষ্ঠ কেউ যেন সে পদে বসেন। তার জন্য দল ছাড়ার হুমকি পর্যন্ত দিয়ে বসে আছেন তিনি। কিন্তু জেটলিই শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে ‘আপাতত’ তাঁকে নিরস্ত করেছেন। এখনকার মতো তাঁকে এটুকু অন্তত বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে, দল ছাড়লে লোকসান বেশি ইয়েদুরাপ্পারই। তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত কিছুটা শাপে বরও হয়েছে বিজেপি-র কাছে। তাঁরা মনে করছেন, ইয়েদুরাপ্পা যত চাপের মধ্যে থাকবেন, ততই তিনি কম ফোঁস করতে পারবেন। ইয়েদুরাপ্পাকে নিয়ে এখন তাই জেটলিদের কৌশল হল, আইন আইনের পথে চলুক। পাশাপাশি, ইয়েদুরাপ্পাকে বলা হচ্ছে, বিজেপি-র তাঁকে দরকার। তেমনই তাঁরও দরকার বিজেপিকে। তবে এই সবের মধ্যে ইয়েদুরাপ্পাও মুম্বই অধিবেশনে যেতে পারবেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার ‘বিদ্রোহ’ সামাল দিতেও দলের সঙ্কটমোচক সেই জেটলিই। ইয়েদুরাপ্পা যেটা প্রায়ই করে থাকেন, এ বার সেটাই করে বসে আছেন বসুন্ধরা। কিছু দিন আগে আচমকাই দল ছাড়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, দলে তাঁর প্রতিপক্ষদের পিছন থেকে মদত দিচ্ছেন নিতিন গডকড়ী ও সঙ্ঘ নেতৃত্ব। এ ক্ষেত্রেও হস্তক্ষেপ করে বসুন্ধরার ক্ষোভ প্রশমিত করে রাজস্থানে সঙ্কট মোচন করেছেন জেটলি।
বিজেপি-র এক শীর্ষ নেতার কথায়, “সাম্প্রতিক কালে যে নেতারা দলের সঙ্কট বাড়িয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গেই ভাল সম্পর্ক জেটলির। অতীতেও যখন ইয়েদুরাপ্পা ও বসুন্ধরার কারণে দলে সঙ্কট তৈরি হয়েছে, সামলেছেন তিনি। নিজে তিনি মোদীর রাজ্যের সাংসদ। ফলে এই তিন জনের ক্ষেত্রে তাঁকেই সঙ্কটমোচনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু জেটলি কি সব সঙ্কট মেটাতে পারছেন? জেটলির রসিক মন্তব্য, “এই মুহূর্তে রাজস্থান বা কর্নাটকের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলা যায়। কিন্তু গুজরাতে এখনই বলার পরিস্থিতি আসেনি।”

আগাম জামিনের আর্জি ইয়েদুরাপ্পার
সিবিআই আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করলেন বেআইনি খনন-মামলায় অভিযুক্ত কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। সেই সঙ্গে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছেন তাঁর দুই ছেলে বি ওয়াই রাঘবেন্দ্র, বি ওয়াই বিজেন্দ্র এবং জামাই আর এন সোহন কুমার। আজ এই চার জনের বাড়িতেই তল্লাশি চালায় সিবিআই। এর পরেই আগাম জামিনের আর্জি নিয়ে সিবিআই আদালতের দ্বারস্থ হন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর আত্মীয়রা। আর্জির শুনানি হবে কাল। গত ১১ মে অবৈধ খনন মামলায় ইয়েদুরাপ্পা এবং তাঁর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে সিবিআই-কে তদন্তের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। আজ সিবিআইয়ের ৯ সদস্যের একটি দল বেঙ্গালুরুর ডলার্স কলোনি এবং রেসকোর্স রোডে ইয়েদুরাপ্পার বাড়িতে তল্লাশি চালায়। বিশেষ সূত্রের খবর, চার জনের বাড়ি থেকে কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.