যাত্রী হচ্ছিল না দিনের ব্যস্ত সময়েও। চালু হওয়ার দু’মাস বাদেই ‘লেডিজ স্পেশ্যাল’ ট্রামে তাই একটি সংরক্ষিত কামরা কমিয়ে দেওয়া হল। লেডিজ-স্পেশ্যাল দু’টি ট্রামের পিছনের কামরায় এ বার পুরুষদের উঠতে অনুমতি দিলেন সিটিসি-কর্তৃপক্ষ। অন্য দিকে, ‘লেডিজ স্পেশ্যাল’ বাসে যথেষ্ট টিকিট বিক্রি না-হওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন সিএসটিসি-কর্তৃপক্ষ।
গত ৮ মার্চ, নারী দিবসে ঘটা করে চালু হয় ‘মাদার’ ও ‘নিবেদিতা’ নামে দু’টি ‘লেডিজ স্পেশ্যাল’ ট্রাম। রাজাবাজার এবং গড়িয়াহাট ডিপো থেকে মূলত অফিসযাত্রী মহিলাদের নিয়ে যাতায়াত করে সেগুলি। শিয়ালদহ মেন স্টেশনে ট্রেন আসার মিনিট দশেক বাদে ৯টা ৩৫-এ ছাড়ে এর একটি। সিটিসি-র চেয়ারম্যান শান্তিলাল জৈন বলেন, “মাইকে ঘোষণা সত্ত্বেও মহিলা যাত্রী খুব কম। বাধ্য হয়ে পিছনের কামরায় পুরুষদের ওঠার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।”
গত নারী দিবসে সিএসটিসি-র মহিলা স্পেশ্যাল বাসের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছিল মহাকরণের নির্দেশে। শহরের পাঁচটি নির্দিষ্ট রুটে চলছে এ রকম বাস। কিন্তু মহিলা যাত্রী মিলছে নামমাত্র। সংস্থার এক পদস্থ অফিসার বলেন, “মহাকরণ থেকে আয় বৃদ্ধির কথা বারবার বলা হচ্ছে। অথচ, এই সব বিশেষ বাসে প্রতিটি ট্রিপেই যে পরিমাণ তেল বরাদ্দ হয়, তার দামের সামান্য অংশই উঠছে টিকিট বিক্রি করে। উপরমহলের নির্দেশে এই বাস চালু হয়েছিল বলে বন্ধও করে দিতে পারছি না।” |
মহিলা অফিসযাত্রীরা কেন স্বাচ্ছন্দ্যের এই সুযোগ নিচ্ছেন না? পরিবহণ দফতরে এক পদস্থ অফিসার বলেন, “দশটার আগে যাতে যাত্রীরা অফিসে পৌঁছে যেতে পারেন, তা হিসেব করে এই বিশেষ বাস ও ট্রামগুলি হাওড়া-শিয়াদহ ও নির্দিষ্ট কিছু জায়গা থেকে ছাড়ে। কিন্তু কর্মসংস্কৃতি তলানিতে ঠেকেছে। দশটায় অফিসে যাওয়ার আগ্রহ বা তাগিদ প্রায় কারও নেই।” তাঁর মত, মহিলারা অনেকে সাড়ে এগারোটার সময়ে অফিসে যাচ্ছেন ভিড় বাসে।
সিটিসি-র কর্মী-সংখ্যা প্রায় ৬৫০০। মাসে ওঁদের বেতন বাবদ প্রয়োজন ১৪ কোটি টাকা। কিন্তু বাস ও ট্রামের টিকিট বিক্রি করে মাসিক আয় সাড়ে তিন কোটির কিছু বেশি। তাই ফাঁপরে পড়েছেন ট্রাম-কর্তৃপক্ষ। সংস্থার চেয়ারম্যান বলেন, “বালিগঞ্জ থেকে টালিগঞ্জ এবং টালিগঞ্জ থেকে মোমিনপুর ট্রামের এই দু’টি গুরুত্বপূর্ণ রুট ভূগর্ভের নিকাশির কাজের জন্য চার বছর ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে। পুজোর আগে রুট দু’টি চালু করার চেষ্টা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে টিকিট বিক্রি বাবদ আয় কিছু বাড়বে।” |