ট্রাক-বাস সংঘর্ষের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। মঙ্গলবার বিকেলে বর্ধমান-সিউড়ি রোডের তালিতের কাছে ট্রাকের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়েছিল গীতা মাজি (৪৫), ঝর্ণা মুখোপাধ্যায় (৫২) বাস-আরোহী দুই মহিলার। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত্যু হয় সুকুমার গড়াই (৫৪) নামে আরও এক জনের। তাঁদের তিন জনের বাড়ি যথাক্রমে বর্ধমান শহরের শ্যামবাজার, ভাতারের গ্রামডিহি ও ভোতা গ্রামে। অন্য দিকে, মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত দুর্ঘটনায় আহত আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন আউশগ্রামের কয়রাপুরের বাসিন্দা বিপদতারণ ঘোষ (৪৬), ভোতার বাসিন্দা সুকুর মহম্মদ (৩৫) ও রহিম মন্ডল (৩৫) এবং গলসির বুঁইচে গ্রামের বাসিন্দা জানু খাতুন (৭)। এই নিয়ে আপাতত ওই দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো সাতে। জেলা প্রশাসন সূত্রে বলা হয়েছে, ময়না-তদন্তের পর প্রশাসনের উদ্যোগে এ দিন মৃতদেহগুলি তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। |
পুলিশ জানায়, এখনও পাঁচ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ট্রাক এবং বাসের দুইজন চালকই গুরুতর আহত অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আগের দিনের মতো এ দিনও হতাহতদের উদ্বিগ্ন আত্মীয়-পরিজনদের ভিড় ছিল হাসপাতালে। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুর্ঘটনার পরেই হালপাতালে যান জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা। আহতদের চিকিৎসার প্রয়োজনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বাইরে থেকে যে কোনও ওষুধ কিনতে নির্দেশ দেন তিনি। রোগীকল্যাণ সমিতির তহবিল থেকে আহতদের চিকিৎসার ব্যয় মেটানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন আউশগ্রামের ভোদা গ্রামের বাসিন্দা রাজকুমার বাউরি। বর্ধমান রাজ কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র তিনি। মঙ্গলবার বাংলা পরীক্ষা দিয়ে গ্রামে ফেরার সময়েই তিনি ওই দুর্ঘটনায় আহত হন। তা সত্ত্বেও বুধবার ইংরেজি পরীক্ষায় বসেছেন তিনি। মাথায় ব্যান্ডেজ ও হাতে স্যালাইনের নল বাধা অবস্থায় রাজকুমার বলেন, “পরীক্ষায় না বসতে পারলে তো একটা গোটা বছর নষ্ট হবে। তাই হাসপাতালের অনুমতি নিয়ে পরীক্ষায় বসেছি। পরীক্ষার ক’টা দিন হাসপাতাল থেকেই পরীক্ষা দিতে যাব।” কলেজের অধ্যক্ষ সুভাষচন্দ্র নন্দী বলেন, ‘‘ছাত্রটি যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে পারে তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওর বাড়ির লোকজনকে পরীক্ষা কেন্দ্রের বইরে থাকতে বলা হয়েছে।” |