|
|
|
|
থানায় ‘হামলা’, তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ পুলিশের |
শুভাশিস ঘটক • ভাঙড় |
উত্তেজনার পারদ নামছে না দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে।
শনিবার রাতে গ্রেফতার হওয়া দলীয় নেতাকে ছাড়াতে গিয়ে স্থানীয় কাশীপুর থানায় হামলার অভিযোগে এলাকার তৃণমূল নেতা রহিম মোল্লা-সহ বেশ কয়েক জন দলীয় কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করল পুলিশ। আবার রবিবার সকালে ভাঙড়ের সুন্দিয়া এলাকায় অটোরিকশার রুট নির্ধারণ নিয়ে তৃণমূল ও সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মারামারি হয়। পুলিশ লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, “পুলিশের পক্ষ থেকে কাশীপুর থানার ঘটনায় নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে ওই এলাকায় তল্লাশি অভিযান চলছে।” স্থানীয় তৃণমূল নেতা জাহাঙ্গির খাঁ চৌধুরীর
|
সাতেক মোল্লা
ছবি:সামসুল হুদা |
দাবি, ‘‘ভুল বোঝাবুঝির জেরে ছোট ঘটনা ঘটেছে।’’ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান চৌধুরীমোহন
জাটুয়া বলেন, “ওই থানায় কী
হয়েছে তা দেখছি। পুলিশকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছি।”
শনিবার রাত ৮টা নাগাদ কাশীপুরের হাতুলিয়া এলাকায় একটি খড় বোঝাই লরি বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা মারে। খড়ে আগুন লাগে। স্থানীয় লোকজন আগুন নেভান। পুলিশ লরিটি আটক করে থানায় আনে।
এর পরেই থানায় হাজির হন ভাঙড়-১ ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সাতেক মল্লিক।
পুলিশের দাবি, লরিটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য থানায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের উপরে সাতেক ‘চাপ’ দিতে থাকেন। দু’-এক বার লরিটি তাঁর বন্ধুর বলে দাবিও করেন। কিন্তু মালিকানার বৈধ কাগজপত্র জমা না দিলে লরিটি ছাড়া যাবে না বলে পুলিশ জানিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত দাবিতে অনড় থাকায় সাতেককে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ গ্রেফতার করে লক-আপে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।
অভিযোগ, এর পরেই সাতেককে ছাড়াতে রহিম মোল্লার নেতৃত্বে চাঁদপুর এবং খড়গাছি এলাকা থেকে প্রায় চারশো তৃণমূল কর্মী-সমর্থক লাঠি-রড নিয়ে থানায় হাজির হন। সাব-ইনস্পেক্টর চন্দ্রশেখর ঘোষালকে বেধড়ক মারধর করা হয়। থানায় বাইরে থেকে ইট ছোড়া হয়। সাতেককে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ লাঠি চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। রাতে ভাঙড়-১ ব্লকের তৃণমূল নেতা জাহাঙ্গির খাঁ চৌধুরীও থানায় এসে সাতেককে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। গভীর রাতে ব্যক্তিগত জামিনে সাতেককে থানা থেকে ছাড়া হয়। বৈধ কাগজপত্র না মেলায় লরিটিকে ‘বেওয়ারিশ’ হিসেবে দেখিয়ে বারুইপুর আদালতে রিপোর্ট দেয় পুলিশ।
গত সেপ্টেম্বরেই কুলপি থানা থেকে ডাকাতিতে অভিযুক্ত তিন জনকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল কয়েকজন তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় এখনও কেউ ধরা
পড়েনি। এর এক সপ্তাহ পরে জীবনতলাতেও শাসক দলের নেতা-কর্মীদের হাতে পুলিশ আক্রান্ত হয় বলে অভিযোগ। ছিনিয়ে নেওয়া হয় পুলিশের রাইফেল।
শনিবারের ঘটনায় প্রায় ১৫ জন ‘হামলাকারী’কে শনাক্ত করা গিয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। তবে তাঁরা সবাই পলাতক।
সাতেকের বিরুদ্ধে ভাঙড় থানায় একাধিক খুন, তোলাবাজি ও মোটরবাইক ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে। তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। সাতেকের দাবি, “আমি শুধু ফোনে পুলিশকে লরিটি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করি। পুলিশ আমাকে ডেকে পাঠিয়ে লক-আপে ঢুকিয়ে দেয়। আমি না ফেরায় কয়েক জন বন্ধু থানায় এসেছিল। পুলিশ ওদের মারে। আমার গাড়ি ভেঙে দিয়েছে।” বহু চেষ্টা করেও এ দিন রহিম মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। |
|
|
|
|
|