তাইল্যান্ড থেকে আনা অষ্টধাতুর বুদ্ধ মূর্তি অবশেষে মালবাজারের ‘উদীচী’ কমিউনিটি হলে স্থাপিত হল। মূর্তি রাখার জন্য প্যাডোগার আকারে ঘর তৈরি করা হয়েছে। প্রায় ৮ বছর আগে মূর্তি তাইল্যান্ড থেকে আনা হয়। নানা কারণে তা বসাতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার আনুষ্ঠানিক ভাবে তা বসানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, মালবাজারের ভূমিপুত্র তথা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি ভাষার অধ্যাপক ভিক্ষু সত্যপাল তাইল্যান্ডে ২০০০সালে আমন্ত্রিত অধ্যাপক হিসেবে অধ্যাপনা করতে যান। তাইল্যান্ড থেকে ২০০৩ সালে তিনি যখন দেশে ফেরেন, সে সময় সেখানকার ধম্ম হংস ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন তাকে অষ্টধাতু নির্মিত ৫০ টন ওজনের দুটি বুদ্ধ মূর্তি স্মারক হিসেবে দেন। ভারতে থাকা তাই রাষ্ট্রদূত চক ধনেশানন্দ এর মাধ্যমে এই মূর্তি কলকাতা বন্দর মারফত ভারতে আনানো হয়। যার মধ্যে একটি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বসানো হয়। অপরটি ভিক্ষু সত্যপাল মালবাজারে বসানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সেই সময় এই মূর্তিটি ‘উদীচী’ চত্বরে বাম শাসিত পুরবোর্ড বসাতে দিতে রাজি হয়। পরে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট ক্ষমতাসীন হলে মূর্তি স্থাপনের বিষয় থমকে যায়। কংগ্রেসের তদানীন্তন পুরপ্রধান সুলেখা ঘোষের বক্তব্য ছিল, উদীচীর মতো সাংস্কৃতিক হলের সামনে কোন একটি বিশেষ ধর্মকে স্থান দিলে তাতে উদীচী এবং পুরসভার ধর্মীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে। এর পর ২০০৯ সালে ফের বামেরা ক্ষমতায় এলে এই মূর্তি বসাবার তোড়জোড় শুরু হয়। ঠিক হয়, প্যাগোডা আকারের ঘর নির্মাণ করে সেখানে ওই মূর্তি বসবে। এই ঘর নির্মাণের জন্যে ৫০ শতাংশ পুরসভা বহন করবে ও বাকি অর্থ দেবে বুদ্ধ ত্রি রত্ন মিশন। অবশেষে সেই কাজ শেষ হয়। মালবাজারের পুরপ্রধান সুপ্রতিম সরকার বলেন, “প্যাগোডা ঘরটির জন্যে বরাদ্দ হয়েছিল ৬ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা।” পুরপ্রধানের আশা, “এই মূর্তি পর্যটকদের কাছেও দর্শনীয় হয়ে উঠবে।” মূর্তি প্রতিস্থাপনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন তাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, বাংলাদেশ ও ভুটানের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরাও। পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু সেলের প্রাক্তন সহ সভাপতি কল্যাণ চৌধুরীও ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ভিক্ষু সত্যপাল নিজেই এই মূর্তির উদ্বোধন করেন। এদিন তিনি বলেন, “মালবাজারে এই মূর্তি বসাতে পেরে আজ আমরা তৃপ্ত। দেরিতে বসানোর কারণে আমাদের ক্ষোভ নেই। যে প্যাগোডা আকৃতির ঘরে মূর্তি বসল তার নাম মৈত্রী তীর্থ দেওয়া হয়েছে।” |