জেলাশাসক শ্রীমতি অর্চনার বিরুদ্ধে মহিলা এনভিএফ কর্মীকে শৌচাগারে আটকে রাখা সংক্রান্ত অভিযোগপত্র মহাকরণে পাঠাল মালদহ জেলা পুলিশ। সরকারি সূত্রের খবর, অভিযোগের একটি প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে রাজ্য পুলিশের সদর দফতর তথা ডিজির কাছে। আর একটি গিয়েছে এনভিএফের রাজ্য কমান্ডান্টের দফতরে।
মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “ওই মহিলা এনভিএফ কর্মী থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি। প্রশাসনিক ভাবে আমাকে জানিয়েছেন। সে জন্য তাঁর অভিযোগ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। সেখান থেকে যে নির্দেশ পাওয়া যাবে তা পালন করব।” এ দিন জেলাশাসককে বহুবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। জেলাশাসকের অফিস ও বাংলোয় ফোন করেও তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি। রাজ্যের মুখ্যসচিব সমর ঘোষ বুধবার বলেছেন, “এনভিএফ কমান্ডান্টের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। মালদহ জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র জেলাশাসকের ‘পাশেই’ দাঁড়িয়েছেন। পক্ষান্তরে, জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী তথা ইংরেজবাজার পুরসভার কাউন্সিলর চৈতালি সরকার জেলাশাসকের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি তুলেছেন। সাবিত্রীদেবী বলেন, “আমার মনে হচ্ছে ঘটনাটি সাজানো। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে। তদন্ত না করে কাউকে এ ভাবে হেয় করা ঠিক নয়। প্রশাসনকে ছোট করার আগে ভাবা উচিত ছিল। এই ঘটনায় সরকারকে ছোট করা হয়েছে।”
আর চৈতালিদেবীর দাবি, “জেলাশাসক যা করেছেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও দুঃখজনক। আমার মনে হয়, জেলাশাসক ‘মা-মাটি-মানুষের’ সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই এ কাজ করেছেন। রাজ্য মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রীকে গোটা ঘটনা তদন্ত করানোর দাবি জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীকেও বিষয়টি জানাব।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “অতীতে এই ধরনের ঘটনার কথা শুনিনি। তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি হওয়া দরকার।”
লিখিত অভিযোগে ওই মহিলা এনভিএফ কর্মী পার্বতী হালদার দাবি করেছিলেন, বুধবার দুপুরে জেলাশাসক নিজের বাংলোর শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের স্যুইচ দিতে বলেন। পার্বতীদেবী তা খুঁজে না পাওয়ায় তাঁকে শৌচাগারে আটকে রাখেন জেলাশাসক। প্রায় ৩ ঘণ্টা পরে এক রাঁধুনি দরজা খুলে তাঁকে উদ্ধার করার পরে অসুস্থ পার্বতীদেবী হাসপাতালে ভর্তি হন। এ দিন তিনি হাসপাতাল ছাড়া পেয়েছেন। ঘটনাচক্রে জেলাশাসকই হলেন কোনও জেলার এনভিএফের ‘ডিস্ট্রিক্ট কন্ট্রোলিং অফিসার’। মালদহের জেলাশাসক বৃহস্পতিবারই দাবি করেছিলেন, ওই মহিলা কর্মীকে তিনি চেনেন না। তাঁর বিরুদ্ধে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অভিযোগ হয়েছে। |