উচ্চ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও রাজ্যের বিভিন্ন জেল থেকে নাবালক-নাবালিকা বন্দিদের এখনও মুক্তি দেওয়া হয়নি। অথচ অপ্রাপ্তবয়স্ক বন্দিদের জেলে রাখার বিষয়টি আইন অনুমোদন করে না। এই অবস্থায় রাজ্যের বিভিন্ন জেল থেকে নাবালক-নাবালিকা বন্দিদের অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়ার জন্য আবার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। কেন ওই সব বন্দিকে এখনও ছাড়া হয়নি, তা নিয়ে বিচারপতিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
শুক্রবার হাইকোর্ট একই সঙ্গে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, ১৮ মে-র মধ্যে সব জেল থেকে মুক্তি দিয়ে শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট হোমে নাবালক-নাবালিকা বন্দিদের রাখতে হবে। এবং সরকারকে ওই দিনই হাইকোর্টে জানাতে হবে, কোন জেলার কোন হোমে কোন কোন নাবালক-নাবালিকা বন্দিকে রাখা হল। আইনবিরুদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও নাবালক-নাবালিকাদের যে জেলে রাখা হচ্ছে, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখে তা জানান আইনজীবী মধুরিমা ধানুকা। তিনি লিখেছিলেন, খাস কলকাতারই প্রেসিডেন্সি ও দমদম জেলে এই ধরনের ৪৯ জন বন্দি রয়েছে। সারা রাজ্যে জেলে থাকা এমন বন্দির সংখ্যা ৬৩। ওই আইনজীবীর সেই চিঠির ভিত্তিতেই এই ব্যাপারে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থের মামলা দায়ের করা হয়।
এ দিন জনস্বার্থের মামলার শুনানির সময় আইনজীবী মধুরিমা আদালতকে জানান, বিভিন্ন জেলে বন্দি থাকা নাবালক এবং নাবালিকাকে মুক্তি দিয়ে শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট হোমে রাখার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল এবং বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে আগেই নির্দেশ দিয়েছিল। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ সত্ত্বেও রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত নাবালক-নাবালিকা বন্দিদের জেল বা সংশোধনাগার থেকে মুক্তি দেয়নি। অপ্রাপ্তবয়স্ক বন্দিরা যে এখনও জেলেই আছে, সরকারি আইনজীবীও তা মেনে নেন। তিনি আদালতে জানান, সরকারের পক্ষে ওই বন্দিদের ছাড়া সম্ভব হয়নি।
আইনজীবীদের কাছ থেকে এই কথা জেনে ক্ষুব্ধ ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, নাবালক বা নাবালিকা বন্দিকে এক ঘণ্টার জন্যও কোনও সংশোধনাগারে আটকে রাখা যায় না। এটি গর্হিত অপরাধ। ডিভিশন বেঞ্চ এর পরেই রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয়, ১৮ মে-র মধ্যে ওই সব বন্দিকে জেল থেকে মুক্তি দিতে হবে। |