|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
টীকাভাষ্যে হাসিবে রামগরুড়ও |
বইপোকা |
‘আজ ব্রাইটনের অনেক তপস্যার ফলে সূর্য উঠেছেন। এদেশে রবি যেদিন মেঘের অন্তঃপুর থেকে বের হন সেদিন একটি লোকও কেউ অন্তঃপুরে থাকে না।’ কথাটার মর্মে যে কৌতুক রহিয়াছে তাহা বুঝিতে লাগিল ঝাড়া একশো তেত্রিশ বৎসর। সেই কবে ‘ভারতী’ পত্রিকায় ১৮৭৯-তে প্রকাশিত হইয়াছিল সম্ভবত কাদম্বরী দেবীকে লেখা রবীন্দ্রনাথের পত্রটি। আর এই ২০১২-য় প্রকাশিত একটি গ্রন্থে (রবীন্দ্র পত্রাবলী: কালানুক্রমিক সংকলন, প্রথম খণ্ড, ১৮৭৮-১৮৯০, সংকলক জয়ন্তী সাহা (রায়), শ্রীভারতী প্রেস, ২৫০.০০) বাক্যটির টীকা: ‘বিলাতের আবহাওয়া সম্বন্ধে কৌতুকময়তা’। যেন এই গ্রন্থ বিশেষত রামগরুড়ের ছানাদিগের জন্য। অবশ্য এক অর্থে তাহা হইতেও পারে। এই সংকলনে রবীন্দ্রনাথের বিবিধ পত্র সম্পর্কে এমন সব টীকা পড়িলাম যে রামগরুড়ের সন্তানসন্ততিরাও না হাসিয়া পারিবে না। ব্রাইটনে ছদ্মবেশী নাচে নকল দাড়িগোঁপ পরিয়াছিলেন রবীন্দ্রনাথ, দুই একজন মহিলা তাঁহাকে বলিলেন, ভারি ভাল দেখাইতেছে। ইহার টীকা, ‘পরবর্তীকালে কি সেই কারণেই রবীন্দ্রনাথ দাড়িগোঁফ রেখেছেন?’ হায়, সম্পাদক খেয়াল করিলেন না, তাহার পরের লাইনেই রবীন্দ্রনাথ লিখিতেছেন, দাড়িগোঁফ তাঁহাকে কেমন নাকাল করিয়াছিল! শুধু তাহাই নহে, ১৮৭৮ হইতে ১৮৯০ পর্বে রবীন্দ্রনাথ-লিখিত সকল পত্র ইহাতে নাই, অথচ ইহা ‘নির্বাচিত’ও নহে। গ্রন্থটি কৌতুককর, গভীর দুঃখবহও। কালানুক্রমিক রবীন্দ্রপত্রাবলির এত গুরুত্বপূর্ণ সংকলন এই প্রকারে আত্মপ্রকাশ করিল, দুঃখ ইহাই। |
|
|
|
|
|