যুযুধান

জনদরবারে এ বারই প্রথম পরীক্ষা ‘শাসক’ তৃণমূলের
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ-জমা, পরীক্ষা আগেই হয়ে গিয়েছিল। শুক্রবার শেষ হল মনোনয়ন প্রত্যাহার-পর্বও। পূর্ব মেদিনীপুরের দুই পুরসভাহলদিয়া ও পাঁশকুড়ায় ভোট আগামী ৩ জুন। ১৯৯৭-এ পুরসভা গঠনের সময় থেকেই হলদিয়ায় ক্ষমতায় রয়েছে বামেরা। পাঁশকুড়ায় ২০০২-এ বামেরা আর ২০০৭ থেকে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল ও কংগ্রেসের জোট। হলদিয়ার বিদায়ী পুরবোর্ডে ২৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯টি বামেদের এবং ৭টি ওয়ার্ড তৃণমূল-জোটের দখলে ছিল। পাঁশকুড়ায় জোটের হাতে ছিল ১০টি ওয়ার্ড (তৃণমূল ৭, কংগ্রেস ৩), বামেদের ৭। রাজ্যপাটে পরিবর্তন ঘটানোর পর পূর্ব মেদিনীপুরে টিকে থাকা একমাত্র বামদুর্গ হলদিয়া পুরসভা দখল যেমন এ বার তৃণমূলের কাছে মস্ত চ্যালেঞ্জ, তেমনই বামেদেরও মরিয়া লড়াই সেই দুর্গ রক্ষার। পাঁশকুড়া রক্ষার দায় আবার শাসক তৃণমূলের। বামেরা সেখানে পালাবদলের অপেক্ষায়।
হলদিয়ায় ভোট-প্রচার
রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে সরকার চালালেও দুই পুরসভায় একক ভাবেই লড়ছে তৃণমূল। কংগ্রেস এবং বিজেপি আলাদা প্রার্থী দেওয়ায় ভোট-ভাগের অঙ্ক কষছে বামেরা। সেই সঙ্গে তৃণমূলের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব, বিক্ষোভ কাজে লাগিয়ে ‘ঘুরে দাঁড়ানো’র ভাবনাও ঘুরছে বাম-শিবিরে। তবে, এই জেলায় এমনিতেই সাংগঠনিক ভাবে বিপর্যস্ত বামেদের পক্ষে লক্ষ্মণ শেঠ, অমিয় সাউদের জেলবন্দি অবস্থায় কত দূর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব, সে নিয়ে সংশয়ও রয়েছে। অন্য দিকে, তৃণমূল নেতৃত্ব একক ভাবেই দুই পুরসভার ক্ষমতা দখলে আত্মবিশ্বাসী। বিধানসভা ভোটের এক বছরের মাথায় এই পুরভোট শাসক তৃণমূলের কাছে তাদের সরকারেরও এক রকম মূল্যায়ন। হলদিয়া-পাঁশকুড়ার পুরভোট তাই স্থানীয় সীমার বাইরে রাজ্য-রাজনীতির প্রেক্ষাপটেও গুরুত্বপূর্ণ।

একনজরে পাঁশকুড়া একনজরে হলদিয়া
১৭টি ওয়ার্ডে মোট প্রার্থী ৭৪।
২ ও ১৪ নম্বর বাদে অন্য ১৫টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি।
কংগ্রেসের প্রার্থীও ১৫।
এসইউসিআই-এর প্রার্থী ১, ৫, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে।
এর বাইরে তৃণমূলের ‘গোঁজ’ রয়েছে ৯ এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডে।
বিদায়ী পুরবোর্ডে ১, ২, ৩, ৪, ৫, ১৬ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড ছিল বামেদের দখলে।
৬ থেকে ১৫ তৃণমূল-কংগ্রেস জোটের দখলে (৮, ১১ ও ১৫ নং ওয়ার্ডে কংগ্রেস, বাকি ৭টি ওয়ার্ডে তৃণমূল)।
এ বার সংরক্ষিত ওয়ার্ড ৭টিওয়ার্ড নং ৭ (তফসিলি), ২, ৩, ৬, ১০, ১৩, ১৬ নং মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত।
ভোটার ৩৪ হাজার ৭৪০ জন (মহিলা: ১৬ হাজার ৩৯৫, পুরুষ: ১৮ হাজার ৩৪৫)।
মোট বুথ হচ্ছে ৪৩টি।
২৬টি ওয়ার্ডে মোট প্রার্থী ৯৩।
৫, ৮, ১১, ১২, ২১, ২৩, ২৫ ও ২৬ নম্বর বাদে বাকি ১৮টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি।
কংগ্রেসের প্রার্থী ১৭।
এর বাইরে তৃণমূলের ‘গোঁজ’ রয়েছে ১০ নম্বর এবং আরও কয়েকটি ওয়ার্ডে।
বিদায়ী পুরবোর্ডে ১, ২, ৪, ৫, ৬, ১৫ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ড ছিল তৃণমূলের দখলে।
বাকি ১৯টি ওয়ার্ড বামেদের দখলে।
এ বার সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১২টি১, ৪, ৯, ১২, ১৫, ১৯ ও ২৩ নং (মহিলা), ৫ ও ২২ নং (তফসিলি মহিলা), ৭, ১৮ ও ২৬ নং (তফসিলি)।
ভোটার ১ লক্ষ ১৭ হাজার ৭৪৭ জন (মহিলা ৫৫ হাজার ৩২৬, পুরুষ ৬২ হাজার ৪২১)।
মোট বুথ হচ্ছে ১৪৮টি।

মনোনয়ন শেষে ওঁরা বলেন
অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হলে পাঁশকুড়া দখলের সম্ভাবনা আছে। হলদিয়াতেও ভাল ফল করব। এ বারের পুরভোটে হলদিয়া আমরা দখল করছি। আর পাঁশকুড়া হতে চলেছে বিরোধীশূন্য।


পাঁশকুড়ায় যুযুধান
ওয়ার্ড ১: নবকুমার ভট্টাচার্য (তৃণমূল), নারায়ণচন্দ্র মণ্ডল (সিপিএম), তাপস মাইতি (কংগ্রেস)-সহ ৫ প্রার্থী।
ওয়ার্ড ২: রুনা খাতুন (তৃণমূল), আমেনা খাতুন (সিপিএম) এবং সুষমা পট্টনায়ক (কংগ্রেস)। এই ৩ জনই।
ওয়ার্ড ৩: শেফালি বেরা (তৃণমূল), মাধবী খাঁড়া (সিপিআই), মিতালি জানা (কংগ্রেস)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ৪: শেখ সমিরুদ্দিন (তৃণমূল), রবীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত (সিপিএম), শেখ আমির আলি (কংগ্রেস)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ৫: আশিস চক্রবর্তী (তৃণমূল), আশিস ভৌমিক (সিপিএম)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ৬: সুপর্ণা পরিয়াল (তৃণমূল), প্রণতি কর (সিপিআই), পুতুল মাইতি (কংগ্রেস)-সহ ৫।
ওয়ার্ড ৭: শঙ্কর মন্ত্রী (তৃণমূল), অমিত বর্মন (ফরওয়ার্ড ব্লক), মতিলাল মন্ত্রী (কংগ্রেস)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ৮: জাকিউর রহমান খান (তৃণমূল), বাপ্পাদিত্য মাইতি (সিপিএম), আশুতোষ চক্রবর্তী (কংগ্রেস, উপ-পুরপ্রধান)-সহ ৫।
ওয়ার্ড ৯: সইদুল ইসলাম খান (তৃণমূল), শেখ আমির (সিপিআই), হাবিব মহম্মদ শেখ (কংগ্রেস)-সহ ৬।
ওয়ার্ড ১০: সুমনা মহাপাত্র (তৃণমূল), মায়া মাইতি দাস (সিপিএম), তপতী সাউ (কংগ্রেস)-সহ ৫।
ওয়ার্ড ১১: আবদুল হাকিম খান (তৃণমূল, বর্তমান পুরপ্রধান), সুধাংশুশেখর শাসমল (সিপিআই), নিতাই কাউ (কংগ্রেস)-সহ ৬।
ওয়ার্ড ১২: নন্দকুমার মিশ্র (তৃণমূল), শঙ্কর পাহাড়ি (সিপিআই), মহম্মদ সরিফুল আলম খান (কংগ্রেস)-সহ ৫।
ওয়ার্ড ১৩: মঞ্জু দাস (তৃণমূল), টুম্পা মালাকার (সিপিএম), নীলিমা সামন্ত (কংগ্রেস)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ১৪: আমজেদ আলি (তৃণমূল) এবং সৈয়দ আবদুল কালাম আজাদ (সিপিএম)। একমাত্র দ্বিমুখী লড়াই।
ওয়ার্ড ১৫: আনিসুর রহমান (তৃণমূল), সৈয়দ সইদুল (সিপিএম), আমিনুল মল্লিক (কংগ্রেস)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ১৬: মুক্তারা বিবি (তৃণমূল), জলি বেগম (সিপিএম), মালেকা বিবি (কংগ্রেস)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ১৭: অনন্ত চাউলিয়া (তৃণমূল), নকুল চাউলিয়া (সিপিএম, বর্তমান বিরোধী দলনেতা), খাকেকুচ জামাল শেখ (কংগ্রেস)-সহ ৪।
 

হলদিয়ায় যুযুধান
ওয়ার্ড ১: সাধনা মাইতি (সিপিএম), রেণুকা মাইতি (তৃণমূল)-সহ ৩ প্রার্থী।
ওয়ার্ড ২: জীবেশ মণ্ডল (সিপিআই), চন্দনকুমার মাজি (তৃণমূল), শেখ খোরশেদ আলি (কংগ্রেস)-সহ ৫ জন।
ওয়ার্ড ৩: অভিমন্যু মণ্ডল (সিপিএম), স্বপন নস্কর (তৃণমূল), সহিদুল হক (কংগ্রেস)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ৪: কণিকা সাউটিয়া (সিপিআই), রেখারানি দেব (তৃণমূল), অনিমা দাস (কংগ্রেস)-সহ ৫।
ওয়ার্ড ৫: মঞ্জু দাস (সিপিএম), মায়া নস্কর (তৃণমূল) এবং তৃষা মিত্রদাস (কংগ্রেস)। এই ৩ জনই প্রার্থী।
ওয়ার্ড ৬: আবুল কালাম (সিপিএম), হাফিজুল রহমান (তৃণমূল), আবদুল আহেদ মোল্লা (কংগ্রেস)-সহ ৫।
ওয়ার্ড ৭: তাপসী মণ্ডল (সিপিএম), সৌমিত্র মণ্ডল (তৃণমূল), সুনীল মিদ্যাদাস (কংগ্রেস)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ৮: বিমল মাজি (সিপিএম), প্রতীক শাসমল (তৃণমূল) এবং নরেন পাত্র (কংগ্রেস)। এই ৩ জনই প্রার্থী।
ওয়ার্ড ৯: অম্বিকা দাস (সিপিএম), হেলেন করণ (তৃণমূল)-সহ ৩।
ওয়ার্ড ১০: নারায়ণ প্রামাণিক (সিপিআই, বর্তমান উপ-পুরপ্রধান), মিলন মণ্ডল (তৃণমূল)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ১১: সদানন্দ মাইতি (সিপিএম) এবং জ্যোতিপ্রসাদ দাস (তৃণমূল)। দ্বিমুখী লড়াই।
ওয়ার্ড ১২: মিনতি সাউ (সিপিএম), কমলা পট্টনায়েক (তৃণমূল) এবং নীলিমা পাড়ুই (কংগ্রেস)। এই ৩ জনই প্রার্থী।
ওয়ার্ড ১৩: তমালিকা পণ্ডাশেঠ (সিপিএম, বর্তমান পুরপ্রধান), আজিজুল রহমান (তৃণমূল), সাত্যকি মল্লিক (কংগ্রেস)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ১৪: আবদুল কাদের (সিপিএম), সাধন জানা (তৃণমূল), শেখ সাজাহান (কংগ্রেস)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ১৫: রেজিমন্নেশা (সিপিএম), মুর্শিদা বিবি (তৃণমূল), সবেতারা খানম (কংগ্রেস)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ১৬: সুদীপ বসু (আরএসপি), শঙ্করপ্রসাদ নায়েক (তৃণমূল), প্রবীর মাইতি (কংগ্রেস)-সহ ৫।
ওয়ার্ড ১৭: মানস ভুঁইয়া (সিপিএম), বিল্বপদ ভৌমিক (তৃণমূল), সন্তোষ গিরি (কংগ্রেস)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ১৮: শুকদেব দোলই (সিপিআই), তুষার মণ্ডল (তৃণমূল), পশুপতি পাত্র (কংগ্রেস)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ১৯: নমিতা প্রামাণিক (সিপিএম), দুর্গা মান্না (তৃণমূল)-সহ ৩।
ওয়ার্ড ২০: দুলাল জানা (সিপিএম), তপন আদক (তৃণমূল)-সহ ৩।
ওয়ার্ড ২১: বিকাশ জানা (সিপিএম), নারায়ণচন্দ্র ক্যুইতি (তৃণমূল) এবং শেখ আহমেদ্দুলা (কংগ্রেস)। এই ৩ জনই প্রার্থী।
ওয়ার্ড ২২: অণিমা হালদার (সিপিএম), কণিকা গায়েন (তৃণমূল)-সহ ৩।
ওয়ার্ড ২৩: শুভশ্রী সামন্ত (সিপিএম), চান্দ্রেয়ী বিশ্বাস (তৃণমূল) এবং রিনা আদক (কংগ্রেস)। এই ৩ জনই প্রার্থী।
ওয়ার্ড ২৪: গোপাল দাস (সিপিএম), উন্নতিকুমার দাস (তৃণমূল)-সহ ৪।
ওয়ার্ড ২৫: চণ্ডীচরণ দাস (সিপিএম), দেবপ্রসাদ মণ্ডল (তৃণমূল) এবং ঝর্না গিরি (কংগ্রেস)। এই ৩ জনই প্রার্থী।
ওয়ার্ড ২৬: ভক্তবিনোদ দাস (সিপিএম) এবং তরুণকান্তি মুনিয়ান (তৃণমূল)। দ্বিমুখী লড়াই।

তথ্য সহায়তা: আনন্দ মণ্ডল ও দেবমাল্য বাগচি


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.