জঙ্গলে পাতা কুড়োতে গিয়ে হাতির হামলায় মৃত্যু হল এক বৃদ্ধার। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটে সারেঙ্গার সারুলিয়ার জঙ্গলে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম যমুনা দুলে (৭০)। তাঁর বাড়ি সারেঙ্গার শালুকা গ্রামে। বাঁকুড়ার ডিএফও (দক্ষিণ) সুধীরচন্দ্র দাস বলেন, “পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ের জঙ্গল থেকে সারেঙ্গার জঙ্গলে ঢুকে পড়া একটি হাতির আক্রমণে পাতা কুড়োতে যাওয়া ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে হাতিটির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।” তিনি জানান, মৃতার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
|
মৃত যমুনা দুলে। নিজস্ব চিত্র। |
বনদফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রাম লাগোয়া জঙ্গল থেকে শালপাতা কুড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সেলাই করে বিক্রি করেন ওই বৃদ্ধার পরিবারের লোকজন। প্রতিদিনকার মতো এ দিন সকালেও সারুলিয়ার জঙ্গলে শালপাতা তুলতে গিয়েছিলেন যমুনাদেবী ও তাঁর স্বামী কানাই দুলে। বৃদ্ধ কানাইবাবুর কথায়, “যমুনা আমার থেকে কিছুটা এগিয়ে শালপাতা তুলছিল। হঠাৎ দেখি, একটা বিশালাকার হাতি তেড়ে এসে ওকে শুড়ে জড়িয়ে ধরে আছাড় মারে। তারপর হাতিটা ওর পেটে পা দেয়। ভয়ে কোনও রকমে পিছন দিকে পালিয়ে যাই।” তাঁর কাছ থেকে খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা জঙ্গলে যান। যমুনাদেবীকে তাঁরা উদ্ধার করে সারেঙ্গা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ দিন বাঁকুড়া মেডিক্যালে দেহটির ময়নাতদন্ত করা হয়।
যমুনাদেবীর ছেলে মাধব গত তিন বছর ধরে পঙ্গু হয়ে বাড়িতে রয়েছেন। তিনি কার্যত কর্মহীন। তাঁর স্ত্রী কল্যাণী দুলে বলেন, “অভাবের সংসার শালপাতা তৈরি করেই কোনওরকমে আমাদের দিন কাটে।” তাঁদের মতো এলাকার অনেকেই জঙ্গলে পাতা কুড়োতে যান। হাতির আক্রমণে বৃদ্ধার মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় তাই আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ডিএফও (দক্ষিণ) বলেন, “ওই জঙ্গলে হাতির দল মাঝে মধ্যে ঢুকে পড়ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তাই জঙ্গলে পাতা কুড়োতে যাওয়া সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। |