আদালতের নির্দেশে মামলা
অবৈধ ভাটা বন্ধের বিরুদ্ধে সিটু
রাজ্যে বেআইনি ইটভাটা বন্ধে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসনকে। আদালতের নির্দেশ মেনে মালদহ জেলা প্রশাসন বেশ কিছু ইটভাটা মালিকের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছে। তার পরেও জেলায় বেআইনি ইটভাটা চালুর পক্ষে সওয়াল করার অভিযোগ উঠল সিটুর বিরুদ্ধে। সোমবার চাঁচলের রবীন্দ্র ভবনে সিটুর উদ্যোগে বেআইনি ইটভাটার মালিক ও শ্রমিকদের নিয়ে কনভেনশনও হয়। সেখানে সিটুর জেলা সহ সভাপতি ইন্দ্রজিত মিত্র বলেন, “বেআইনি ইট ভাটা বন্ধ করলে প্রত্যক্ষভাবে কয়েক হাজার শ্রমিক ও অপ্রত্যক্ষ ভাবে কয়েক হাজার রাজমিস্ত্রি, রং মিস্ত্রি ও কাঠ মিস্ত্রি বিপাকে পড়বেন। বেআইনি ইট ভাটা বন্ধ হয়ে গেলে কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বেন। এই কারণে বেআইনি ইটভাটা বন্ধের তীব্র বিরোধিতা করছি এবং বেআইনি ইট ভাটার হয়ে পথে নেমেছি।” সিটুর ওই বক্তব্যকে ঘিরে জেলায় বাম রাজনৈতির মহলেও প্রশ্ন উঠেছে। বেআইনি ইটভাটা বন্ধ করার দাবিতে সরাসরি রাস্তায় নেমেছে সিপিআইয়ের শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি। সংগঠনের জেলা সভাপতি তথা সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক তরুণ দাস বলেন, “বেআইনি ইটভাটার পক্ষে সিটুর আন্দোলনে নামাটা দুভার্গ্যজনক। বেআইনি ইটভাটার জন্য জেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আবার আইন মেনে যাঁরা ইটভাটা করেছেন তাঁদের ব্যবসা মার খাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, বেআইনি ইটভাটা মালিকেরা সরকারের রয়্যালটি ফাঁকি দিচ্ছেন।” ইন্দ্রজিতবাবুর পাল্টা বক্তব্য, “আইনের সরলীকরণ করে বেআইনি ইটভাটাকে বৈধতা দিয়ে সরকার রয়্যালিটি আদায় করুক। কেননা সন্ত্রাসজনিত কারণে বধর্মান ও মেদিনীপুর বহু ইট ভাটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মালদহ থেকে সেখানে ইট যাচ্ছে। শ্রমিক শ্রেণির স্বার্থের জন্যই বেআইনি ইটভাটার পক্ষে আন্দোলন করছি।” মালদহ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আইনি ভাবে ইটভাটা তৈরি করতে গেলে ন্যূনতম ৫ একর জমি থাকা দরকার। আশপাশের জমিতে যে কৃষি হয় না এবং আম বাগান নেই তাঁর লিখিত প্রতিশ্রুতি দরকার। প্রশাসনিক অনুমতি নিয়ে ভাটার জন্য চিহ্নিত জমির চরিত্র পরিবর্তন করা দরকার। এ সব সম্পূর্ণ হলেই কেউ ইট তৈরির জন্য অনুমতি চাইতে পারেন। সরকারি আইনকে উপেক্ষা করেই জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল, গাজল, পুরাতন মালদহ এবং রতুয়ায় তিন শতাধিক বেআইনি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। কয়েক হাজার শ্রমিক নিয়োগ করে সেখানে ইট তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তার ফলে লাগোয়া এলাকায় ব্যাহত হচ্ছে কৃষি। বিপন্ন হচ্ছে মালদহের বিখ্যাত আমের বাগানও। অভিযোগ পেয়ে জেলা পুলিশ এবং ভূমি সংস্কার দফতর থেকে অভিযান চালিয়ে ভাটা বন্ধ করার পাশাপাশি মামলাও করা হচ্ছে। তার পরেও রাজনৈতিক মদতে বেআইনি ইটভাটা চলছে বলে অভিযোগ। জেলা ভূমিসংস্কার আধিকারিক খগেন্দ্রনাথ দিউ দাবি করেছেন, “যেখানেই বেআইনি ইটভাটার খবর পাচ্ছি, সেখাই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে। সেগুলি বন্ধের ব্যবস্থা হচ্ছে। তার পরেও কোথাও বেআইনি ভাবে ইটভাটা খোলা থাকলে ব্যবস্থা নেব।” জেলার পুলিশ সুপার জয়ন্ত পালও জানিয়েছেন, বেআইনি ইটভাটা বন্ধে প্রচুর মামলা হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে বেশ কিছু ইটভাটা বন্ধও করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের ওই পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নন জেলার বৈধ ইটভাটার মালিকেরা। মালদহ ব্রিক ফিল্ড ওনার্স অ্যসোসিয়েশনের সম্পাদক স্বপন সাহা বলেন, “জেলার কোথায় বেআইনি ইটভাটা চলছে জেলা প্রশাসন ও জেলা ভূমিরাজস্ব দফতরের কর্তারা সকলেই জানেন। অথচ সেগুলি বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। উল্টে প্রশাসন বৈধ ইটভাটার মালিকদের নানা ভাবে হেনস্থা করছে।” এই ব্যাপারে মালদহের জেলাশাসক শ্রীমতি অর্চনা বলেন, “বেআইনি ইট ভাটা নিয়ে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী জেলা প্রশাসন পদক্ষেপ করছে। যেহেতু বিষয়টি বিচারাধীন সে কারণে এ নিয়ে এর বেশি কিছু বলা যাবে না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.