রাজ্যের মন্ত্রিত্ব রেখেই ফের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ ফিরে পেতে চাইছেন সেচ ও ক্ষুদ্র-কুটির শিল্পমন্ত্রী মানস ভুইয়া। এআইসিসি সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের আগেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য তৎপর হয়েছেন মানসবাবু।
দিল্লি এসে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী ও পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদের সঙ্গে আজ দেখা করেন মানসবাবু। কিন্তু তিনি প্রদেশ সভাপতি পদ ফিরে পেতে চাইছেন কি না, জানতে চাওয়া হলে মানসবাবু কোনও স্পষ্ট উত্তর দেননি, আবার না-ও বলেননি। তিনি বলেন, “সব থেকে জটিল ও কঠিন সময়ে প্রদেশ সভাপতির দায়িত্বে ছিলাম। আমি দলের অনুগত সৈনিক। সর্বোচ্চ নেতৃত্ব যে দায়িত্ব দেবেন তা পালন করব।”
মানসবাবু বলেন, সনিয়া তাঁকে বলেছেন, পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেস যাতে ভাল ফল করে সে জন্য সর্বশক্তি দিয়ে নামতে হবে। তার আগে সংগঠনকে মজবুত করতে প্রদেশ নেতাদের আরও তৎপর হতে হবে। বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে। মানসবাবু জানান, জোট রাজনীতির প্রেক্ষাপটে রাজ্যে কংগ্রেস কর্মীদের কী ধরনের ‘ঘাত প্রতিঘাতের’ মধ্যে দিয়ে চলতে হচ্ছে তা-ও আজ তিনি সনিয়াকে জানান।
এআইসিসি সূত্রে খবর, প্রদেশ সভাপতির পদ ফিরে পেতে বেশ কিছু দিন ধরেই তদ্বির করছেন মানসবাবু। তাঁর অনুগামীদের বক্তব্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যস্তরে কংগ্রেসের যে ধরনের কর্মসূচি নিয়ে এগোনো উচিত, তার কিছুই হচ্ছে না। মানসবাবু প্রদেশ সভাপতি থাকাকালীন জেলায় জেলায় অনেক বেশি কর্মিসভা ও সম্মেলন হয়েছে। মানসবাবু রাজ্যে মন্ত্রী ঠিকই, কিন্তু মন্ত্রিত্বের পাশাপাশি প্রদেশ সভাপতি পদে থাকার বেশ কিছু নজির রয়েছে।
তবে দলে এর পাল্টা মতও রয়েছে। রাজ্য কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, দু’একটি ব্যতিক্রম ছাড়া কংগ্রেসে এক ব্যক্তি এক পদ সূত্র মোটামুটি ভাবে মেনে চলা হয়। তাঁদের প্রশ্ন, সংগঠনের হাল ধরতে তৎপর হওয়া মানসবাবু কেন মন্ত্রিত্ব ছাড়তে প্রস্তুত নন? সম্প্রতি পাঁচ রাজ্যের ভোটে খারাপ ফলের পর সর্বভারতীয় কংগ্রেস ও রাজ্যওয়াড়ি কংগ্রেস সংগঠনগুলির রদবদল করতে উদ্যোগী হয়েছে হাইকম্যান্ড। আজ সনিয়া-শাকিলের সঙ্গে মানসবাবুর বৈঠককে সেই রদবদলের আগের তৎপরতা হিসাবেই অনেকে দেখছেন। মানসবাবু জানিয়েছেন, এ যাত্রায় রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টাও তিনি করছেন। সেই সঙ্গে রাজ্যের পিছিয়ে পড়া ১১ জেলার উন্নয়নের বিষয়ে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পমন্ত্রী বীরভদ্র সিংহের সঙ্গেও তিনি বৈঠক করবেন।
|
রামকৃষ্ণ মিশনের নতুন সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুহিতানন্দ |
দেবাশিস ভট্টাচার্য • কলকাতা |
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের নতুন সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন স্বামী সুহিতানন্দ। এত দিন সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন স্বামী প্রভানন্দ। এ বার তিনি সহ-অধ্যক্ষ হবেন। মঠ-মিশনের অছি পরিষদে সম্প্রতি এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের পরিচালন ব্যবস্থায় সাধারণ সম্পাদক পদটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। কার্যত সাধারণ সম্পাদকই রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের মূল প্রশাসনিক কাজকর্মগুলি পরিচালনা করেন। বর্তমান অধ্যক্ষ স্বামী আত্মস্থানন্দও এক সময়ে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সহ-অধ্যক্ষ হওয়াও কোনও নজিরবিহীন ঘটনা নয়। যেমন স্বামী আত্মস্থানন্দ, এখনকার এক সহ-অধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দ প্রমুখ অনেকেই বিভিন্ন সময়ে সাধারণ সম্পাদক থেকে সহ-অধ্যক্ষ হয়েছিলেন। স্বামী প্রভানন্দ সাধারণ সম্পাদক পদে কাজ করলেন পাঁচ বছর। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের পরিচালন কমিটিতে ইদানীং সহ-অধ্যক্ষ থাকেন তিন জন। কিছু দিন আগে এক সহ-অধ্যক্ষ স্বামী প্রমেয়ানন্দ প্রয়াত হয়েছেন। সেই হিসেবে স্বামী প্রভানন্দের সহ-অধ্যক্ষ হওয়া কিছুটা ‘শূন্যপদ পূরণের’ মতো। অন্য যে দুই সহ-অধ্যক্ষ আছেন, তাঁরা হলেন স্বামী গীতানন্দ এবং স্বামী স্মরণানন্দ। এখন যিনি সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন, সেই স্বামী সুহিতানন্দ (সনাতন মহারাজ) ছিলেন সহ-সম্পাদক। তাঁর শূন্য পদে কে আসবেন, এখনও তা স্থির হয়নি বলে মঠ-মিশন সূত্রের খবর। স্বামী সুহিতানন্দ রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের প্রবীণ ও অভিজ্ঞ সন্ন্যাসী। বছর পনেরো আগে তিনি অছি পরিষদের সদস্য হন। বিভিন্ন সময়ে তিনি রামকৃষ্ণ মিশনের নরেন্দ্রপুর, রহড়ার মতো শিক্ষায়তনে শিক্ষকতাও করেছেন। |