|
|
|
|
হলদিয়া পুরভোট |
‘অধিকারী পরিবার’কে তোপ ‘ক্ষুব্ধ’ তৃণমূল বিধায়ক শিউলির |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
শাসক জোটে ফাটল তো ধরেছেই। তার উপর প্রধান শাসক দল তৃণমূলের অন্দরের ‘বিবাদ’ও প্রকাশ্যে এসে পড়ল হলদিয়ায়। পুরভোটে তাঁর ‘পছন্দের’ প্রার্থীরা দলীয় অনুমোদন না পাওয়ায় ‘অধিকারী পরিবারে’র বিরুদ্ধে সরব হলেন হলদিয়ার তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা। অভিযোগ তুললেন ‘পরিবারতন্ত্রে’র। কাঁথির ‘অধিকারী পরিবারে’র মাথা তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি শিশির অধিকারী অবশ্য অভিযোগকে গুরুত্ব দেননি।
তবে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব এ ভাবে প্রকাশ্যে এসে পাড়ায় ‘বিব্রত’ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাঁরা প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে দলের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ তাঁর পছন্দের আট জনের মধ্যে সাত জনেরই দলীয় প্রার্থী তালিকায় ঠাঁই না-হওয়ায় ‘অসম্মানিত’ শিউলি বিষয়টি জানিয়ে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “দলনেত্রীকে সব জানিয়েছি। উনি শাস্তি দিলে মাথা পেতে নেব। কিন্তু কাঁথির অধিকারী পরিবারের অঙ্গুলিহেলনে চলতে পারব না। প্রয়োজনে দল থেকে অব্যাহতি চাইব।” শিশির-শুভেন্দু-দিব্যেন্দুর নাম না করে ‘অধিকারীর পরিবারে’র বিরুদ্ধে শিউলি উষ্মা প্রকাশ করেন। তাঁর কথায়, “দল যাঁকে দায়িত্ব দিয়েছে, তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে আমাকে অসম্মান করেছেন। অন্য এলাকার বিধায়ক এসে প্রার্থী
|
শিউলি সাহা |
তালিকা ঠিক করছেন। আমি এখানে আছি। অথচ আমার সঙ্গে যোগাযোগের সৌজন্য পর্যন্ত দেখানো হয়নি।” তৃণমূলের একাংশের মতে, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের ‘মদতে’ই শিউলি এ ভাবে মুখ খুলেছেন। এখন দল ওই বিষয়ে কী করে, সেটাই দেখার।
আসন্ন হলদিয়া পুরসভা নির্বাচনে ২৬টি আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৩৮ জন। সোমবার মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনে অবশ্য ২৬ জনকেই তৃণমূলের দলীয় প্রতীক দেওয়া হয়। ভগবানপুরের বিধায়ক অর্ধেন্দু মাইতি ও দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক দিব্যেন্দু অধিকারী এসে প্রতীক জমা দেন। কিন্তু শিউলির ‘পছন্দের’ কাউকেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। শুভেন্দু এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি। তবে দলের প্রবীণ নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিশির অধিকারী বলেন, “ও বাচ্চা মেয়ে। এক বছর হল বিধায়ক হয়েছে। ওর সঙ্গে সংঘাতে যাব না।” পাশাপাশি শিউলির ‘পরিবারতন্ত্র’ নিয়ে অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “ওর (শিউলি) মা বনশ্রী খাঁড়াও নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী। একই পরিবারের ৫-৬ জন দলে থাকতেই পারেন। তৃণমূল কংগ্রেস একটা বৃহৎ পরিবার। আমরা সবাই তাঁর সদস্য। দলনেত্রীর নির্দেশ সকলে অক্ষরে অক্ষরে পালন করি। নিচুতলার সহমতের ভিত্তিতেই পুরভোটের প্রার্থী তালিকা স্থির হয়েছে।” শিশিরবাবুর আরও বক্তব্য, “তৃণমূল একটা পরিবার। আমরা সকলেই তার সদস্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের অভিভাবক।”
হলদিয়া ও পাঁশকুড়ার কংগ্রেস প্রার্থীদের নিরাপত্তার জন্য এ দিন রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডের কাছে লিখিত ভাবে আর্জি জানাল প্রদেশ কংগ্রেস। সোমবার পুরভোটের মনোনয়ন পেশের শেষ দিনে হলদিয়ায় তাদের নির্বাচনী এজেন্ট মনোজ পাণ্ডেকে তৃণমূল ‘অপহরণ’ করে বলে কংগ্রেস অভিযোগ করেছে। ঘটনাটি মীরাদেবীকে জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। কমিশনের কাছে অন্তত ১১ মে অর্থাৎ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত দলীয় প্রার্থীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়েছে কংগ্রেস। |
|
|
|
|
|