একই দিনে মালদহ জেলায় ৩ নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করে দিল পুলিশ-প্রশাসন। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে নাবালিকার বিয়ে আটকে গেল মুর্শিদাবাদের ডোমকলেও। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ায় বুধবার দুপুরে নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করার ঘটনাগুলি ঘটেছে। রতুয়ার রুকুন্দিপুরে পুলিশ-প্রশাসনের তৎপরতায় নির্বিঘ্নে বিয়ে বন্ধ হলেও হরিশ্চন্দ্রপুরের চকসাতন মহারাজপুর কলোনিতে দুই নাবালিকা বোনের বিয়ে বন্ধ করতে গিয়ে কনেপক্ষ ও গ্রামবাসীদের একাংশের হাতে আক্রান্ত হন ৩ পুলিশকর্মী। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের ভ্যানও।
হরিশ্চন্দ্রপুরে ওই এলাকায় এ দিন দুপুরে নাবালিকা দুই বোনের বিয়ের মণ্ডপে হাজির ছিল পাত্রপক্ষও। চলছিল খাওয়াদাওয়া। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার এক সাব-ইনস্পেক্টর, দুই সহকারী সাব-ইনস্পেক্টর সেখানে যান। সঙ্গে দুই হোমগার্ড এবং চালকও ছিলেন। দুই হোমগার্ড ছাড়া বাকিদের পেটানো হয় বলে অভিযোগ। পরে আইসির নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী গিয়ে প্রহৃত পুলিশকর্মীদের উদ্ধার করে। সকলকেই হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে দুই নাবালিকার বাবা জগদীশ মণ্ডলকে সন্ধ্যায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
হরিশ্চন্দ্রপুরের ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক তজমুল হোসেন বলেন, “পুলিশ বিয়ে বন্ধ করাতে গিয়ে লোকজনকে মারধর করেছে। তাতেই এক দল বাসিন্দা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের উপর চড়াও হন বলে শুনেছি।” মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেছেন, “পুলিশকর্মীরা কাউকে মারধর করেনি। নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করতে বলায় পুলিশকর্মীদেরই মারধর করে গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।”
পুলিশ জানাচ্ছে, হরিশ্চন্দ্রপুরে দুই নাবালিকা সবিতা ও লক্ষ্মীর সঙ্গে বিহারের মজফ্ফরপুরের দুই পাত্রের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়। খবর পেয়ে পুলিশ যায়। ধৃত জগদীশ মণ্ডলের দাবি, “আমার দুই মেয়েই সাবালিকা। আমরা পুলিশকে মারধর করিনি। পুলিশই আমাকে ও কয়েকজন মহিলাকে মারধর করে সব ওলটপালট করে দেয়।” অন্য দিকে, রতুয়ায় আলিম আনসারি নাবালিকা মেয়ে নুরজাহানের বিয়ে ঠিক করেছিলেন ধরমপুর এলাকায়। দুপুরে বিয়ের আগেই সেখানে পৌঁছে বিয়ে বন্ধ করে দেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। তবে কোনও গোলমাল হয়নি। নাবালিকার বাবা আলিম আনসারি মেয়ে সাবালিকা না হলে বিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান।
মুর্শিদাবাদের ডোমকলেও প্রশাসনিক উদ্যোগে থমকে গেল বিয়ে। ডোমকলের শিবনগর গ্রামে নিজের এক আত্মীয়ের সঙ্গেই বুধবার আসফা খাতুন নামে বছর তেরোর এক নাবালিকার বিয়ে ঠিক করেছিলেন তার বাবা আবদুল ওয়াহাব মণ্ডল। বুধবার ডোমকলের বিডিও রবীন্দ্রনাথ মিত্র ওই বাড়িতে গিয়ে নাবালিকার বিয়ে আটকান। |