|
|
|
|
পটাশপুরের স্কুলে শিক্ষিকা নিগ্রহ, অভিযুক্ত তৃণমূল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটাশপুর |
এ বার স্কুলে ঢুকে এক শিক্ষিকাকে নিগ্রহের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ‘নিগৃহীত’ শিক্ষিকা এক তৃণমূল নেতারই স্ত্রী। ভাঙড় কলেজের পরপরই পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর-২ ব্লকের তাহালিয়া শোভাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ের এই ঘটনা জানা দিচ্ছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দলতন্ত্রের দাপট কমার লক্ষণ নেই।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা কে হবেন, তা নিয়ে ওই বিদ্যালয়ে বিবাদ চলছিল তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত পরিচালন সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের মধ্যে। তারই জেরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা পদের দাবিদার লক্ষ্মী দাস অট্টকে নিগ্রহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা করুণা সাউ, এক মহিলা শিক্ষাকর্মী, স্কুলের সম্পাদক এবং পাঁচ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন লক্ষ্মীদেবী। তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা অঞ্চলের তৃণমূল নেতা সূর্য অট্টের স্ত্রী। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেন অবশ্য বলেন, “একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে।”
স্কুল সূত্রের খবর, পরিচালন সমিতির সভাপতি গৌরীশঙ্কর মহাপাত্রের সঙ্গে সম্পাদক খগেন্দ্রনাথ জানার মধ্যে বিবাদ চলছিলই। প্রধান শিক্ষিকা অবসর নেওয়ার পরে শিক্ষিকাদের মধ্যে বয়সে বড় করুণাদেবীকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার পদের জন্য মনোনীত করেন প্রাক্তন শিক্ষক তথা তৃণমূল পরিচালিত পটাশপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ খগেন্দ্রনাথবাবু। কিন্তু অঙ্কের শিক্ষিকা কম রয়েছেন এবং প্রধান শিক্ষিকা হলে করুণাদেবী নিয়মিত অঙ্ক ক্লাস নিতে পারবেন না, এই যুক্তিতে বাংলার শিক্ষিকা লক্ষ্মীদেবীকে ওই পদে বসাতে চেয়েছিলেন গৌরীশঙ্করবাবু।
সোমবার ছিল প্রধান শিক্ষিকা চিন্ময়ী দাসের অবসর নেওয়ার দিন। গৌরীশঙ্করবাবুর অভিযোগ, “সোমবার পরিচালন সমিতিতে আলোচনা ছাড়াই করুণাদেবীকে দায়িত্ব দেন স্কুল-সম্পাদক। লক্ষ্মীদেবীকে হেনস্থা করা হয়।” লক্ষ্মীদেবী বলেন, “আসতে দেরি হয়েছে, এই যুক্তিতে আমাকে স্কুলের হাজিরা খাতায় পর্যন্ত সই করতে দেননি করণিক। তিনি খাতা লুকিয়ে রাখেন।” করণিক গীতা নন্দ গোস্বামীর অবশ্য দাবি, “ওই শিক্ষিকা দেরিতে স্কুলে আসেন। তাই সই করতে দিইনি।”
সই করতে না পারলেও ক্লাসে চলে যান লক্ষ্মীদেবী। তাঁর অভিযোগ, “ক্লাস চলাকালীন গীতাদেবীকে দিয়েই আমাকে ডেকে পাঠান সম্পাদক। জনা পাঁচেক মদ্যপ অনুগামী ছিল সম্পাদকের সঙ্গে। তারা গালিগালাজ করে। মারধরের চেষ্টা হয়। গীতাদেবী ও করুণাদেবীর মদতে সম্পাদক আমার আঁচল ধরেও টানাটানি করেন।” লক্ষ্মীদেবী ও অন্য শিক্ষিকারা থানায় যেতে চাইলে তাঁদের আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ।
পরে থানায় অভিযোগপত্রে সই করেন স্কুলের সাত শিক্ষিকা। তাঁদেরই অন্যতম ইন্দ্রাণী দাস বলেন, “বাইরের লোক ঢুকে গালিগালাজ করছে। আমরা নিরাপত্তার অভাববোধ করছি।” খগেন্দ্রনাথবাবুর পাল্টা দাবি “পরিচালন
সমিতির বৈঠকে আগেই সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল। আসলে সভাপতির বিরুদ্ধে সম্প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। সেই আক্রোশেই উনি মিথ্যা অভিযোগ করছেন।” বুধবার কাঁথি আদালতে আগাম জামিন নিয়েছেন খগেন্দ্রনাথবাবু, করুণাদেবী ও গীতাদেবী।
|
|
|
|
|
|