নরকতুল্য হাওড়া মিনি বাসস্ট্যান্ড
হাওড়া স্টেশনের ব্রিজের কাছে মিনি বাসস্ট্যান্ড। এই বাসস্ট্যান্ডের কাছের এলাকাটি যেন নরকতুল্য হয়ে থাকে। জঞ্জাল, নোংরা, প্রস্রাব এবং হোটেলের বাসন ও হাত ধোওয়ার দূষিত জলের স্রোতে বাসস্ট্যান্ড ভেসে যায়। বাসযাত্রীদের নাকে রুমাল দিয়ে তবেই মিনিবাসে চড়তে হয়। বাসস্ট্যান্ড ত্যাগ করার পর নাকের রুমাল সরাতে হয়। এমনই একফালি জায়গার মধ্যে বাসস্ট্যান্ডটি পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছে দীর্ঘ দিন ধরে। এই স্ট্যান্ডের পাশে নোংরা জায়গায় তেলেভাজার দোকান, গঙ্গার দিকের বহু দোকান এবং ঝুপড়িঘরের বাধায় গঙ্গার মুক্ত বাতাস আসার পথ হয়ে আছে রুদ্ধ।
ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়
এই অবস্থায় নিত্যযাত্রীদের নীরবে যাতায়াত চলছে। অথচ ঢিল ছোড়া দূরত্বে পুলিশ ক্যাম্প। মাননীয় পুরপিতা এ দিকে একটু নজর দেবেন কি?
পরিবেশ দূষণ
আমরা কাটোয়াবাসীরা এক চরম পরিবেশ দূষণের শিকার। কাটোয়া শহর থেকে দাঁইহাট শহর-বরাবর যে পাকা সড়কটি ঘোষহাট, পানুহাট, মণ্ডলহাট, এশাইহাট, বিকিহাট প্রভৃতি গ্রামের বুক চিরে গেছে, সেটি ধরে একটি মিনিবাস যাত্রী-পরিষেবা দেয় মাত্র। বাকি যে যানবাহন তা শুধুই ট্রাক্টর, মোটর ভ্যান ও লরি।
এর মধ্যে ট্রাক্টরগুলি সারা দিন-রাত্রি অন্তত এক হাজার বার যাতায়াত করে। ইট, বালি, মাটি, খড় বোঝাই এই ট্রাক্টরগুলি বিকট কান-ফাটানো শব্দদূষণ ছড়িয়ে দৈত্যের মতো হুঙ্কার ছাড়তে ছাড়তে চলে। এই দু’চাকার যানটির সামনের ইঞ্জিনের দিকটা অপেক্ষাকত সরু, কিন্তু পিছনের দিকটা বেঢপ চওড়া হওয়ায় রোজ দুর্ঘটনা লেগেই আছে। বহু মানুষের প্রাণ নিয়েছে। বহু মানুষ পঙ্গু হয়ে গেছে এর দৌরাত্ম্যে।
গোদের উপর বিষফোঁড়া হল মোটর ভ্যানগুলি। সম্পূর্ণ খোলা, অসুরক্ষিত এই যানগুলির ইঞ্জিনের পেট থেকে গলগল করে যে কালো ধোঁয়া উদ্গিরণ করে, তাতে এই এলাকা চরম ও ভয়ঙ্কর পরিবশদূষণে আক্রান্ত। এ ছাড়া মুখোমুখি সংঘর্ষজনিত দুর্ঘটনা অসহ্য করে তুলেছে জীবনযাত্রা।
আমার প্রশ্ন, ট্রাক্টর জমিতে চাষবাসে ব্যবহারের কথা। কেন সেগুলি বেআইনি ভাবে জনবহুল পথে চলবে? আর মোটর ভ্যানগুলির তো লাইসেন্সই নেই। কোনও ড্রাইভার কোনও নিয়মই মানে না। জানেও না। কী করে অনুমতি পায় চলাচলের? রাস্তার দু’পাশের অসংখ্য দোকানগুলিতে নোংরা ধুলো ময়লা গ্যাস ইত্যাদিতে খাবারদাবার মারাত্মক দূষিত হচ্ছে। অবিলম্বে কাটোয়াবাসীদের সুস্থ বসবাসের উদ্দেশ্যে ট্রাক্টর, মোটর ভ্যান নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করছি।
বেহাল পথ
বিশেষ ক্ষোভের বিষয় এই যে, দীর্ঘকাল যাবৎ এলাকার করুণ দুর্দশা। এমনকী রাস্তার আলোর অবস্থাও খুব খারাপ। পাতুলিয়া পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে খড়দহ মিউনিসিপ্যালিটিতে জানানো সত্ত্বেও কোনও সুরাহা হয়নি। জায়গার নাম পাতুলিয়া। খড়দহ অঞ্চলের সন্নিকটে। পাতুলিয়া পঞ্চায়েত থেকে পূর্ব দিকে সোজা চলে গেলে অথবা রহড়া বাজার থেকে মন্দিরপাড়া হয়ে শান্তিপল্লি হয়ে সব রাস্তাই দমদম-কল্যাণী এক্সপ্রেস ওয়েতে গিয়ে মিশেছে। তার ফলে, বড় বড় ভারী যান চলাচলের একমাত্র পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেখানে অবস্থিত একটি মেয়েদের ও ছেলেদের উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সবচেয়ে বড় কথা, এখানে রয়েছে বন্দিপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র। একে তো রাস্তার করুণ অবস্থা কোথাও বিশাল গর্ত, আবার কোথাও রাস্তার এক দিক ভেঙে নর্দমায় ঢুকে গেছে। তার উপর বড়জোর ১৪ ফুট রাস্তার মাঝেমধ্যেই পড়ে রয়েছে বিভিন্ন ইমারতি দ্রব্য। একটা রিকশা গেলেই তার পিছন পিছন যেতে হয়। আবার দেখা যায়, ওল্ড ক্যালকাটা রোড হয়ে চৌধুরি মোড় থেকে রহড়া হাঁড়িপুকুর রোড পর্যন্ত (যার মধ্যে রয়েছে রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন) গেটের ধার বরাবর হয়েছে ইমারতি ব্যবসায়ীদের রাখা বালি, ইট, পাথর রাখার ভাল জায়গা। এ ছাড়াও মিশনে আগত ছাত্রদের বড় বড় বাস যা সারাক্ষণ রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকে ছুটি না-হওয়া পর্যন্ত। এ বার তা হলে বোঝা যাচ্ছে, সাধারণ ও অসুস্থ মানুষের যাতায়াতের রাস্তা কতখানি!
অবহেলিত সোনারপুর
সোনারপুর জংশন স্টেশন হলেও আজ পর্যন্ত এখান থেকে হাওড়া, শিয়ালদহ, বাবুঘাট কিংবা ধর্মতলায় যাওয়ার কোনও বাস পরিষেবা নেই। অতীতে কোনও এক সময় থাকলেও অজানা কারণে দীর্ঘ দিন বন্ধ হয়ে গেছে। দিনে দিনে বসতি বাড়লেও শহরের প্রাণকেন্দ্র বা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যাওয়ার বাস নেই। এসডি-৫/১, ডবলিউবিএসটিসি-র বাস চললেও হাতে গোনা ও কয়েক ঘণ্টা অন্তর চলে এবং তা ভিন্ন রুটে। শহরের অনেক রাস্তায় নতুন পরিষেবা হলেও যত আকাল এখানেই। অটোর যা ভাড়া, আমাদের মতো নিম্নবিত্ত সাধারণ মানুষের প্রতিদিন যাওয়া সম্ভব নয়। ৫, ৬ (হাওড়া), বৈষ্ণবঘাটা (হাওড়া), ২২৮ (বাবুঘাট), ৮০-এ (ধর্মতলা), ২০৫, ২০৫-এ (বাবুঘাট), ৪০ বি (হাওড়া) এবং নাকতলা মিনি (হাওড়া) এই রুটের বাসের মধ্যে কিছু যদি সোনারপুর পর্যন্ত বাড়ানো যায়, তা হলে অনেক মানুষই উপকৃত হবেন। কলকাতা থেকে মাত্র ১৫ কিমি দূরে হয়েও আজও সোনারপুর অবহেলাতেই।
সেতু দুটির সংস্কার
হাওড়া জেলার দুটি সেতু একটি কানাদামোদর নদীর উপর কংক্রিটের বহু পুরোনো সেতু। যার দু’ধারে রেলিং ভেঙে পড়েছে। যাতায়াত এখন বেশ বিপজ্জনক। অথচ এই সেতুটি ছাড়া হাওড়ার জগৎবল্লভপুর ব্লকের হাফেজপুর এবং নাইকুলি গ্রামের সংযোগ বিচ্ছিন্ন। এ ছাড়া এই সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন ৭/৮টি গ্রামের বহু লোক সাইকেল, মোটর সাইকেল, যন্ত্রচালিত ভ্যান নিয়ে যাতায়াত করে। বর্তমানে এটির দশা এতই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যে, যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। অন্য দিকে, আর একটি সেতু যেটি রামপুর ও শঙ্করহাটি গ্রামকে সংযুক্ত করেছে। সেটির আবার কোনও রেলিং নেই। ফলে, অনেক সময় এই রেলিং না-থাকার জন্য অনেককেই অসাবধানে নদীতে পড়ে যেতে দেখা গেছে। আশু এই সেতু দুটির সংস্কার আবশ্যক।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.