‘বদল কীসের’, প্রশ্ন কংগ্রেসের প্রতিবেদনে
রাজ্য মন্ত্রিসভা ও প্রশাসনের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে সমন্বয় বাড়ানো দরকার বলে রাজনৈতিক প্রস্তাব গ্রহণ করা হল কাটোয়া মহকুমা কংগ্রেস কর্মী সম্মেলনে। শনি ও রবিবার এই দু’দিন ধরে কাটোয়ার কাশীরাম দাস বিদ্যায়তনের মাঠে ওই সম্মেলন হয়ে গেল।
সম্মেলনে মহকুমার ৭টি ব্লকের প্রায় বারো হাজার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি কংগ্রেস নেতাদের। শনিবার সম্মেলনে হাজির হন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য মানস ভুঁইয়া, আবু হেনা, সাংসদ অধীর চৌধুরী। রবিবার সকালে বক্তব্য পেশ করেন কংগ্রেস নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্র ও বিধানসভায় কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব।
সভায় ওমপ্রকাশ মিশ্র।
ওই সম্মেলনের আহ্বায়ক বিধায়ক তথা প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মহকুমা কংগ্রেস কর্মীদের উজ্জীবিত ও এককাট্টা করতে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।”
সম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশিত চার পাতার একটি প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পাতায় বলা হয়েছে, ‘জোট সরকারের ১১ মাসের সময়সীমার মধ্যেই এমন কতগুলি অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, যা রাজ্যবাসীকে প্রশ্নাতুর করে তুলেছে। বামফ্রন্ট সরকারের ৩৪ বছরের কুশাসন বা ১১ মাসের সুশাসনের প্রশ্ন নয়, প্রশ্ন সরকার ও প্রশাসন ঠিক মতো চলছে কি না।’
রাজ্যে পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামে কৃষক আন্দোলনের বড় ভূমিকা ছিল। জমি ফেরত পাওয়া নিয়ে আশায় ছিলেন সিঙ্গুরের কৃষকেরা। কিন্তু পরিবর্তনের পরেও আইনি মারপ্যাঁচে আজ পর্যন্ত এক ছটাক জমিও ফেরত পাননি তাঁরা। এই প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘তাহলে বদল কীসের?’
তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে বর্ধমান-সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় চাষি-আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘কৃষকেরা ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। ধানের অভাবী বিক্রি বন্ধ করা যায়নি। মিল মালিক ও মধ্যসত্ত্বভোগীদের ‘অশুভ আঁতাত’ রয়েছে। শুধু প্রতিবেদন নয়, সম্মেলনে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকার কংগ্রেস কর্মীরাও এই নিয়ে সরব হয়েছেন।
সম্মেলনে নেতারা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন বক্তব্য নিয়েও সমালোচনা করা হয়েছে। পার্ক স্ট্রিট ও কেতুগ্রামের ধর্ষণের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মহাকরণে দাঁড়িয়ে ‘সাজানো ঘটনা’ বলে জানিয়েছিলেন। সে কথা তুলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ‘ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণ যেখানে মূল ঘটনাগুলি অবিকল দেখছেন, অভিযোগকারিণীর বক্তব্য শুনছেন, সেখানে সরকারের প্রধান বেমালুম সেই সব ঘটনাকে সাজানো বলে মন্তব্য করে বসছেন।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘মুখ্যমন্ত্রী দলের নেতানেত্রীদের কাছ থেকে ‘ভুল’ খবর পাচ্ছেন। যার ফলে মুখ্যমন্ত্রী অস্বস্তিতে পড়ছেন।’ সে কারণে মন্ত্রিসভা ও প্রশাসনের দূরত্ব কমানো প্রয়োজন। একই সঙ্গে প্রশাসনিক উচ্চস্তরে আমলাদের একাংশ সরকারের ক্ষতি করতে চাইছে বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে। শনিবারই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছিলেন, “সরকার ভুল করলে সমালোচনা করতেই হবে।” রবিবার বিধানসভার কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব বলেন, “আমরা সরকারের আয়না হতে চেয়েছিলাম। গঠনমূলক সমালোচনা করতে চাই।” আর এক ধাপ এগিয়ে কংগ্রেস নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেই ফেললেন, “আটের দশক থেকে সিপিএম যে কায়দায় চলেছিল, বর্তমানে তৃণমূল-ও একই কায়দায় চলছে। এটা রাজ্যবাসীর কাছে দুর্ভাগ্যজনক।”

—নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.