ভরদুপুরে এক বিবস্ত্র কিশোরী আব্রু বাঁচাতে চা বাগান ঘেরার নাইলনের জাল শরীরে জড়িয়ে মরিয়া হয়ে ছুটছিল। তাকে থামিয়ে বাগানের মহিলা শ্রমিকেরা ঘরে নিয়ে গেলে কান্নায় ভেঙে পড়া মেয়েটি জানায়, স্কুলে যাওয়ার পথে কীভাবে তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে এসে বাগানের মধ্যে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল। তার অভিযোগ শুনে মহিলা শ্রমিক কিশোরীর বাড়ির লোককে খবর দেন। ছুটে আসেন তার অভিভাবকেরা। থানায় গিয়ে ঘটনাটি জানায় কিশোরী।
ওই কিশোরীর পরিবারের সন্দেহ, ওই কাজ এলাকার এক প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতার ছেলে ও তার শাগরেদদের। পুলিশ অভিযোগ নথিভুক্ত করে কিশোরীটিকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করায়। দুষ্কৃতীর খোঁজে তল্লাশিও শুরু করেছে পুলিশ। আইজি (উত্তরবঙ্গ) রসঞ্জয় সিংহ বলেন, “গুরুতর অভিযোগ। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপারকে তদন্তে করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আমি নিজেও বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।”
শনিবার দুপুরের ওই ঘটনাটি উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার কালাগছ এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাটি স্থানীয় বিধায়ক তৃণমূলের হামিদুল রহমানকে জানান। বিধায়ক বলেন, “ভয়ঙ্কর ঘটনা। ওই কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় যে রাজনৈতিক দলের নেতার ছেলেই জড়িত থাকুক না কেন, কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছি, কোনও রং না-দেখে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।” চোপড়ার ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অশোক রায়ও ঘটনার কথা শুনে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, “দলের এক নেতার ছেলের নামেও অভিযোগ হয়েছে শুনেছি। যদি তা সত্যি হয় তা হলে পুলিশ আইন মেনে যা করণীয় করবে।”
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ওই কিশোরী চোপড়ার একটি স্কুলে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। এ দিন বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ স্কুলে যাওয়ার সময় ছাত্রীটির রাস্তা আটকে দাঁড়ায় একটি মারুতি ভ্যান। পাঁচ-ছয় জন যুবক নেমে ছাত্রীটির মুখ চেপে গাড়িতে তুলে নেয়। ছাত্রীটির অভিযোগ, ১০-১২ কিলোমিটার দূরে কালাগছের পশ্চিম প্রান্তের একটি চা বাগান লাগোয়া নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে তাকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। কিশোরীটি বাধা দিলে দুষ্কৃতীরা তার গলা টিপে ধরে। ভয়ে জ্ঞান হারায় সে। মারা গিয়েছে ভেবে তাকে ফেলে পালায় দুষ্কৃতীরা। |