|
|
|
|
আজ লালগড়ে মুখ্যমন্ত্রী, ঝাড়গ্রামে খুন তার আগেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম ও মেদিনীপুর |
মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লালগড়ে যাচ্ছেন এই প্রথম। তার আগের দিনই ফের রক্তাক্ত হল জঙ্গলমহল। আজ, মঙ্গলবারের এই সফর নিয়ে চতুর্থ বার জঙ্গলমহলে পা রাখতে চলেছেন ‘মুখ্যমন্ত্রী’ মমতা। কিন্তু সোমবার সকালেই ঝাড়গ্রামের বাঁশতলা স্টেশন লাগোয়া জামবেদিয়ায় জঙ্গলের পথে পড়ে থাকতে দেখা যায় জনগণের কমিটির প্রাক্তন নেতা মঙ্গল মাহাতোর (৩২) গুলিবিদ্ধ দেহ। দেড় বছর জেল কাটানোর পরে গত অক্টোবরে জামিন পেয়ে তিনি ঝাড়গ্রামের বাঁধগোড়ায় দামোদরপুরের বাড়িতে ফেরেন। কিন্তু কে বা কারা, কেন তাঁকে খুন করেছে তা পরিষ্কার নয়।
মঙ্গলের স্ত্রী দীপ্তি মাহাতোর দাবি, সেই থেকে তিনি চাষ নিয়েই ছিলেন। কিন্তু রবিবার বিকেলে ধান বেচে পাওয়া কয়েক হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ফেরেননি। পুলিশ সূত্রের খবর, ইউএপিএ-সহ রাষ্ট্রদ্রোহ, খুন, অপহরণ, তোলাবাজি, হামলা-নাশকতার মামলায় অভিযুক্ত মঙ্গল। |
|
মুখ্যমন্ত্রী আসছেন, কাজ চলছে মেদিনীপুর-লালগড় রাস্তায়। |
মাওবাদী বাড়বাড়ন্তের সময়ে ‘গণ-আদালত’ বসিয়ে কয়েক জনকে খুনের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। পুলিশের অনুমান, সে রকম খুনের ‘প্রতিশোধ’ নিতে কেউ মঙ্গলকে গুলি করে থাকতে পারে। কমিটি-মাওবাদী ‘দ্বন্দ্ব’ বা এক সময়কার কিছু কমিটি নেতার সঙ্গে তৃণমূলের ঘনিষ্ঠতাও এর পিছনে থাকতে পারে। কেননা কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক মনোজ মাহাতো, লালগড় অঞ্চলের নেতা শ্যামল মাহাতো বা লসো হেমব্রমরা জামিনে জেল থেকে বেরিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এ নিয়ে কমিটির একাংশ যেমন ক্ষুব্ধ, তৃণমূলের অন্দরেও ক্ষোভ রয়েছে।
অনেক দিন পরে জঙ্গলমহলে ফের ‘রাজনৈতিক কর্মী’ খুনের ঘটনায় প্রশাসন অস্বস্তিতে। নভেম্বরে কিষেণজি নিহত হওয়ার পরে মাওবাদী নেতানেত্রীদের অনেকে হয় ধরা পড়েছেন বা আত্মসমর্পণ করেছেন। কিন্তু ইদানীং নয়াগ্রাম বা বেলপাহাড়ি এলাকায় মাওবাদীরা ফের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর। অন্ধ্র, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড থেকে মাওবাদীরা কলকাতা-সহ নানা এলাকায় যাতায়াতও করছেন। কিছু দিন আগেই কলকাতায় ধরা পড়েছেন অন্ধ্রের এক নেতা। অপহরণ, নাশকতার ঘটনা ঘটছে অন্য রাজ্যেও। |
|
ঝাড়গ্রামের বাঁশতলার রাস্তায় মঙ্গল মাহাতোর দেহ। |
এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী যাওয়ায় নিরাপত্তা যথাসম্ভব আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। সোমবার দিনভর জঙ্গল ও আশপাশের গ্রামে চিরুনি তল্লাশি চালানো হয়েছে। খুঁটিয়ে দেখা হয়েছে প্রতিটি রাস্তা। প্রশাসনিক বৈঠক ছাড়াও সেতু ও কলেজ-সহ একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস এবং পাট্টা বিলির কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। দিনের আলো থাকতেই যাতে তিনি ও প্রশাসনের কর্তারা মেদিনীপুরে ফিরে আসেন, সেই মতো নির্ঘণ্ট চূড়ান্ত করা হয়েছে। লালগড়ের বৈঠকেও জেলা প্রশাসনের নির্দিষ্ট কিছু অফিসারকেই শুধু থাকতে বলা হয়েছে।
|
ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
|
|
|
|
|