|
|
|
|
বিদ্যুৎ বণ্টনে নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে সওয়াল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
উৎপাদন খরচের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে না-দিলে সরকারি বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা যে বিপুল লোকসানের শিকার হয়, সেই জানা কথাটাই নানা ভাবে ফের বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান প্রমোদ দেও। তাঁর মতে, বণ্টন সংস্থাগুলোকে সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাইরে রেখে বাণিজ্যিক ভাবে চলতে দেওয়া উচিত। “কারণ, ওগুলো সরকারি হলেও সমাজসেবী সংগঠনের মতো চলতে পারে না।” সোমবার কলকাতায় বণিকসভা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের এক আলোচনাসভায় মন্তব্য করেন দেও।
অনেক রাজ্যেই দেখা যায়, বণ্টন সংস্থাগুলো রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে মাসুলবৃদ্ধির আবেদন জানাতে চাইলেও আপত্তি তুলছে রাজ্য সরকার। যেমন পশ্চিমবঙ্গে গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে তুলেছিল তদানীন্তন বাম সরকার। নতুন সরকারও প্রস্তাবে সায় না-দেওয়ায় রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা লোকসানের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়ে। ২০১১-’১২ অর্থবর্ষের প্রথম ন’মাসে তার ক্ষতির বহর দাঁড়িয়েছিল প্রায় হাজার কোটি টাকা। শেষে বাস্তব বুঝে রাজ্য মাসুলবৃদ্ধি অনুমতি দেয়। গত ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত বণ্টনের বিদ্যুতের মাসুল তিন বার বেড়েছে। উপরন্তু চলতি ও পরবর্তী অর্থবর্ষের জন্যও মাসুল সংশোধনের সুপারিশ কমিশনে পেশ করার অনুমতি মিলেছে। ফলে কিছুটা হলেও পায়ের তলায় জমি ফিরে পেয়েছে বণ্টন সংস্থা।
বিদ্যুৎ-শিল্পমহল সূত্রে খবর, মাসুল সংশোধনের অভাবে দেশের বিভিন্ন বিদ্যুৎ সংস্থায় পুঞ্জীভূত লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা। আগামী তিন বছরের মধ্যে যা ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটিতে গিয়ে দাঁড়াতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সারা দেশে বিদ্যুৎ শিল্পে বিনিয়োগের উৎসাহ কমে যাচ্ছে। অথচ স্বাধীন ভাবে চলতে দিলে সরকারি বিদ্যুৎসংস্থা যে লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারে, পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা তার অন্যতম দৃষ্টান্ত। এবং তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যও এই ‘সত্য’টা বুঝতে পারছে বলে এ দিন আলোচনাসভায় জানান দেও। তাঁর কথায়, “তামিলনাড়ু সরকার দশ বছর পরে ৩৭% মাসুলবৃদ্ধির অনুমতি দিয়েছে। উত্তরপ্রদেশ-সহ আরও ক’টি রাজ্য দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে। আমাদের হিসেবে গত দু’মাসে প্রায় সাতটি রাজ্য বিদ্যুতের মাসুল বাড়িয়েছে।”
কেন্দ্রীয় কমিশন সম্প্রতি দশ রাজ্যের বিদ্যুৎ-শিল্পের হাল-হকিকত নিয়ে সমীক্ষা চালিয়ে বিদ্যুৎ মন্ত্রকে রিপোর্টও দিয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান।
দেও এ দিন বলেন, দাম বাড়াতে না-দিলে রাজ্য সরকারগুলির উচিত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভর্তুকির টাকা মিটিয়ে দেওয়া। প্রয়োজনে রাজ্য বাজেটে ও খাতে অর্থ বরাদ্দ করা উচিত। |
|
|
|
|
|