জোকা মেট্রোর গতি অনুমতির জটে রুদ্ধই
বামফ্রন্ট সরকার থেকে শুরু করে ‘পরিবর্তন’-এর সরকার, জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রো প্রকল্পের কাজ খুঁড়িয়েই চলছে।
অথচ, সময়ের মধ্যে জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রো প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ার দায় রেলমন্ত্রী মুকুল রায় বিগত বামফ্রন্ট সরকারের উপরেই চাপিয়ে দিয়েছেন। যে সব কারণে বাম জমানায় প্রকল্পটি সে ভাবে এগোতে পারেনি, সেই একই কারণে গত ১১ মাস তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরেও পরিস্থিতি কার্যত বদলায়নি। মেলেনি রাজ্যের একাধিক দফতরের ছাড়পত্র। প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১০-এর বাজেটে এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন। প্রকল্পটি ছিল জোকা থেকে বিবাদী বাগ পর্যন্ত উড়ালপুল তৈরি করে মেট্রো চালানো।
বাম জমানায় ট্রামলাইন নিয়ে জট খোলা যায়নি বলে কাজ শুরু হতে অনেক দিন দেরি হয়ে যায়। সোমবার জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রো প্রকল্পের একটি গার্ডার বসানোর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, “এই কাজের জন্য যে ৯ মাস দেরি হয়েছে, তার জন্য সিপিএম দায়ী। ওরা ট্রামলাইন সরাতে দেয়নি।” রেলমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বামফ্রন্টের প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী রঞ্জিত কুণ্ডু অবশ্য বলেন, “আমরা কেন, ওরাই তো দায়ী। দু’দুটি রুট বন্ধ হওয়ার ব্যাপার। বিভিন্ন দফতরের ছাড়পত্র নিয়ে তাই মেট্রো, রাজ্য সরকার ও ট্রাম কোম্পানিকে বারবার এক সঙ্গে আলোচনা করার কথা বলা হয়েছিল। ওরা তা করেনি।” তবে রাজ্যের অধীন যে যে দফতরের ছাড়পত্র এখনও মেলেনি, সেগুলি হল, ভূমি-রাজস্ব দফতর, সেচ দফতর ও বিদ্যুৎ দফতর। এর মধ্যে ভূমি দফতরটি স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। বিদ্যুৎ দফতরের মন্ত্রী তৃণমূলের মণীশ গুপ্ত। সেচ দফতরটি কংগ্রেসের মানস ভুঁইয়ার হাতে।

মেট্রোর কাজ দেখছেন
রেলমন্ত্রী মুকুল রায়।
সোমবার। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের হাতে
• ডায়মন্ড হারবার রোডের পশ্চিমে বিষ্ণুপুরে এই প্রকল্পের জন্য প্রায়
৬২ একর জমি অধিগ্রহণ করতে পারেনি ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর।
• চড়িয়াল খালের উপরে সেতু তৈরির জন্য সেচ দফতরের ছাড়পত্র এখনও আসেনি।
• মেট্রোর গুদাম তৈরির জন্য বিদ্যুতের লাইন সরাতে
অনুমতি এখনও দেয়নি বিদ্যুৎ দফতর।


কেন্দ্র যা দেবে
• খিদিরপুরের পরে লাইন পাতার সমীক্ষার কাজের
জন্য প্রতিরক্ষা দফতরের অনুমতি।
• তারাতলায় টাঁকশালের জমিতে একটি উড়ালপুল
তৈরির জন্য অর্থ মন্ত্রকের ছাড়পত্র।
পাশাপাশি, এই প্রকল্পের জন্য অবশ্য কেন্দ্রীয় সরকারের অনেকগুলি দফতরের ছাড়পত্রও এখনও মেলেনি। যদিও রেলমন্ত্রীর আশা, ওই সব ছাড়পত্র শীঘ্রই মিলবে। ২০১৩ সালের মধ্যে জোকা-মাঝেরহাট পর্যন্ত মেট্রো চালানো যাবে বলে রেলমন্ত্রী সোমবার ঘোষণা করলেও প্রকল্পটি কবে সম্পূর্ণ হবে, তা তিনি জানাতে পারেননি।
আর এত ছাড়পত্র বাকি থাকার জন্য মূলত মাঝেরহাটের পর থেকে বিবাদী বাগ পর্যন্ত এই প্রকল্পের তেমন কোনও কাজই করা যায়নি। শেষে গত জুলাই মাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আসায় প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে দীনেশ ত্রিবেদী জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রোর কাজকর্ম খতিয়ে দেখে বলেছিলেন, “একটি উচ্চ পর্যায়ের মনিটরিং কমিটি তৈরি করা হয়েছে। ২০১২-’১৩ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে।” কিন্তু তার পরেও প্রকল্পের যা অগ্রগতি, তাতে ২০১৮ সালেও এই প্রকল্পটি শেষ করা যাবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ে খোদ মেট্রোর কর্তারাই।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.