দলীয় সদস্য নন, এমন কোনও ব্যক্তিকে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী না-করার সিদ্ধান্ত নিল ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা কমিটি। ২৮ এপ্রিল দিনহাটায় আয়োজিত দলের কর্মী সম্মেলনে জেলা নেতৃত্বের তরফে ওই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। চাপের মুখে প্রার্থীপদ প্রত্যাহার এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অন্য দলে চলে যাওয়ায় সমস্যা এড়াতে ওই সিদ্ধান্ত বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই বিষয়ে খোলাখুলি কিছু জানাতে অস্বীকার করলেও ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয় সদস্য নয় এমন ব্যক্তিদের প্রার্থী না-করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কর্মী সম্মেলনে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হবে।” গত বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় সিপিএম আসন না-পেলেও বামফ্রন্টের শরিক হিসাবে ফরওয়ার্ড ব্লক ৪টি আসন দখল করে। পরিবর্তনের ঝড়ের মুখে দাঁড়িয়ে ওই সাফল্য যে কাকতলীয় নয় তা প্রমাণ করতে এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনকে বাড়তি গুরুত্ব দিেচ্ছেন ফরওয়ার্ড ব্লক জেলা নেতৃত্ব। জেলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার পরে তাঁদের ধারণা, দলের প্রতি আনুগত ও দায়বদ্ধ ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ প্রার্থী হলে চাপের মুখে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না। অনেকে প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নিতে পারেন। জয়লাভের পরেও ভয়ে অন্য দলে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দলের জেলা সম্পাদক বলেন, “দলের প্রতি আনুগত্য ও দায়বদ্ধতা না-থাকলে প্রার্থীদের নিয়ে সমস্যা হতেই পারে।” ফরওয়ার্ড ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় দলীয় টিকিটে ৩৭০ জন সদস্য গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে জয়লাভ করেন। পঞ্চায়েত সমিতিতে জিতেছেন ৮৪ জন। জেলাপরিষদে ৮ জন। ওই নির্বাচিত সদস্যদের একাংশের দলীয় সদস্য পদ নেই। জনপ্রিয়তা দেখে ওই ব্যক্তিদের প্রার্থী করা হয়েছিল। রাজ্যে পালাবদলের পরে ওই জন প্রতিনিধিদের অনেকে রাজনৈতিক চাপ সামলাতে দিশেহারা হয়ে পড়েন। দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতেও তাঁদের কয়েকজনের দেখা মেলেনি। এ ছাড়াও সদস্যদের একাংশের অন্য দলে চলে যাওয়ার কারণে কোচবিহার-১ পঞ্চায়েত সমিতি বামেদের হাতছাড়া হয়েছে। দলীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল হবে। তাই সবদিক বিচার করে দলীয় সদস্যদের প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। দলের জেলাস্তরের এক নেতা বলেন, “সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে দলের টিকিটে জিতে আসা কয়েকজন পঞ্চায়েত সমিতি সদস্যকে শিবির বদল করতে বাধ্য করা হয়েছে। দলীয় সদস্য না-হওয়ায় তাঁদের অনেকে চাপের মুখে টিকে থাকতে পারেননি।” জেলায় দলের সক্রিয় সদস্য আড়াই হাজার। সহযোগী সদস্য সাড়ে ৩ হাজার। সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছেন ১০ হাজারের বেশি কর্মী। পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে সদস্যদের ভূমিকা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ হবে। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শাখা কমিটি গঠনের কাজও শেষ করে প্রার্থী তালিকা ঠিক করা হবে। |