প্রশ্নের মুখে পরিষেবা
অসুস্থ সদ্যোজাতের অস্ত্রোপচার নিয়ে জট
রাজ্যে শিশু-মৃত্যু ঠেকাতে জেলায় জেলায় সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট (এসএনসিইউ) খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু বাস্তবে সেই সব কেন্দ্রে কাজের কাজ কতটা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল ১২ দিন বয়সী এক শিশুকন্যা। আপাতত হাওড়া জেলা হাসপাতালের এসএনসিইউ-তে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে সে। অবিলম্বে তার শরীরে একটি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। অথচ, জেলা হাসপাতাল জানিয়ে দিয়েছে, তা সম্ভব নয়।
হাওড়া হাসপাতালে শিশু শল্যচিকিৎসার ডিগ্রিধারী চিকিৎসক রয়েছেন। রয়েছেন একাধিক অ্যানাস্থেটিস্টও। তার পরেও অস্ত্রোপচার হয়নি একরত্তি শিশুটির। বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতাল, এনআরএস, আরজিকর, বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজি ঘুরে কোথাও জায়গা না-পেয়ে তার পরিবারের লোকেরা ফিরে এসেছেন হাওড়ার এসএনসিইউ-তেই। বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, অবিলম্বে অস্ত্রোপচার হলে শিশুটিকে স্বাভাবিক জীবন দেওয়া সম্ভব। এই পরিস্থিতিতে কেন চিকিৎসকেরা হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসক মহলের একটা বড় অংশও।
হাওড়ার বেলিলিয়াস রোডের বাসিন্দা খালেদা সুলতানা ওই শিশুকন্যার জন্ম দেন গত ৭ এপ্রিল মধ্যরাতে। তখনই জানা যায়, তার জন্মগত একটি সমস্যা রয়েছে, চিকিৎসা পরিভাষায় যার নাম মিলিঙ্গোমাইলোসিল। সদ্যোজাতকে হাওড়ার এসএনসিইউ-তে রাখা হয়। চিকিৎসকেরা তখনই জানিয়ে দেন, দ্রুত শিশুটির অস্ত্রোপচার দরকার। টালবাহানার শুরু এর পর থেকেই।
হাওড়া হাসপাতালের তরফে শিশুটির পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়, সেখানে অস্ত্রোপচার করা যাবে না। পরিবারের লোকেরা সদ্যোজাতকে নিয়ে প্রথমে বি সি রায় এবং তার পরে অন্য তিন হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু কোথাওই ওই সময়ে শয্যা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ওই শিশুকন্যার বাবা মহম্মদ সুলতান। তিনি বলেন, “সর্বত্রই ডাক্তারবাবুরা বলেছিলেন, অস্ত্রোপচারের সুযোগ পেতে পেতে দেরি হয়ে যাবে। তত দিন আমার বাচ্চাটা বাঁচবে না। তাই আবার হাওড়ায় ফিরে এসেছিলাম।”
হাসপাতালের সুপার শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, “বিশেষজ্ঞ শিশু শল্যচিকিৎসক রয়েছেন ঠিকই। কিন্তু শিশুদের অস্ত্রোপচারে দক্ষ অ্যানাস্থেটিস্টের সমস্যা রয়েছে। আমি বিভাগের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছি। আশা করছি, অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা যাবে।”
রাজ্যে শিশুমৃত্যুর হার কমাতে একটি টাস্ক ফোর্স গড়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি শিশুও যাতে বিনা চিকিৎসায় মারা না যায়, তা নিশ্চিত করার উপরে জোর দিয়েছিলেন তিনি। বাস্তবের ছবিটা কি তার সঙ্গে মিলছে? টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জেলা হাসপাতালে এত দিন শিশুদের অস্ত্রোপচারের পরিকাঠামো ছিল না। তাই সকলকেই কলকাতায় পাঠানো হত। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও দ্রুত শিশুটির অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করছি। প্রয়োজনে কলকাতায় এনে অস্ত্রোপচার করা হবে।” অস্ত্রোপচারের চল যদি না-ই থাকে, তা হলে শিশু শল্য-চিকিৎসককে এখানে নিয়োগ করা হয়েছে কেন? সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.