সংস্কৃতি যেখানে যেমন...
সার্ধশতবর্ষ অনুষ্ঠান
বিষ্ণুপুরে যদুভট্ট মঞ্চে অনুষ্ঠান।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দ ও প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের জন্ম সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে পাত্রসায়রের বালসি আমরা ক’ জন সংস্থা। আজ শনিবার বালসি বাল্লেশরতলায় এই অনুষ্ঠান হবে। আয়োজক সংস্থার সম্পাদক শ্রীকুমার দে জানান, প্রভাতফেরির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হবে। দিনভর নানা অনুষ্ঠানের পাশাপাশি এলাকার কৃতী ছাত্র ও ছাত্রীদের পুরস্কার দেওয়া হবে। রাতে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে।

‘নির্মল বিদ্যালয়’
‘নির্মল বিদ্যালয় অভিযান’ উপলক্ষে সম্প্রতি বরাবাজারের লাকা প্রাথমিক স্কুলে সারাদিনব্যাপী অনুষ্ঠান হয়েছে। সকালে পড়ুয়ারা গ্রামে পরিচ্ছন্নতার আহ্বান জানিয়ে পদযাত্রা করে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শরৎচন্দ্র পরামানিক বলেন, “এ দিন স্কুলে পরিচ্ছন্নতা নিয়ে আলোচনাচক্র ও ব্রতচারী কলাকৌশল প্রদর্শিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে বরাবাজারের জয়েন্ট বিডিও-সহ বিশিষ্ট জনেরা উপস্থিত ছিলেন।

সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠান
যদুভট্ট সংগীত বিদ্যালয় ও সাবড়াকোন আর্ট অ্যান্ড মিউজিক যৌথভাবে গত ৭ এপ্রিল শনিবার বিষ্ণুপুর যদুভট্ট মঞ্চে সংগীত-নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। পরিবেশিত হয় বিষ্ণুপুর ঘরানার ধ্রুপদ, রবীন্দ্র নৃত্য। সংস্থার দুই পরিচালক বামাপদ চক্রবর্তী এবং সঞ্চিতা চক্রবর্তী জানান, শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী এতে যোগ দিয়েছিলেন।

কলেজে অনুষ্ঠান
১০-১২ এপ্রিল তিন দিনের সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করেছিল বিষ্ণুপুরের মল্লভূম ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির ছাত্র-ছাত্রীরা। গানের সঙ্গে ছিল বিষ্ণুপুর ঘরানার ঐতিহ্যবাহী সংগীতানুষ্ঠানও। এ ছাড়া, বিতর্ক, কম্পিউটার গেমসের প্রতিযোগিতাও ছিল। উপস্থিত ছিলেন শিশু কল্যাণ বিভাগের মন্ত্রী শ্যাম মুখোপাধ্যায়, মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) অদীপ রায়।

‘ছোট্টতুলি’
‘ছোট্টতুলি’ ছাত্রছাত্রীদের শিল্পকলা শিক্ষণকেন্দ্র তাদের ৩২তম বর্ষ উপলক্ষে তিনদিন ব্যাপী একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাঁকুড়ার জেলাপরিষদ অডিটোরিয়াম হলে। আজ শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে অনুষ্ঠান। প্রধান শিক্ষক সুজয় দাস জানান, বসে আঁকো ও আল্পনা আঁকা প্রতিযোগিতা রয়েছে। এ ছাড়াও তিনদিনই স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের আঁকা চিত্র প্রদর্শিত হবে।

বর্ষবরণ
গত শনিবার বাঁকুড়ার জেলাপরিষদ অডিটোরিয়াম হলে জেলা ক্রীড়া ও শক্তিসঙ্ঘের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলাপরিষদের সভাধিপতি পার্থপ্রতিম মজুমদার, বাঁকুড়ার পুরপ্রধান শম্পা দরিপা প্রমুখ।

শাস্ত্রীয় সঙ্গীতানুষ্ঠান
নাচে-গানে পুরুলিয়ার হরিপদ সাহিত্য মন্দিরে বর্ষবরণ।
সুধাকর সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতানুষ্ঠান হয়ে গেল হয়ে গেল বাঁকুড়ার শাঁখারিপাড়া সঙ্গীতনৃত্যকলা মন্দিরে। ওই মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বাসুদেব ঘোষাল জানান, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রসার ও প্রচার ঘটাতে বছরভর সঙ্গীতানুষ্ঠান করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এটি সংস্থার পঞ্চম নিবেদন।

কাশীপুরের ধবাড়ি গ্রামে ছৌ-নাচের মধ্য দিয়ে হয়ে গেল বর্ষবরণ।

‘গান্ধর্বী’র অনুষ্ঠান
গত ৭ এপ্রিল শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় রক্তকরবী পুরমঞ্চে আড়াই ঘণ্টার টানটান সঙ্গীত ও নৃত্যের কোলাজে কয়েকশো দর্শক ও শ্রোতাকে মন্ত্রমুগ্ধের মত মাতিয়ে রাখলো রামপুরহাটের সঙ্গীত ও নৃত্যের প্রতিষ্ঠান গান্ধর্বী। ৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী ৩৩ জন নৃত্যশিল্পীর অনুষ্ঠান দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। আলাদা করে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে উত্তরা মজুমদার, সুচন্দ্রিমা দাস, অনুষ্কাশঙ্কর, জয়স্মিতা মণ্ডল ও সায়ন্তনী রায়। তেমনি সংস্থার কর্ণধার চৈতি মজুমদার ছাড়াও বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়, সুরজিৎ দত্ত, পুনম লোধ, রজত মুখোপাধ্যায় ও দেবিকা চট্টোপাধ্যায়ও শ্রোতাদের মন জয় করেছেন। রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি, দ্বিজেন্দ্রগীতি ও আধুনিক সব ধরনের সঙ্গীতই পরিবেশিত হয়েছে সুসজ্জিত মঞ্চে। যোগ দিয়েছিলেন মোট ৬০ জন শিল্পী। নৃত্যের তালিম দিয়েছেন তনুশ্রী কর রায়। ওই দিন স্থানীয় তিন সংস্কৃতিসেবীকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়েছে।

শৈশবের আড্ডা
বোলপুরের ‘বীরভূম আবৃত্তি আকাদেমি’র শাখা ‘শৈশবের আড্ডা’র দ্বিতীয় বর্ষ পূর্তি উৎসব সম্প্রতি হয়ে গেল স্থানীয় টাউন লাইব্রেরিতে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার আড্ডায় ২ থেকে ১২ বছরের প্রায় ৬৪ জন শিশু ও কিশোরেরা মেতে উঠেছিল গান, আবৃত্তি, শ্রুতিনাটক ও নৃত্যে। আর ছিলেন প্রায় ২৫০ জন অভিভাবক ও দর্শক। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে একটি ছোট্ট শিশু তিতাস সেনগুপ্ত। অনুষ্ঠানের মধ্যমণি ছিলেন বিশিষ্ট ছড়াকার তথা শিশু সাহিত্যিক ভবাণীপ্রসাদ মজুমদার। অনুষ্ঠান দেখে মুগ্ধ ভবাণীবাবুর বক্তব্য, “মফসস্লে এই ধরনের অনুষ্ঠান হয়, এ তো ভাবতেই পারছি না।”

নবপর্যায়ে নাটক
‘প্রভাত ফিরে এসো’ নাটকের একটি দৃশ্য।
১৯৯৯ সালে সিউড়ি কালীবাড়ির ‘শ্রীরঙ্গম নাট্যসংস্থা’র জন্ম হয়েছিল। উদ্বোধন করেছিলেন বর্তমান কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। সংস্থার মুখ্য উপদেষ্টা ছিলেন কালীবাড়ির মুখ্য সেবাইত তথা বিশিষ্ট অভিনেতা ও শিক্ষাবিদ দেবরঞ্জন মুখোপাধ্যায়। বিভিন্ন ঐতিহাসিক যাত্রাপালার মাধ্যমে ওই সংস্থা শহরের পরিচিতি পেয়েছিলেন। কিন্তু নানা কারণে সংস্থা দীর্ঘদিন কোনও নাটক বা যাত্রা প্রযোজনা করেনি। এ বার নবপর্যায়ে গত ১৫ এপ্রিল স্থানীয় রামকৃষ্ণ সভাগৃহে ওই সংস্থা রবীন্দ্রনাথের ‘দুর্বুদ্ধি’ নাটকটি মঞ্চস্থ করে। সঙ্গে ছিল নৃত্যানুষ্ঠান ‘কবি প্রণাম’। অন্য দিকে, সাঁইথিয়ার ‘রূপ তাপস’ নাট্যগোষ্ঠীর বয়স ৩৬ বছর। কিন্তু ১৬ বছর কোনও নাটক প্রযোজনা করতে পারেনি ওই নাট্যগোষ্ঠী। গত দু’বছর আগে থেকে এই গোষ্ঠী ফের নাট্য প্রযোজনা ও নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু করেছে। গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় স্থানীয় রবীন্দ্র ভবনে ওই নাট্যগোষ্ঠী মনোজ মিত্রের ‘প্রভাত ফিরে এসো’ নাটকটি মঞ্চস্থ করে। এখনও পর্যন্ত ৩৫টি নাটক মঞ্চস্থ করেছে ওই নাট্যগোষ্ঠী।

আড্ডার আলাপচারিতা
বাঙালি জীবনের ঐতিহ্য-- ‘আড্ডা’ প্রায় হারিয়েই যেতে বসেছে। বছরের প্রথমদিন সেই আড্ডাকেই ফিরিয়ে আনলেন লাভপুরের ‘বীরভূম সংস্কৃতি বাহিনী’র সদস্যেরা। অন্যান্য বছরের মত এ বারও লাভপুরের রাসমঞ্চে হয়ে গেল এই আড্ডা। আট থেকে আশি, পুরুষ থেকে মহিলা-- সবাই মেতে উঠলেন এই বিশেষ আড্ডায়। প্রবীণেরা ভেসে গেলেন নস্টালজিয়ায়। নবীনেরা গান-গল্প, আবৃত্তি, নাচে জমিয়ে দিলেন আড্ডা। সেখানে যোগ দেন স্থানীয় ‘তারাশঙ্কর সব পেয়েছি আসর’-এর সভাপতি হরিপ্রসাদ সরকার, সাহিত্যিক তারাশঙ্করের ভ্রাতুঃস্পুত্র বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, ছড়াকার হেমাঙ্গ দাশগুপ্ত-রা। আড্ডার আলাপচারিতায় জানা গেল, একসময় স্ত্রী প্রমীলার অসুস্থতায় ওষুধ নিতে আমোদপুরের বেলেগ্রামে এসেছিলেন কাজী নজরুল। তারাশঙ্করের বাড়িতে অতিথি হয়ে রাত কাটিয়েছিলেন। অনেক রাত অবধি দুই সাহিত্যসাধকের আড্ডায় সামিল হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। বর্ষবরণের এই আড্ডায় ‘ফুল্লরার ইতিবৃত্ত’ নামে একটি পুস্তিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। সংস্থার সম্পাদক উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় জানান, সংস্থার সদস্যেরা আড্ডার আগের দিন চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে শিব-অন্নপূর্ণা, নন্দী-ভৃঙ্গীদের সঙ নিয়ে পথ পরিক্রমাও করেন।

সংক্ষেপে
• সম্প্রতি বড়জোড়ার ভুবনেশ্বরের গাজন উপলক্ষে যাত্রা, বাউল গান-সহ বেশ কিছু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি যেমন খুশি সাজো প্রতিযোগিতারও আয়োজন ছিল।

• রামপুরহাট ২ ব্লকের সাহাপুর বীণাপানি ক্লাবের উদ্যোগে গাজন উৎসব উপলক্ষে ১০-১৩ এপ্রিল তিনদিনের যাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত হল। সেখানে যাত্রা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে বীণাপানি। ওই ক্লাবের সদস্য অপূর্ব দাস বলেন, “গাজন উৎসব উপলক্ষে এ যাবত প্রায় তিন শতাধিক যাত্রা পালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গ্রামবাংলার কাছে দুর্গাপূজার থেকেও গাজন উৎসবের আকর্ষণ অনেক বেশি।”

• রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনের অশিক্ষক-কর্মী সলিল মুখোপাধ্যায়ের আরও একটি পরিচয় তিনি এলাকার বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী। এর সঙ্গেই বিগত কয়েক বছর ধরে তিনি প্রকাশ করে আসছেন ‘সরাণ’ নামে একটি লিটল ম্যাগাজিনও। সেই ম্যাগাজিনের সাম্প্রতিক সংখ্যা প্রকাশ উপলক্ষে গত ১৫ এপ্রিল স্থানীয় রক্তকরবী পুরমঞ্চে হয়ে গেল এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.