বছর খানেক ধরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢোলাহাটের বেলুনি গ্রামে পানীয় জলের কোনও নলকূপ নেই। ফলে তিন থেকে সাড়ে ৩ কিলোমিটার দূরে ঢোলাহাট বাজার থেকে জল নিয়ে আসতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। নলকূপের দাবিতে গ্রামবাসীরা একাধিকবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও সমস্যা মেটেনি।
ঢোলাহাট পঞ্চায়েতের বেলুনি গ্রামে প্রায় ৪ হাজার মানুষের বাস। গ্রামে রয়েছে দু’টি মাদ্রাসা, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বেলুনি সিদ্দিকিয়া ওল্ড স্কিম সিনিয়র মাদ্রাসায় বর্তমানে ৩৭৩ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৭০। দু’জায়গাতেই মিড-ডে-মিল চলে। নলকূপ না থাকায় রান্না থেকে বাসন মাজা সবই চলে পুকুরের দূষিত জলে। তাতে পেটের রোগের সম্ভাবনা প্রবল। অথচ সরকারি নিয়মে নলকূপের জল ছাড়া মিড-ডে-মিল রান্না হওয়ার কথা নয়। ওই গ্রামে রাজ্য সমাজ কল্যাণ দফতরের একটি আশ্রমও রয়েছে। নলকূপ নেই সেখানেও। ফলে সেখানকার আবাসিক পড়ুয়াদেরও জল আনতে হয় ঢোলাহাট বাজার থেকেই।
বেলুনিগ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, ঢোলাহাট-জুমাইলস্কর রোডে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাইপ লাইন রয়েছে। যদিও, বিদ্যুৎ না থাকলে জল মেলে না। |
গ্রামবাসী সফিয়া হালদার, সামিরন বিবিরা বলেন, “গরম পড়তেই জলের জন্য হাহাকার আরও বেড়ে গিয়েছে। অনেক পুকুরে জল নেই। ফলে ঢোলাহাট বাজারে গিয়ে জল আনা ছাড়া আমাদের কোনও উপায় নেই।” সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান হালদার, সহ-শিক্ষক সইদুল কয়াল বলেন, “এই এলাকায় অন্তত একটি নলকূপের দাবি জানিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে বিধায়ক, বিডিও সকলের কাছেই আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু সমস্যা সমাধানে কেউ উদ্যোগী হননি। পুকুরের নোংরা জল দিয়েই মিড-ডে-মিলের রান্না করতে বাধ্য হচ্ছি আমরা। প্রায় আধ ঘণ্টা হেঁটে রোজ-রোজ জল আনা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।” ঢোলাহাট পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান রাহিলা মীর বলেন, “বেশ কয়েকটি নলকূপ খারাপ হয়ে থাকায় সমস্যা বেড়েছে। নলকূপ বসানোর জন্য পঞ্চায়েত সমিতিকে বলা হয়েছে।” কুলপি বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার বলেন, “কুলপি পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে ওই গ্রামে নলকূপ বসানোর বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। আর্থিক সমস্যার কারণে এত দিন সেই ব্যবস্থা করা যায়নি।” কুলপির বিডিও মৌমিতা সাহা বলেন, “ওই এলাকায় নলকূপ নেই বলে জলের সমস্যা হচ্ছে এমন কোনও অভিযোগ এখনও আমার কাছে আসেনি। তবে, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে অবশ্যই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |