কাঁথি-কাণ্ডের সিআইডি তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাঁথি ও কলকাতা |
কাঁথির উত্তর কানাইদিঘি গ্রামে বাম-সমর্থক এক মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধর এবং তাঁর মেয়েকে ‘চরম সম্মানহানি’র হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্তদের শুক্রবার পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযুক্তেরা প্রধান শাসকদল তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক হওয়ার কারণেই পুলিশ তাঁদের ধরছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই আদালতের নজরদারিতে সিআইডি তদন্তের দাবি জানিয়ে শুক্রবারই কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থের মামলা দায়ের করেছেন অনিন্দ্যসুন্দর দাস নামে এক আইনজীবী। তাঁর পক্ষে আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় জানান, ওই ভদ্রমহিলা ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতেও আবেদন করা হয়েছে। এ দিন কাঁথিতে গিয়ে একই দাবি করেছেন সিপিআইয়ের মহিলা সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ মহিলা সমিতির এক প্রতিনিধিদল।
হাইকোর্টে দায়ের করা জনস্বার্থ মামলাটির আগামী শুক্রবার প্রধান বিচারপতি জে এন পটেলের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা। প্রসঙ্গত, বর্ধমানে সিপিএম নেতা প্রদীপ তা-কমল গায়েন হত্যাকাণ্ডেও জেলা পুলিশে অনাস্থা জানিয়ে হাইকোর্টের নজরদারিতে সিআইডি তদন্তের আবেদন করা হয়েছিল। হাইকোর্ট পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সে আবেদন মঞ্জুরও করেছিল। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ-প্রশাসন অবশ্য দাবি করেছে, অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা চলছে। ওই পরিবারের নিরাপত্তার দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। |
|
কানাইদিঘি-কাণ্ডের জেরে সিপিআইয়ের মহিলা সমিতি কাঁথি হাসপাতালে।—নিজস্ব চিত্র। |
পশ্চিমবঙ্গ মহিলা সমিতির ওই প্রতিনিধিদল এ দিন কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে এসে ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করে। উত্তর কানাইদিঘি গ্রামে গিয়ে তাঁর কিশোরী কন্যার সঙ্গেও কথা বলেন মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক শ্যামশ্রী দাস ও অন্যরা। পরে কাঁথির এসডিও এবং এসডিপিও-র কাছে অভিযুক্তদের গ্রেফতার এবং ওই মহিলা ও তাঁর পরিজনেদের নিরাপত্তার দাবিতে স্মারকলিপিও দেন মহিলা সমিতির প্রতিনিধিরা। এক জন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যে তাঁর দলেরই লোকজনের কাছে মহিলাদের বার বার লাঞ্ছিত হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শ্যামশ্রীদেবী। তাঁর বক্তব্য, “কানাইদিঘিতে যা ঘটেছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রথমে এক মহিলাকে সালিশি সভা বসিয়ে বিবস্ত্র করে মারধর করা হল। তার পর তাঁর মেয়েকেও চরম সর্বনাশের হুমকি দেওয়া হল। হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকেও ওই মহিলাকে এখনও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অথচ অভিযুক্তরা প্রধান শাসকদলের লোক হওয়ায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করার চেষ্টাই করছে না। এটা অত্যন্ত উদ্বেগে এবং লজ্জার।” এসডিও সুমিত গুপ্ত অবশ্য অভিযোগের যথাযথ তদন্ত হচ্ছে বলে শ্যামশ্রীদেবীদের আশ্বাস দেন। তিনি জানান, পরিবারটির নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ বসু জানান, ওই কিশোরীকে হুমকির বিষয় শোনার পরেই উত্তর কানাইদিঘি গ্রামে তাঁদের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু এখনও এক জন অভিযুক্তও কেন গ্রেফতার হল না? এসডিপিও-র বক্তব্য, “তল্লাশি চলছে। অভিযুক্তদের ধরার জন্য সব চেষ্টাই হচ্ছে।” |
|