সেই কবে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে ডাইনোসররা। কিন্তু তাদের বিলুপ্তির কারণ নিয়ে এখনও চলছে গবেষণা। তবে সম্প্রতি জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষকের দাবি, একটি গাণিতিক মডেলের সাহায্যে দেখানো সম্ভব হয়েছে যে ধূমকেতুর আঘাত বা খাদ্যের অভাব নয়, বরং তাদের ছোট আকারের ডিমের কারণেই প্রধানত ডাইনোসরেরা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। তাঁদের এই গবেষণা ব্রিটেন রয়্যাল সোসাইটির ‘বায়োলজি লেটারস’-এ প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষক দলের প্রধান মার্কাস ক্লস জানান, ওজনে ৩০ থেকে ৫০ টনের হলেও ডাইনোসরদের ডিমের ওজন হত মাত্র দু’ থেকে দশ কিলোগ্রাম। অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্ক ডাইনোসরদের থেকে প্রায় আড়াই হাজার ভাগ ছোট। এ দিকে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশু হাতির আকার মাত্র ২২ ভাগ ছোট। এর ফলে শিশু ডাইনোসরদের বড় হওয়ার জন্য অনেক বেশি পরিমাণ খাবারের দরকার পড়ত। ক্লসের দাবি, এই খাবার জোগাড় করতে গিয়ে যে সব প্রাণীর সঙ্গে তাদের লড়তে হত, আকারে ছোট হওয়ায় বেশির ভাগ সময়ই তা সম্ভব হত না। ফলে শিশু ডাইনোসররা লড়াইয়ে হেরে যেত। বিজ্ঞানীদের মতে, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল তাদের বাসস্থানের আশপাশের পরিবেশে বদলে যাওয়ার মতো ঘটনা। তাঁরা জানিয়েছেন, সাধারণত প্রতিকূল পরিবেশে আকারে ছোট প্রাণীরাই বেশি টিঁকে থাকে। কিন্তু ডাইনোসরদের কোনও প্রজাতির আকারই ছোট না হওয়ায় তারা এই সুবিধে নিতে পারেনি।
ক্লসদের গবেষণা অনুযায়ী, ঠিক এই কারণেই কোটি কোটি বছর ধরে বিভিন্ন রকম পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে এখনও টিঁকে রয়েছে স্তন্যপায়ীরা। কারণ, স্তন্যপায়ীদের মধ্যে যেমন বিভিন্ন আকারের প্রজাতি রয়েছে
ঠিক তেমনি জন্মের পরেই খাবারের জন্য তাদের অন্য কারও সঙ্গে
লড়াই করতে হয় না। ক্লস বলেন, “অন্যদের মতো অনেক দিন ধরেই আমার প্রশ্ন ছিল যে স্তন্যপায়ীরা টিঁকে থাকলেও ডাইনোসররা কেন বিলুপ্ত হয়ে গেল। এত দিনে বোধ হয় এই প্রশ্নের একটা ঠিকঠাক জবাব পাওয়া গেল। |