|
|
|
|
জমি-জটে থমকে গিয়েছে সাবস্টেশন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • করিমপুর |
জমি অধিগ্রহণ আইনের গেরোয় এ বার নদিয়ার কিশোরপুর।
বিদ্যুতের সাব-স্টেশন গড়তে ওই আইন বলেই কিশোরপুর গ্রামের ২৬ নম্বর মৌজায় ৭.৫ একর জমি অধিগ্রহণ করতে চলেছে সরকার, এমনই নোটিস জারি হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ ‘অনিচ্ছুক’ কৃষকদের বিরোধিতায় আপাতত তা প্রশ্নচিহ্নের মুখে। ফলে ১৩৩ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের সাব স্টেশন প্রকল্প কবে হবে কেউ জানে না।
প্রশাসন ও স্থানীয়সূত্রে জানা গিয়েছে করিমপুরের নন্দনপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কিশোরপুরে ওই জমিতে বিদ্যুতের সাব-স্টেশন গড়তে জমি অধিগ্রহণের ব্যাপারে ২০১০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কাগজে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এরপর ওই বছরেরই ৫ মার্চ ৪০ জন মালিককে নোটিসও পাঠানো হয়। তারপর থেকে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে জমি মালিকদের একাধিকবার বৈঠক হ’লেও সমাধানের কোন পথ বেরোয়নি।
কিশোরপুর এলাকার ২৬ নম্বর মৌজার ওই জমির সিংহভাগ ‘অনিচ্ছুক’ কৃষক তথা জমির মালিকেরা জেলাশাসক থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী, জমি অধিগ্রহণ না করার বিষয়ে আবেদন জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, একান্তই যদি সেটা সম্ভব না হয় তবে সরকারকে বর্তমান বাজার দরে জমির দাম ধার্য করতে হবে। সেই সঙ্গে দাবি রয়েছে পরিবার পিছু চাকরিরও।
জমির মালিক তথা ‘অনিচ্ছুক’ কৃষক অনিল সাহা, ধরণীধর কুন্ডুরা বলেন, ‘‘সরকার আমাদের যে জমি অধিগ্রহণ করতে চলেছে সেই জমিগুলোতে বছরে তিন থেকে চারটে ফসল হয়। সরকারের সেচ দফতরের গভীর নলকূপের জল থেকেই ওই জমির বেশিরভাগ অংশেই কলা চাষ করা হয়। সব খরচ খরচা বাদ দিয়ে এক বিঘা জমিতে কলাচাষ করে বছরে গড়ে প্রায় ৪০- ৫০ হাজার টাকা লাভ হয়। তাই পাট নয়, কলাকেই এই এলাকার অন্যতম অর্থকরী ফসল বলে ধরা হয়। এইমূহূর্তে সরকার ওই জমির জন্য আমাদের যে দাম দিচ্ছে সেটা বর্তমান বাজারদরের তুলনায় অতি সামান্য। সরকার এক বিঘা জমির দাম দিচ্ছে মাত্র ১ লক্ষ ১২ হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমানে এই এলাকায় বিঘা প্রতি জমির দাম প্রায় ৫ লক্ষ টাকা।”
নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি সংস্কার) দেবাশিস সরকার বলেন, “১৮৯৪- এর জমি অধিগ্রহন আইন মেনেই ওখানে যা করার করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ওই এলাকার প্রায় ৪০ জনের মধ্যে প্রায় ৮ জন কৃষক চেকও নিয়ে নিয়েছেন। বাকিরা নেননি। এই বিষয়টি নিয়ে ওদের সঙ্গে বেশ কয়েকবার বৈঠকও করা হয়েছে কিন্তু সরকারি আইনের বাইরে গিয়ে বাড়তি টাকা বা চাকরি দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’’
তেহট্টের বিধায়ক সিপিএমের রনজিত মণ্ডল বলেন, ‘‘কিশোরপুর এলাকায় জমি অধিগ্রহনের বিষয়ে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। সরকার যে দামে জমি নিতে চাইছে সেটা বর্তমান বাজার দরের তুলনায় অতি সামান্য।’’ করিমপুর ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রকাশ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষকদেরও স্বার্থটাও দেখা হচ্ছে। আশা করি আমাদের সরকার কৃষকদের দাবি বিবেচনা করবেন জোর করে তো আর জমি অধিগ্রহন করা হচ্ছে না প্রশাসনের কর্তারাও এই বিষয়ে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেছেন। আশা করা যায় ঠিক এর একটা সমাধান সূত্র বেরোবে।’’ |
|
|
|
|
|