ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন এক যুবতী ও তাঁর পরিবার। ‘সুবিচার’ চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। ‘ধর্ষণের’ পরে একটি শিশুকন্যার জন্ম দিয়েছিলেন বছর কুড়ির ওই যুবতী। মারা গিয়েছে কয়েক দিনের শিশুটি। মৃত সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করিয়েছে পুলিশ। তবু অভিযুক্ত ধরা পড়েনি।
ঘটনাটি হাওড়ার পাঁচলার জুজারসাহা পঞ্চায়েত এলাকার। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “তদন্তের স্বার্থে ওই যুবতীর মৃত শিশুকন্যার ডিএনএ পরীক্ষা করিয়ে রাখা হয়েছে। অভিযুক্ত ধরা পড়লেই তাঁর এবং ওই যুবতীর ডিএনএ পরীক্ষা করানো হবে। পরে তা মৃত শিশুর রিপোর্টের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে।” অভিযুক্তকে ধরার ‘সর্বাত্মক উদ্যোগ’ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মাস কয়েক আগে বছর কুড়ির ওই যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে নকুল ভোঁড় নামে এক বিবাহিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে। মেয়েটির দাবি, বছর আটচল্লিশের ওই ব্যক্তি তাঁকে ‘ভয় দেখানোয়’ ঘটনার কথা কাউকে বলেননি। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ায় ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়।
তরুণীর বাবার অভিযোগ, “গ্রামের সালিশিতে প্রধান বলেছিলেন, আগে সন্তান প্রসব হোক। তারপর পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ এই ‘নিদান’ তিনি মানতে চাননি বলে দাবি যুবতীর বাবার। তিনি নকুলবাবুর নামে গত ২ মার্চ পাঁচলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। প্রধান কালীপদ হাজরা অবশ্য বলেন, “আমিও ওঁদের আইনের রাস্তায় যাওয়ারই পরামর্শ দিয়েছিলাম।”
যুবতীর পারিবারিক সূত্রের খবর, পুলিশ একাধিকবার এসে মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। হাওড়া সিজেএম আদালতে বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দিও দেন ওই যুবতী। গত ৫ এপ্রিল বাড়িতেই একটি শিশুকন্যার জন্ম দেন ওই যুবতী।
অসুস্থ অবস্থায় গত ৭ এপ্রিল উলুবেড়িয়া হাসপাতালে মারা যায় শিশুটি। যুবতীর বাবার দাবি মেনে মৃত শিশুর ডিএনএ পরীক্ষা করায় পুলিশ।
যুবতীর বাবার অভিযোগ, “প্রতিদিন থানায় যাচ্ছি। পুলিশ বলছে, কয়েক দিনের মধ্যেই অভিযুক্ত ধরা পড়বে। সে যদি ধরাই না পড়ে, তা হলে ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট দিয়ে আর কী হবে?” |