তিন দশকে বামফ্রন্ট যা পারেনি, চার বছরের মধ্যে সেই সিঙিমারি সেতু তৈরি কাজ সম্পূর্ণ করে দেখানোর চ্যালেঞ্জ দিলেন রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। মঙ্গলবার দিনহাটা-সিতাই সরাসরি যোগাযোগে সিঙিমারি নদীর ওপরে প্রায় এক কিমি দীর্ঘ সেতুর কাজের সূচনা করেন মন্ত্রী। দিনহাটার গোসানিমারি এলাকায় সিঙিমারি নদীর পাড়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, “বাম সরকারের পূর্তমন্ত্রী একটা শিলা পুঁতে চলে যান। গত বছর সেতুর কাজ শুরু হলে অনেক টাকা কম খরচ হত। চার বছরের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আমরা বলেছি আরও কিছুটা কম সময়ে হলে ভাল। মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা আগে কমবে। উদ্বোধনের দিন বাম নেতাদের আমন্ত্রণ জানাব। কী ভাবে কাজ করতে হয় তা ওঁদের দেখা দরকার।” পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, দিনহাটা ও সিতাইয়ের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের মাঝে সিঙিমারি নদী বড় বাঁধা হয়ে রয়েছে। এতে সিতাইয়ের বাসিন্দারের মহকুমা সদর দিনহাটায় সরাসরি যেতে দূরত্ব পড়ে প্রায় ১০০ কিমি। ওই সেতু হলে তা কমে দাঁড়াবে প্রায় ২০ কিমি। সিঙিমারি নদীর আদাবাড়িঘাট এলাকায় ওই সেতুর কাজ শুরুর কথা ছিল। ২০০৯ সালে তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী কাজের শিলান্যাস করেন। ৬৮ কোটি টাকার টেন্ডার ডাকা হয়। কিন্তু কাজ শুরু হয়নি। নতুন সরকার আসার পর সমীক্ষায় দেখা যায় নদীর পাড় ভেঙে এলাকা বেড়ে যাওয়ায় সাগরদিঘিঘাট থেকে সেতু গড়তে হবে। এতে সেতুর দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৫০ মিটার বাড়বে। খরচ হবে ১০৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে প্রায় আড়াই কোটি টাকা অ্যাপ্রোচ রোডের জমি অধিগ্রহণে খরচ হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যে ৬৮ কোটি টাকা পূর্ত দফতর বরাদ্দ করেছে। বাকি ৩৭ কোটি টাকা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ থেকে দেওয়া হবে। এদিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী কোচবিহারে মাদ্রাসা কলেজ, সিতাইয়ে নয়া কলেজ, কোচবিহার বিশ্ববিদ্যালয়, তুফানগঞ্জে হেরিটেজ রোড তৈরি ছাড়াও তুফানগঞ্জ মানসিক হাসপাতালের-সহ নানা উন্নয়নের পরিকল্পনার কথা জানান। তবে সবই পঞ্চায়েত ভোটকে মাথায় রেখে করা হচ্ছে বলে ফরওয়ার্ড ব্লকের তরফে এদিন অভিযোগ করা হয়েছে। দলের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “সাংসদ নৃপেন রায়কে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আর আমাদের বাদ দিয়ে জমি অধিগ্রহণ হবে না। আমরা অবশ্যই পাশে দাঁড়াব। বাম আমলেই এই সেতুর অনুমোদন হয়েছে। সব পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে কাজ করা হচ্ছে।” সেতুর কাজের সূচনা অনুষ্ঠানে রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “বামফ্রন্ট ৩৪ বছর যা পারেনি তা ৫ বছরে তা হবে। ক্ষিতিবাবুর সেতুটির শিল্যান্যাসের দিন আমিও ছিলাম। কাজ কিছুই হয়নি।’’ অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, সিতাইয়ের কংগ্রেস বিধায়ক কেশব রায় বক্তব্য রাখেন। এদিন বিকেলে নিশিগঞ্জ কলেজের নতুন ভবন তৈরির কাজেরও সূচনা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “কলেজের ভবন তৈরির জন্য ৬ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি হয়েছে।” |