বিশপ হাউস
দার্জিলিঙের ঐতিহ্যবাহী এই সুন্দর বাড়িটি গড়ে ওঠার পেছনে রয়েছে এক চমকপ্রদ ইতিহাস। শৈলশহরের সঙ্গে এই বাড়ির আছে শতাব্দীর সখ্যতা। পটনা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আর জে লগম্যান দার্জিলিঙে এসে ভগ্নস্বাস্থ্য ফিরে পেয়েছিলেন। শৈলশহরের স্বাস্থ্যকর জলবায়ুর প্রশংসা করে লগম্যান কলকাতার আর্চবিশপ ক্যারু-এর কাছে একটি চিঠি পাঠান। সে সময় এ দেশের গ্রীষ্মপ্রধান আবহাওয়ায় খ্রিস্টান মিশনারিদের কাজ করতে অসুবিধে হত। দার্জিলিঙের আরামদায়ক আবহাওয়ায় একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি হলে যাজকরা সেখানে থাকতে পারবেন। এই উদ্দেশ্যে ক্যারু একটি কমিটি তৈরি করতে উদ্যোগী হন। কমিটিতে ছিলেন উইলিয়ম মোরান, আর জে লগম্যান এবং ক্যাপ্টেন স্যামলার। এঁরা কনভেন্ট স্কুলের জন্য একটি জমি নির্বাচিত করলেন এবং তিনটে প্লট কিনলেন। প্রথম জায়গাটির নাম সানি ব্যাঙ্ক। বর্তমান নাম সেন্ট রবার্টস হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল এবং বিশপ হাউস কমপ্লেক্স। দ্বিতীয়টি লরেটো কনভেন্ট এবং তৃতীয়টি লরেটো বাগান।
১৮৭০-থেকে মিশনারিরা সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে দার্জিলিং ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ধর্মপ্রচার ও জনহিতকর কাজ করতে শুরু করেন। ১৮৭০-এ তৈরি হল বিশপ হাউস। ধীরে ধীরে তা হয়ে উঠল ধর্মপ্রচারকদের বাসস্থান। প্রোটেস্টান্টদের থেকে এটাকে আলাদা করার জন্য নাম দেওয়া হল আর্চবিশপ হাউস। কলকাতার আর্চবিশপের গ্রীষ্মাবকাশ হিসেবেও এটি পরিচিত ছিল। দার্জিলিং এবং সিকিমের সমস্ত জেলা দার্জিলিং ডায়োসেস-এর আওতায় এল। হেড কোয়ার্টার হল বিশপ হাউস। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সামাজিক ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান পরিচালনার পাশাপাশি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও পরিচালিত হত এখান থেকেই। ১৯৬২-তে দার্জিলিং ডায়োসেস তৈরি হওয়ার পর কলকাতার আর্চবিশপ এই বাড়ি প্রথম বিশপকে হস্তান্তরিত করেন।

ঝাপড়িপুজো
দিনাজপুরের লোকসংস্কৃতিতে ঝাপড়ি পুজো বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এখানে দেবী দুর্গা কুমারী রূপে পূজিত হন। অনেকের মতে, বসন্তকালে শীতলা হিসেবে পূজিত এই দেবীর নাম ঝাপড়ি। মূলত কলাগাছকেই এখানে দেবী রূপে পুজো করা হয়। ফাল্গুন মাসের সংক্রান্তি থেকে চৈত্র মাসের সংক্রান্তি টানা এক মাস ঝাপড়ি পুজো হয়। পুজোর পেছনে রয়েছে অন্য আর এক উদ্দেশ্য। এই পুজো করলে নাকি ত্বকের নানা রোগ থেকে রেহাই মেলে।
গ্রামে গৃহস্থের বাড়ির উঠোনে পুজোর আয়োজন করা হয়। পুজোর স্থানটিতে চালুন বাতি, ঘট বসানো হয়। এক মাস ধরে সন্ধেবেলা পুজো করতে হয়। এক বার পুজো শুরু করলে অন্তত তিন বার করতেই হবে। মূলত মেয়েরাই এই পুজো করে থাকেন। প্রথম তিন দিন মাটির ঢিল ও বাঁশপাতা দিয়ে পুজো করা হয়। কোনও ফুল দেওয়া হয় না। উপস্থিত প্রত্যেকে ঢিল ছোঁড়েন। পরের দিনগুলোতে ফুল ও বাঁশপাতা দিয়ে পুজো হয়।
গানের মাধ্যমে ঝাপড়ি মায়ের আরাধনা করা হয়। ঝাপড়ির লোকগান বাংলা তথা দিনাজপুরের মানুষের কাছে এক বড় সম্পদ। গ্রামবাংলার মানুষের জীবন-সংস্কৃতি জড়িয়ে আছে এই লোকগানের মধ্যে। সন্ধেবেলা উঠোনে পুজোর পর ফুল ছিটিয়ে পুজো সমাপ্ত হয়। প্রসাদ হিসেবে ফল, মিষ্টি থাকে। শেষের দিন খিচুড়ি প্রসাদ দেওয়া হয়। চৈত্র সংক্রান্তির পরের দিন নদীতে ঝাপড়ি মাকে ভাসান দেওয়া হয়। আবার অপেক্ষা সামনের বছরের জন্য।

আপনি কোনদিকে
হিটলার যখন জার্মানির সর্বেসর্বা হয়ে উঠলেন, তখন বুদ্ধিজীবী, বিজ্ঞানী ও অন্যান্য নানা পেশায় যুক্ত মানুষরা জার্মানি ছেড়ে চলে যেতে শুরু করলেন। গেলেন না বার্লিন ফিলহারমনিক অর্কেস্ট্রার প্রধান পরিচালক ভিলহেলম ফুর্টভেঙ্গলার। তাঁর সঙ্গীত প্রতিভা ছিল অনন্য। তাই তিনি নাৎসি বাহিনীর সদস্যপদ গ্রহণ না করলেও তাঁকে যথাযোগ্য মর্যাদা, বিলাসব্যসন এবং যাবতীয় সুযোগ সুবিধে সহ বহাল তবিয়তে রাখা হয়। তাঁর বিভিন্ন সুপারিশ এমনকী ইহুদিদের জার্মানি ছেড়ে চলে যাওয়ার অনুরোধও অনায়াসে গৃহীত হতে থাকে। তবে বিনিময়ে ইচ্ছে না থাকলেও তাঁকে নাৎসি বাহিনীর বিভিন্ন সমাবেশে সঙ্গীত পরিচালনা করতে হত। আসলে তিনি বিশ্বাস করতেন যে, শিল্প এবং রাজনীতি দুটো আলাদা বিষয়। বিশ্বাস করতেন সঙ্গীতকে রাজনীতি কখনই গ্রাস করতে পারে না। তাই দেশে থেকে গিয়েছিলেন। গোল বাঁধল, যখন হিটলারের পতন হল।
মিত্রশক্তি ভিলহেলম-এর ব্যাপারে তদন্ত করে। দায়িত্ব বর্তায় মেজর আর্নল্ডের ওপর। তিনি ফুর্টভেঙ্গলারকে দোষী সাব্যস্ত করার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে ব্যর্থ হন। ভিলহেলম আবার ফিরে পান ফিলহারমনিক অর্কেস্ট্রার প্রধান পরিচালকের দায়িত্ব। এই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে কলকাতার প্রখ্যাত নাট্য সংস্থা ‘চেতনা’ বালুরঘাট নাট্যতীর্থের মন্মথ মঞ্চে মঞ্চস্থ করল তাদের নবতম প্রযোজনা ‘আপনি কোনদিকে’। রোনাল্ড হারউড-এর নাটক ‘টেকিং সাইডস’-এর অনুবাদ করেন নাট্য ব্যক্তিত্ব অরুণ মুখোপাধ্যায়। সাম্প্রতিক রাজনীতির প্রেক্ষাপট, বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা এবং বিভাজিত আদর্শের চিত্রসহ চেতনার প্রযোজনাটি বর্তমান সময়ের এক উল্লেখযোগ্য দলিল।

কলুর বলদ
যন্ত্র কেড়েছে হাতের কাজ। তাই হোঁচট খাচ্ছে জীবনের ছন্দ। বাপ-জেঠারা চোখ বাঁধা বলদ ঘুরিয়ে জমিজিরেত বানিয়েছিল। সে সব আজ রূপকথার গল্পের মতো। তবু পিতৃপুরুষের পেশাকে ছাড়তে পারেন না অনেকে। সে জন্যই ঘানিতে তেল তৈরি করে ছোটেন হাটে-বাজারে। খুঁজে বেড়ান সনাতন জীবন ছন্দকে। এমন কত কুটির শিল্প গ্রামবাংলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। যন্ত্র-বিচ্ছেদ এ যুগে অসম্ভব। তবু যন্ত্র-দানব যখন এই সব মানুষের জীবন-কাঠি অপহরণ করে তাঁকে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয় তখন তাঁদের কথা একটু ভাবা দরকার।

উত্তরের কড়চা বিভাগে ছবি ও লেখা দিলে
পুরো নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করবেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.