রইল বাকি এক!
ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে সেখানকার ন’জন ডিরেক্টরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে শ্রবণ তোদি ছাড়া সকলেই জামিন পেয়ে গেলেন। মঙ্গলবার আলিপুর আদালত ওই হাসপাতালের অন্যতম ডিরেক্টর দয়ানন্দ অগ্রবালকে জামিন দিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে শ্রবণ তোদির জামিনের আবেদনের শুনানি ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে। আজ, বুধবার ওই মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে।
|
দয়ানন্দ অগ্রবাল |
অগ্নিকাণ্ডের মামলায় আমরির মোট ১৫ জন ডিরেক্টরের মধ্যে ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে কলকাতা পুলিশ। রাজ্য সরকারের তিন প্রতিনিধির বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করা হয়নি। যে-সব ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে প্রীতি সুরেখা, আদিত্যবর্ধন অগ্রবাল ও রাহুল তোদি এখনও ফেরার। ন’জন ডিরেক্টর ছাড়াও আমরির অন্য চার কর্তাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁদের মধ্যে দু’জন সত্যব্রত উপাধ্যায় এবং পৃথা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন। এ দিন জামিন পেলেন আমরি হাসপাতালের মেনটেন্যান্স ম্যানেজার সঞ্জীব পাল। ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে আমরির অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। বিপর্যয়ের রাতে আমরির অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ের নাইট-ইনচার্জ ছিলেন সাজিদ হোসেন। তিনিও জেলে আছেন। তাঁর জামিনের জন্য কোনও আবেদন আদালতে জমা পড়েনি।
এ দিন সরকারি আইনজীবীরা আলিপুর আদালতে দয়ানন্দ অগ্রবাল ও সঞ্জীব পালের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেন। সরকারি আইনজীবী শক্তি ভট্টাচার্য বলেন, দয়ানন্দ পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। তাঁর কাজ হিসেবপত্র দেখা। খরচ বাঁচানো। হাসপাতালের বেসমেন্টে ওষুধের দোকান খুলে এবং দাহ্য পদার্থ জড়ো করে সেখানকার পরিবেশ যে পাল্টে ফেলা হয়েছে, তা কারও অজানা ছিল না। স্রেফ খরচ বাঁচাতে গিয়ে এত জনের প্রাণহানি ঘটে গেল। আমরির মেনটেন্যান্স ম্যানেজার সঞ্জীব পালের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে শক্তিবাবু বলেন, “বেসমেন্ট পরিষ্কার করা হবে বলে অভিযুক্ত ব্যক্তি একটি হলফনামা পেশ করে দমকলকে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু সে-কথা রাখা হয়নি।”
দয়ানন্দের আইনজীবী প্রতাপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই মামলায় পুলিশ ইতিমধ্যে চার্জশিট দিয়েছে। আমার মক্কেলকে তার প্রতিলিপি ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দাঁড়ায় না। তিনি এক জন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। প্রতিষ্ঠানের হিসেবপত্র দেখাই তাঁর কাজ। এই মামলায় অন্য ডিরেক্টরেরা জামিন পেয়েছেন। সুতরাং আমার মক্কেলকে জামিন দিতে অসুবিধা কোথায়?” সঞ্জীববাবুর আইনজীবী সুদীপ্ত মৈত্র এবং সেলিম রহমানও বলেন, “আমাদের মক্কেল ওই প্রতিষ্ঠানের বেতনভুক কর্মী মাত্র। তাঁর উপরের কর্তাদের জামিন হয়ে গিয়েছে। সুতরাং তাঁকে আর অহেতুক আটকে রেখে কী লাভ। তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।” দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে জেলা ও দায়রা জজের আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সুদেব মিত্র শর্ত সাপেক্ষে দু’জনের জামিন মঞ্জুর করেন। |