ভুলের থেকে শিক্ষা নিয়েই এগোচ্ছি,
নয়া বাংলা গড়তে পাশে চাই সকলকে
তিনি ভগবান নন, রক্তমাংসের মানুষ। তাই পথ চলতে গিয়ে ভুলভ্রান্তি হবে না, এমন অহঙ্কার তাঁর নেই। এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়েই মানুষ শিক্ষালাভ করে। একেই তো বলে ‘ট্রায়াল অ্যান্ড এরর’ মেথড। তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে মাত্র দশ মাস। সিপিএম ৩৪ বছর ক্ষমতায় থেকে এই ব্যবস্থাতেই ঘুণ ধরিয়ে দিয়েছে।” মমতার কথায়, “আমি আজও নিজেকে মুখ্যমন্ত্রী বলে ভাবতে পারি না। সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি বলেই মনে করি। সাধারণ মানুষের স্বার্থরক্ষার জন্য আমি গত দশ মাস ধরে চেষ্টা করছি। গত দশ মাসে এমন অনেক কাজ হয়েছে, যা ৩৪ বছরেও হয়নি। সংবাদমাধ্যমের সাহায্যে আমি রাজ্যের ধনী-গরিব সর্ব ধর্মের, সর্ব স্তরের মানুষের কাছে এই আবেদন জানাই: আসুন সব ভেদাভেদ ভুলে এক নতুন বাংলা গড়ি। আপনাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।”


মমতা: ‘হাইপার’ হলে এত বছর ধরে সিপিএমের মতো একটা দলকে গদিচ্যুত করার দীর্ঘ লড়াই লড়ার ধৈর্য থাকত না। এমনও তো হয়েছিল, যখন তৃণমূলের সংসদ সদস্য একা আমি। সেই জায়গা থেকে তৃণমূল পরিবার আজ অনেক বড় হয়েছে। লোকসভায়, রাজ্যসভায় কত সদস্য। তবে এটা ঠিক, তিল তিল করে তৈরি করা এই সংগঠনকে যদি কেউ ষড়যন্ত্র করে ধ্বংস করতে উদ্যত হয়, তখন আমার রাগ হয়।

আমার রাজ্যে যাতে এক জন মানুষেরও কোনও
কষ্ট না হয়, তার জন্য আমি প্রতি মুহূর্তে ভাবি।


মমতা: অন্যরা কে কী করেন জানি না। আমি দায়িত্বজ্ঞানহীন মুখ্যমন্ত্রী হতে চাই না। হয়তো আমার চামড়াটা এখনও গন্ডারের মতো হয়নি। কোনও ধর্ষণ, অগ্নিকাণ্ড, এমনকী পথ দুর্ঘটনা হলেও আমার খারাপ লাগে। আমার রাজ্যে যাতে এক জন মানুষেরও কোনও কষ্ট না হয়, তার জন্য আমি প্রতি মুহূর্তে ভাবি। এক জন বাবা যদি তাঁর বাচ্চাকে পড়ার বই কিনে দিতে না-পারেন, কোনও মা যদি তাঁর মেয়ের বিয়ে দিতে না-পারেন, তা হলেও আমি কাতর হয়ে পড়ি। কী করব?


মমতা: আমি তা মনে করি না। আমরা যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না, তা তো নয়। সমস্যা অনেক। কিন্তু মহাকরণে মন্ত্রী, অফিসারদের ডেকে সিদ্ধান্ত তো নিচ্ছি। কত গ্রামীণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। শহরে কত কাজ হচ্ছে, সে সব খবর আপনারা রাখেন?


মমতা: এই পরিস্থিতিটা এক দিনে তৈরি হয়নি। শিল্প ও কৃষির মধ্যে কোনও সংঘাত নেই। যদিও সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের ঘটনায় এই রকম একটা আবহ তৈরি হয়েছিল। তাই আমি সাবধানে পা ফেলে এগোচ্ছি। ক্ষমতায় এসে আগে কৃষকদের সেই নিরাপত্তার অভাব দূর করতে চেয়েছি। তার মানে এই নয় যে, রাজ্যে ভারী শিল্প হবে না। তার মানে এই নয় যে, বিনিয়োগ চাই না। অপেক্ষা করুন। আমরা ধীর পদক্ষেপে ভারসাম্য রক্ষা করে এগোচ্ছি। হুড়মুড়িয়ে কিছু করতে চাই না। ভারী শিল্প করার পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই। সে ব্যাপারে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা চাই। সংবাদমাধ্যমের সাহায্যে সেই বার্তাই আমি পৌঁছে দিতে চাই সকলের কাছে।


মমতা: আমি সংবাদপত্রের পূর্ণ স্বাধীনতার পক্ষে। সংবাদপত্র গণতন্ত্রের সব চেয়ে বড় স্তম্ভ। সেটা আমার চেয়ে বেশি কে জানে? পশ্চিমবঙ্গে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় কোনও হস্তক্ষেপ হবে না। এ বিষয়ে এর চেয়ে বেশি আর কিছু বলতে চাই না।


মমতা: এই ব্যবসার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ারে। চিটফান্ড ব্যবসায়ীরা যদি বেআইনি কাজকর্ম করেন, তবে কেন্দ্র যথোচিত ব্যবস্থা নেবে। এতে আমার কোনও বক্তব্য নেই। যদি এই ব্যবসার ব্যাপারে কেন্দ্র রাজ্যকে কোনও পরামর্শ দেয়, তবে তা বিবেচনা করব। আর এই চিটফান্ড আজ শুরু হয়নি। কেন্দ্রে কংগ্রেস ও পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম যখন ছিল, তখনই শুরু হয়েছে। এটা একটা বেসরকারি ব্যবসা, যার সঙ্গে তৃণমূল বা রাজ্য সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই।


মমতা: কেন যাব? আমি কংগ্রেস বা ইউপিএ-র সঙ্গে যেচে কোনও রকম সংঘাতে যেতে চাই না। আমি ওদের সমর্থন জানিয়েছি এবং কখনওই বিশ্বাসঘাতকতা করব না। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থরক্ষার জন্য লড়াই আমাকে চালিয়ে যেতেই হবে। আর তার সবটাই মা-মাটি-মানুষের স্বার্থে।


মমতা: আদৌ নয়। এটা ঠিক যে মা-মাটি-মানুষের স্বার্থরক্ষা আমার অগ্রাধিকার। কিন্তু ধনীরাও তো সমাজের অঙ্গ। ধনীদের বিনাশ করার কথা তো কমিউনিস্টরা বলেন। আমি বরাবরই বহুত্ববাদের পক্ষে। সেটাই গণতন্ত্র। যখন রেলমন্ত্রী ছিলাম তখন এবং আজও শিল্পপতি এবং সমাজের বিশিষ্ট শ্রেণি আমাকে একই ভাবে সমর্থন করছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.