পাট্টা পাওয়া জমির দখল ফেরত পেতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন এক দিনমজুর দম্পতি। পুরুলিয়ার সাঁতুড়ি গ্রামের ওই দম্পতির অভিযোগ, এর আগে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর থেকে শুরু করে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেও জমির দখল পায়নি। রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক আবিদ হোসেনের আশ্বাস, “ওই দম্পতিকে জমির দখল দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১০ সালের ডিসেম্বরে সাঁতুড়ি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র লাগোয়া সাঁতুড়ি মৌজার ১৫ ডেসিমেল জমি পাট্টা পান নিমাই বাউরি ও সাবিত্রী বাউরি। দিনমজুর ওই দম্পতির অভিযোগ, তাঁদের জমি দখল করে নিচ্ছেন এলাকারই কয়েক জন। নিমাইবাবু জানান, পাট্টা পাওয়ার পরে জমিতে সব্জিচাষ করা ও বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। কিন্তু টাকার জোগাড় না হওয়ায় জমি ফাঁকা রেখেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, “স্থানীয় কিছু লোক ওই জমির পাশে অবৈধ ভাবে ঘর নির্মাণ শুরু করেছে। আমাদের জমিও ধীরে ধীরে দখল করা শুরু করেছে।”
ওই দম্পতির আরও দাবি, জমি দখলের অভিযোগ তাঁরা একাধিকবার পুলিশ, বিডিও থেকে প্রশাসনের নানা স্তরে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু, সমস্যার সমাধান হয়নি। সাঁতুড়ি ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার পরে দফতরের কর্মীদের জমি পরিদর্শনে ও মাপের জন্য পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, জমি দখল করায় অভিযুক্তদের বিরোধিতায় কর্মীরা কাজ করতেই পারেননি। ব্লক ভূমি আধিকারিক (বিএলএলআরও) শিবাজী মুখোপাধ্যায় বলেন, “জমির মাপ করে পাট্টা প্রাপকদের জমি বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা কর্মীরা করেছিলেন। কিন্তু, ওই কাজ করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা জনিত সমস্যা তৈরি হওয়ায় তা সম্পন্ন করা যায়নি। পুরো ঘটনা ও তদন্তের রিপোর্ট জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।”
এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে পুলিশের কাছে অভিযোগ করার ক্ষমতা ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের না থাকায় অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানানো হয়নি বলেও জানিয়েছেন শিবাজীবাবু।
তবে, মহকুমাশাসক জানান, ওই দম্পতির অভিযোগ পাওয়ার পরেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে পাট্টা প্রাপকদের জমির দখল দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “পাট্টা প্রাপকরা জমি ফাঁকা ফেলে রেখে ভুল কাজ করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগ পাওয়ার পরেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রয়োজনে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বিএলএলআরও সম্যসাটি মিটিয়ে দেবেন বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” |