|
|
|
|
গ্রেফতার ৬ ডাকাত |
গাজন-সন্ন্যাসীর দলে মিশেও শেষরক্ষায় ব্যর্থ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
বুদ্ধিটা খারাপ ছিল না। ডাকাতি করে পালানোর সময় গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে গাজনের দলে মিশে গিয়েছিল সশস্ত্র এক দুষ্কৃতীদল। রাতের অন্ধকারে গ্রামবাসীদের চোখে ধুলো দিতে পারলেও শেষরক্ষা অবশ্য করতে পারেনি তারা। পুলিশের গাড়ি আসতে দেখে গাজন-দল থেকে বেরিয়ে পড়ে নিজেরাই। নির্বোধের মতো পালাতে গিয়ে বেধড়ক মার খায় গ্রামবাসীর হাতে। সোমবার ভোর রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থানার সাবলআড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় একটি পেট্রোল পাম্পে ডাকাতির অভিযোগে ওই দলের ৬ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। লুঠ হওয়া জিনিসপত্র-সহ একটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। দলের মূল পাণ্ডা নূর মহম্মদের বাড়ি কোলাঘাটের রাক্সাচক গ্রামে। এ ছাড়াও ধৃতদের মধ্যে রয়েছে কোলাঘাটের শান্তিপুর গ্রামের শেখ সাবির, তমলুকের টাউন শঙ্করআড়ার সোমনাথ দাস, মীরবস্তির মীর সাজ্জাদ, নন্দকুমারের কাঞ্চনপুর গ্রামের শুভজিৎ সামন্ত ও খেজুরির হলুদবাড়ি গ্রামের গৌতম দাস।
রামতারক ও রাধামণি বাজারের মাঝে হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি পেট্রোলপাম্পে রবিবার রাত আড়াইটে নাগাদ ছোট লরিতে চেপে জনাদশেক দুষ্কৃতী হানা দেয়। পেট্রোল পাম্পের অফিসের দরজা ভেঙে ঢুকে ম্যানেজার অজয় রায়কে মারধর করে তারা। ভল্ট ভাঙতে না-পারলেও ক্যাশবাক্সে রাখা হাজার পনেরো টাকা লুঠ করে। সেই সময় পাম্পেরই এক কর্মী থানায় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ফোন করে বিষয়টি জানিয়ে দেন। খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা ছুটে এলে ডাকাতদল ধানখেতের ভিতর গিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ দিকে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা তাদের গাড়ি ও চালককে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। তখন দলের অধিকাংশ ডাকাত পাশের সাবলআড়া গ্রামের শিবমন্দিরের কাছে এসে চৈত্র গাজনের সন্ন্যাসীদের দলে ভিড়ে যায়। খুঁজকে খুঁজতে সেখানে এসে পড়েন গ্রামবাসীরাও। সন্ন্যাসীদের তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করলেও ওই দলেই যে ডাকাতেরা মিশে রয়েছেন, ধরতে পারেননি। এ দিকে, খবর পেয়ে তমলুক থানার পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়। এতক্ষণ নিজেদের লুকিয়ে রাখতে পারলেও আর ঘাপটি মেরে বসে থাকতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। ধরা পড়ার ভয়ে সন্ন্যাসীদের দল থেকে বেরিয়ে পালানোর চেষ্টা করে তারা। চিনতে পেরে ফের পিছু তাড়া করেন গ্রামবাসীরা। ৫ জনকে ধরে বেধড়ক মারধরও করেন। পুলিশ এসে ওই পাঁচ দুষ্কৃতী ও তাদের গাড়ির চালককে গ্রেফতার করে। উদয়চক গ্রামের বাসিন্দা তথা স্থানীয় বল্লুক ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শরৎ মেটিয়া বলেন, “পুলিশ দেখে তাড়াহুড়ো করে পালাতে গিয়ে নিজেদেরই ধরিয়ে দিল দুষ্কৃতীরা।” পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, মীর সাজ্জাদের গাড়ি নিয়ে রাতের বেলা মেচেদা থেকে তারা এক সঙ্গে রওনা দিয়েছিল। প্রথমে রাধামণিতে টেলিফোনের কেবল তার কেটে গাড়িতে তোলে। তারপর রামতারকে রাস্তার কাজে ব্যবহৃত বেশ কিছু ইস্পাতের পাত নেয়। সবশেষে রাত আড়াইটে নাগাদ পেট্রোল পাম্পে হানা দেয়। তমলুকের ওসি অরুণ খান জানান, ধৃতদের গাড়িতে টেলিফোনের তার, ইস্পাতের পাত পাওয়া গিয়েছে। |
|
|
|
|
|