নিয়মরক্ষা নাকি সম্মানরক্ষা!
লিগ দৌড় থেকে ছিটকে গিয়ে আপাতত মোহনবাগানের আই লিগ অভিযানের প্রেরণা এখন জার্সির সম্মান রক্ষা। যা আগে শোনা গিয়েছিল রহিম নবির মুখে। যা সোমবার শোনা গেল অসীম বিশ্বাস-ব্যারেটোর মুখে।
আই লিগে মোহনবাগানের বাকি আর তিনটে ম্যাচ। ২৩ ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট ঝুলিতে ভরে পাঁচ নম্বরে আটকে সুব্রত ভট্টাচার্যর দল। এখন চেষ্টা কত’টা উপরে শেষ করা যায়। গত বার পাঁচে শেষ করেছিল সুভাষ ভৌমিকের মোহনবাগান। এ বার সুব্রত-র দল প্রথম চারে থাকবে জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না।
আইএফএ শিল্ড পরবর্তী সময়ে পরপর তিন ড্র-য়ে উৎসাহী সমর্থকরাও ম্যাচের আগের দিন ঘরে আটকে। মোহনবাগান মাঠে নজরে পড়লেন হাতে গোনা কয়েক জন। যাঁদের আলোচনার বেশির ভাগটাই ছিল দলবদল নিয়ে। বাকি কথাবার্তা ছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কী করে পুণের বিজয়রথ চালাচ্ছেন তাই নিয়ে। ওডাফা ওকোলি আর হোসে ব্যারেটোই মঙ্গলবার ফরোয়ার্ডে শুরু করছেন, সুনীল ফের হয়তো মাঝমাঠে। এ সব নিয়ে আলোচনা কম।
সোমবার সকালে দু’টো দল করে খেলানোর পর বেশ কিছুক্ষণ ইনডাইরেক্ট ফ্রি-কিক প্র্যাক্টিস করালেন সুব্রত। রাকেশ মাসি, মনীশ মৈথানির অল্প চোট আছে। প্রথম এগারোয় তাঁরা থাকবেন কি না তা চূড়ান্ত হবে মঙ্গলবার।
|
ফর্মের খোঁজে। সোমবার মোহনবাগান প্র্যাক্টিসে সুনীল।— নিজস্ব চিত্র |
নবি-সুরকুমার দুই সাইড ব্যাকে। স্টপারে কিংশুকের সঙ্গী হিসাবে ফিরছেন আনোয়ার। কিন্তু দলের অবস্থা তো এখন ভাঙা হাটের মতো। মরসুম শেষে পৌঁছে কেউ ফোন পাচ্ছেন অন্য ক্লাবের প্রস্তাবের। কেউ ক্লাবেই থাকছেন বড় অঙ্কে রফা করে। কারও আবার এখনও ঠিক নেই পরের মরসুমের ভবিষ্যৎ। অসীম তো বলেই ফেললেন, “দলবদলের সময় বিভিন্ন ক্লাবের ফোন কিছুটা প্রভাব ফেলেই। তবে সে সব না ভেবে আমাদের এখন বাকি সবগুলো ম্যাচ জিততে হবে।”
ক’দিন থেকে আর সাংবাদিকদের সামনে আসছেন না কোচ প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হল না। এমনকী ম্যানেজার বার্নাড ওপারানোজিও আসেননি। সাংবাদিক সম্মেলনে এলেন শুধু অসীম বিশ্বাস। টিডি-র নির্দেশে কুলুপ লেগেছে বাকি ফুটবলারদের মুখেও। দুবাই-বিতর্ক আরও গম্ভীর করেছে সুনীল ছেত্রীকে। সমর্থকেরা এই মরসুমে সুনীলকে বেশি করে মনে রাখছেন গোল নষ্ট করার জন্যই।
এ দিকে শিল্ড পরবর্তী সময়টা খারাপ যাচ্ছে প্রদ্যুম রেড্ডিরও। তাঁর দল লাজং গত তিনটে ম্যাচই হেরেছে। যার মধ্যে দু’টি অবনমন এড়াতে লড়াই করতে থাকা চিরাগ কেরল আর মুম্বই এফসির কাছে। তবু মরসুমে প্রদ্যুমের দলকে এখনও হারাতে পারেনি মোহনবাগান। ফেডারেশন কাপে ১-৩ হার, আই লিগের প্রথম পর্বে ড্র। প্রদ্যুম মনে করিয়ে দিলেন, দু’বছর আগেও আই লিগে মোহনবাগান ১-৪ হেরেছিল এই ম্যাচ। লাজং কোচ তাই বলছেন, “শেষ চার-পাঁচটা ম্যাচের যা ফল, তাতে আমরা হারলেই বরং অঘটন। তবে অবনমনের ছায়া থেকে বেরোতে অন্তত এক পয়েন্ট দরকার।” যদিও তাঁর দলের মিডিও চিত্রসেন সিংহ নেই কার্ডের জন্য। মাসাংভা নেই চোটের জন্য। আছেন রেনেডি সিংহ, সুশীল সিংহ।
তবে সে সব নিয়ে কেউ চিন্তিত নন। নিয়মরক্ষার ম্যাচে জয় স্মরণীয় হয়ে থাকবে না। থেকে যাচ্ছে শুধু সম্মানরক্ষার প্রশ্নটা। |