জয়পুরে বিপর্যয়ের মধ্যে একমাত্র উজ্জ্বল দিক হল তাঁর ৪৯ বলে ৫৯। এ বার সামনে ক্রিস গেইলের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। সোমবার বেঙ্গালুরুর হোটেলে বসে আনন্দবাজার-কে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন মনোজ তিওয়ারি।
|
প্রশ্ন: ০-২ এর পর টিমের মনোবলের কী অবস্থা?
মনোজ: ঠিকই আছে। সবে দু’টো ম্যাচ হয়েছে। আমরা ভাল খেলতে পারিনি ঠিকই। কিন্তু আইপিএলের এখনও চোদ্দোটা ম্যাচ বাকি। এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
প্র: নাইট সমর্থকরা অধৈর্য হয়ে পড়ছেন। তাঁদের কী বলবেন?
মনোজ: এটাই বলব যে, সবাই আর একটু ধৈর্য ধরুন। গত বছরও কিন্তু আমরা কোয়ালিফায়ার্স খেলেছি। তার আগের তিন বছর হয়তো সে রকম ভাল যায়নি। আমাদের টিমটা যদি দেখেন, ভাল প্লেয়ারের অভাব নেই। প্রথম দু’টো ম্যাচে পারফরম্যান্স হয়নি। কিন্তু আমরা আইপিএল থেকেই ছিটকে গিয়েছি এমন তো নয়।
প্র: কেকেআর ভক্তরা বেশ ভয় পাচ্ছেন। একে ০-২ স্কোরলাইন। তার উপর তৃতীয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ গেইল!
মনোজ: আমি এটুকু বলতে পারি যে, একটু আশা রাখুন আমাদের ওপর। জানি ওরা শক্তিশালী টিম। কিন্তু আমরাও একেবারে খারাপ টিম নই। এখনই আশা হারাবেন না।
প্র: ও দিকে দাদা দারুণ ক্যাপ্টেন্সি করছে। দিন্দা দারুণ বোলিং করছে। সে সব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে শুনলে কেমন লাগে?
মনোজ: আমি খুব একটা ও সব মাথার মধ্যে ঢোকাচ্ছি না। কাগজ পড়া ছেড়ে দিয়েছি। ঠিক করেছি, যখন ম্যাচ খেলব, কাগজ পড়ব না। এত ট্র্যাভেলিং করছি, টিভি-ই বা দেখা হয় কোথায়! দাদি বনাম কেকেআর জাতীয় আলোচনা থেকে তাই আমি দূরে আছি। কিন্তু আমি জানি দিন্দা ভাল বোলিং করছে। আমি ওর জন্য খুব খুশি। দু’টো ম্যাচের পর ও সেকেন্ড হায়েস্ট উইকেট-টেকার। যত ম্যাচ যাবে তত আরও ভাল বল করবে। দিন্দা খুব খেটেছে। এই ফলটা ওর প্রাপ্য। আর দাদির ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। ভারতের সর্বকালের সেরা ক্যাপ্টেনদের এক জন। পুণের ম্যাচগুলো আমি দেখেছি। প্রথম ম্যাচে যে ভাবে প্রথম ওভারেই স্পিনার নিয়ে এসে রিচার্ড লেভিকে তুলে নিল, মাস্টারস্ট্রোক! ক্যাপ্টেন্সি সহজাত ভাবে ভেতরে না থাকলে মাঠে দাঁড়িয়ে দ্রুত ভেবে তৎক্ষণাৎ এ সব সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।
প্র: দিন্দার সঙ্গে ফোনে কথা-টথা হল কিছু?
মনোজ: হ্যাঁ। মেসেজ করি। বিবিএম করি। প্রথম ম্যাচে ভাল বোলিং করার পরেই করেছিলাম।
প্র: ভারতীয় দলের সঙ্গে থাকার সময় তো ম্যাচই পাচ্ছিলেন না। আগের দিনের হাফ সেঞ্চুরিটাকে সে দিক থেকে কী ভাবে দেখছেন?
মনোজ: খুব অসাধারণ কিছু নয়। কিন্তু নিজের প্রতি বিশ্বাস ফেরানোর ইনিংস। ম্যাচ কী, আমি তো নেটে ব্যাটিংটাও ঠিক মতো পাচ্ছিলাম না। মনে হয়েছিল ব্যাটিংটাই হয়তো ভুলে যাব। যাক গে, থাক ও সব কথা।
প্র: কেকেআর ব্যাটিং লাইন-আপের অন্যতম প্রধান চরিত্র হিসেবে আপনার বিশ্লেষণ কী? প্রথম দু’টো ম্যাচে এ ভাবে ব্যাটিং ব্যর্থ হল কেন?
মনোজ: টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খুব গুরুত্বপূর্ণ হল একটা ভাল শুরু পাওয়া। সেটা আমাদের হয়নি। কয়েকটা ভাল বলে উইকেট গিয়েছে। ওপরের দিককার ব্যাটিংটা জমাট করতে হবে। তা হলে পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা গিয়ে মারতে পারবে।
প্র: জয়পুরে ব্যাটিং করার সময় মনের মধ্যে কী চলছিল?
মনোজ: আমি যখন ব্যাট করতে গেলাম তখনই তো ৮ রানে ৩ উইকেট হয়ে গিয়েছে! আমি এত দিন পর ব্যাট করছি, ভাবছিলাম একটা পার্টনারশিপ করা দরকার। মনে হয়েছিল, দু’টো পার্টনারশিপ হয়ে গেলে ম্যাচটা হয়তো বের করতে পারব। কিন্তু তার পরেও উইকেট পড়তে থাকল।
প্র: গেইল-কোহলি ব্যাটিং জুটি? না মুরলীধরন-ভেত্তোরি স্পিন জুটি? কেকেআর-এর কাঁটা কোনটা?
মনোজ: আমি ও রকম ব্যাটিং বা বোলিং জুটি হিসেবে দেখছি না। আমি বলব, ওরা ভাল টিম। আমরাও ভাল। এর পর ম্যাচে কী হয় দেখা যাক না! |