|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
সাহিত্যে রসের অভাব |
বইপোকা |
‘রসসাহিত্য’ বলিয়া এক আলগা পরিভাষা প্রবল বিক্রমে চালু ছিল বঙ্গসাহিত্যের আলোচনায়। ‘সাহিত্য’ শব্দটির মধ্যেই ‘রস’-এর ধারণা আছে, সুতরাং তাহাকে বাহির করিয়া আবার ‘সাহিত্য’-এ জুড়িয়া দিলে পরিভাষার রসাভাষ ঘটে। সে কারণেই পরিভাষাটি যথেষ্ট আলগা। সাধারণ ভাবে, ‘নন-ফিকশন’ ব্যতীত সকল সাহিত্যকেই পুরাকালে ‘রসসাহিত্য’ আখ্যা দেওয়া হইত। কিন্তু অধুনা শব্দটি লুপ্তপ্রায়। বঙ্গসাহিত্যের আলোচনায় ভেগোলজিক্যাল ধারাটি শুকাইয়া যাওয়াই উচিত। কিন্তু আশঙ্কার কথা হইল, আলোচ্য ‘রসসাহিত্য’ই যে শুকাইয়া যাইতেছে। স্মরণকালের মধ্যে এমন কোনও ছোটগল্পকার বা ঔপন্যাসিক পাঠগোচর হইলেন না যাঁহাকে লইয়া নূতন আনন্দ, নূতন আশা জাগিতে পারে। কেন এমন হইল সে আলোচনা করা জরুরি এখনই। পাশাপাশি, যাহা আছে তাহাকে সযত্নে বাঁচাইয়া রাখাও জরুরি। সেই কাজে বঙ্গীয় বইপাড়ায় এখনও হেলাফেলা সারাবেলা...। গুটিকত ধ্রুপদীকে বাদ দিলে বাংলা ফিকশন-এর কোনও পাঠপুঞ্জীকৃত সংস্করণ এখনও অধরা। পত্রিকা, প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ, সমগ্র বা রচনাবলির পাঠ অনেকাংশে মেলে না। লেখকের অভিপ্রায় প্রুফ-সংশোধক কিংবা মুদ্রণকর্মীর হস্তে খণ্ডিতই থাকিয়া যায়। বিভূতিভূষণ হইতে সুবোধ ঘোষ, অদ্বৈত মল্লবর্মণ হইতে আশাপূর্ণা দেবী প্রায় সকলের ক্ষেত্রে এই বিপত্তি। বিষয়টি আশঙ্কাজনক, কারণ ভবিষ্যদ্রষ্টা না হইলেও অনুমান করা যায়, আরও অন্তত অর্ধশতক বাঙালির রসসাহিত্যপাঠ পুরাতনের উপরই নির্ভরশীল থাকিবে। |
|
|
|
|
|