সংস্কৃতি যেখানে যেমন...

উঠতি প্রতিভা
বসুন্ধরা মাজি।
‘আমায় কিছু ভাবনা দিও/ আর দিও এক মন-- / খুশির হাওয়া সে মনেতে/ বইবে সারাক্ষণ।/ সঙ্গে দিও আশার আলোর/ স্বপ্নে বোনা ভোর/ দেখবে তখন দেবই খুলে/ নতুন পথের দোর।’ ছড়াটি লিখেছে বোলপুরের স্কুলবাগানের বাসিন্দা বসুন্ধরা মাজি। বসুন্ধরা বোলপুর উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। হাওড়া থেকে প্রকাশিত প্রখ্যাত ছড়াকার তথা শিশু সাহিত্যিক সরল দে সম্পাদিত ‘টগবগ’ পত্রিকার শারদ সংখ্যায় (২০১০) ছড়াটি বেরিয়েছি। শুধু তাই নয়। জাপান থেকে প্রকাশিত বাংলা পত্রিকা ‘কিশোর চিত্র’-তেও ছড়া লিখেছে বসুন্ধরা ‘ফোটাবো শিউলি আবার/ ঘননীল আকাশটাতে/ কালো বেশ মেঘ পেয়েছি/ হোক না বৃষ্টি ঝরা/ তাতে কি ভয় পেয়েছি?’।
বসুন্ধরা সম্ভাবনাময় শিশু সাহিত্যিক। মাত্র সাড়ে চার বছর বয়সে একটা গল্প লিখে সবাইকে চমকে দিয়েছিল সে। ইতিমধ্যেই বহু পত্রপত্রিকায় ছড়া ও গল্প লিখে সে নিজের একটা পরিচিতি আদায় করে নিয়েছে। পেয়েছে প্রচুর পুরস্কারও। শান্তিনিকেতনের আকাশবাণীতে বসুন্ধরার লেখা বেশ কয়েকটি শ্রুতিনাটক সম্প্রচার হয়েছে। আঁকা, গান, আবৃত্তি কিংবা পড়াশোনা- সবেতেই সবার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সে এগিয়ে চলেছে। বসুন্ধরার কবিপ্রতিভায় মুগ্ধ শিশু সাহিত্যিক আশিসকুমার মুখোপাধ্যায়। তাঁর বিশ্বাস, “সমসাময়িককালে শিশুদের উপযোগী তেমন লেখক-লেখিকার অভাব নিয়ে আক্ষেপ ছিল লীলা মজুমদারের। আজ তিনি জীবিত থাকলে বোলপুরের বসুন্ধরাকে নিয়ে গর্ব করতেন।” আশিসবাবুর মত অসংখ্য শুভানুধ্যায়ীর বিশ্বাস রক্ষা করার ভার এখন এই নবীন প্রতিভার উপর।

ভিন্ন প্রচেষ্টা
আনন্দধারার কচিকাঁচারা।
১৯৯৬ সাল থেকে একটু একটু করে এতদিনে দুবরাজপুর শহরে ব্যাপক সাংস্কৃতিক বিকাশ ঘটিয়েছে সুপ্রিয়া গড়াই পরিচালিত ‘আনন্দধারা কালচারাল সেন্টার’। প্রায় শতাধিক ছাত্রছাত্রী ওই সেন্টারে কত্থক, ভারত নাট্যম প্রভৃতি নৃত্য এবং অঙ্কন শেখেন। চার বছরের শিশু থেকে তরুণ-তরুণীরা ওই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী। তাঁদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য ওই সংস্থা প্রতি বছরই কোনও না কোনও বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ও লোকসংস্কৃতির অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন প্রখ্যাত ও প্রয়াত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী শান্তিদেব ঘোষের ছাত্রী সুপ্রিয়াদেবী। ২০০০ সাল থেকে সংস্কৃতির প্রসারের জন্য একটি অন্য ভাবনার প্রাথমিক স্কুলও চালু করেছেন তিনি।

আদিবাসী নাচ
কঙ্কালিতলায় আদিবাসী উৎসব।
আদিবাসী লোক সংস্কৃতির উৎসব শুরু হয়েছে বোলপুরের কঙ্কালিতলা পঞ্চায়েতের দিঘিডাঙা আদিবাসী গ্রামে। বিলুপ্তপ্রায় করম নাচ প্রসার এই উৎসবের অন্যতম উদ্দেশ্য। শুক্রবার দু’দিনের এই নৃত্যানুষ্ঠানের সূচনা হয়। উদ্যোক্তা কঙ্কালিতলা অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস। অনুষ্ঠানে রাজ্যের পরিসংখ্যান ও পরিকল্পনা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। উদ্যোক্তরা জানিয়েছেন, বোলপুর ব্লকের ৯টি পঞ্চায়েতের আদিবাসী গ্রামগুলি থেকে শিল্পীরা এই উৎসবে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের ৩২টি দল আদিবাসীদের বিভিন্ন নৃত্য পরিবেশন করেন।

কালাম পটুয়া
কাকা বৈদ্যনাথ পটুয়া ছিলেন মৃৎ শিল্পী। মাত্র ১২-১৩ বছর বয়স থেকেই তাঁর কাছেই মাটির মূর্তি গড়ায় হাতে খড়ি। মূর্তি গড়ার কাজ করতে করতেই শিল্পের প্রতি আসক্ত হন বর্তমানে রামপুরহাটের বাসিন্দা কালাম পটুয়া। ধীরে ধীরে পটচিত্রের প্রতি তাঁর বিশেষ আগ্রহ জন্মাতে থাকে। পটচিত্র নিয়ে শুরু করেন নানা অনুসন্ধান। পটশিল্পের দক্ষ শিল্পী হয়ে ওঠেন কালাম পটুয়া। ১৯৮৭ সালে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর মেদিনীপুরে সারা বাংলা পটচিত্র কর্মশালা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করে। সেখানে কালামের তৈরি পট তৃতীয় স্থান অধিকার করে। ইতিমধ্যে সারা দেশে, বিশেষত দিল্লি-মুম্বইয়ে তাঁর পট যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছে। ফরাসি বিপ্লবের ২০০ বছর পূর্তিতে কেন্দ্র সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রক আয়োজিত পটচিত্র প্রতিযোগিতাতেও কালাম প্রথম হয়েছেন। গত বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ভিক্টোরিয়াতে লন্ডনের অ্যালবার্ট মিউজিয়াম আয়োজিত কালীঘাটের পট প্রদর্শনীতে কালামের ৫টি ছবি প্রদর্শিত হয়েছে। বর্তমান সময়ে বহু শিল্পীই কালীঘাটের পটের পুননির্মাণ করছেন। তাঁদের মধ্যে কালাম পটুয়ার কাজ একেবারেই স্বতন্ত্র।
সংক্ষেপে। বিশ্ব নাট্য দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় দু’টি নাটক মঞ্চস্থ হল বিষ্ণুপুর যদুভট্ট মঞ্চে। আয়োজক ‘সংলাপ নাট্য মঞ্চ’। প্রথম নাটক গড়বেতার ‘আমরা নবীন নাট্য দল’-এর ‘সারা রাত্তির’। সবশেষে ছিল আয়োজক সংস্থার নাটক-- ‘তুষু’। ছিল সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানও।

বাউল উৎসব
সোনামুখীতে বাউল মেলা।
মানবাজার থানার বনকাটা গ্রামে সম্প্রতি তিনদিন ধরে বাউল উৎসব হল। আয়োজক কমিটির অন্যতম কর্তা দিলীপ পাত্র বলেন, “বনকাটা আশ্রমে কয়েক দশক ধরে এই উৎসব পালিত হয়ে আসছে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান ও নদিয়া থেকে বাউলরা এসেছিলেন। বাউল সমাজ ও দেহতত্ত্ব সম্পর্কে আলোচনা ও বাউলগান পরিবেশিত হয়।”
অন্যদিকে মনোহর দাসের তিন দিনের বাউল মহোৎসব মঙ্গলবার রাতে মহাসমারোহে শেষ হল। সোনামুখী শহরে রামনবমীতে বসে এই মেলা। মেলায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বাউল সাধকরা উপস্থিত হয়েছিলেন। পুরপ্রধান কুশল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মেলায় এ বার ২২টি বাউল আখড়া বসেছিল।”

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
শ্রীরামনবমী পুজো উপলক্ষে বাঁকুড়ার পাঠকপাড়ার শ্রীশ্রী রামচন্দ্র ঠাকুর জিউ মন্দির কমিটি তিনদিন ব্যাপী একটি বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করল। অনুষ্ঠানে গীতা পাঠ, নাম সংকীর্তনের পাশাপাশি স্থানীয় শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। উদ্যোক্তা কমিটির সম্পাদক অমরনাথ চট্ট্যোপাধ্যায় বলেন, “এ বছর আমাদের পুজো ১২ বছরে পড়ল। প্রত্যেক বছরের মত এ বারেও ভক্তদের প্রসাদ দেওয়া হয়।”

বিশ্ব নাট্য দিবস
বিশ্ব নাট্য দিবস উপলক্ষ্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় দু’টি নাটক মঞ্চস্থ হল বিষ্ণুপুর যদুভট্ট মঞ্চে। আয়োজক ‘সংলাপ নাট্য মঞ্চ’। প্রথম নাটক গড়বেতার ‘আমরা নবীন নাট্য দল’-এর ‘সারা রাত্তির’। সবশেষে ছিল আয়োজক সংস্থার নাটক-- ‘তুষু’।

শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
বসন্ত সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের শাস্ত্রীয় সংগীতানুষ্ঠান হয়ে গেল গত শনিবার। বাঁকুড়ার রবীন্দ্রভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ অরুণ শীট বলেন, “অনুষ্ঠানে মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা রাগ সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এ ছাড়া বাঁকুড়ার প্রবীণ তবলাবাদক বিনোদ ভট্টাচার্যকে সংবর্ধনা জানানো হয়।

বসম্ত উৎসব
বিষ্ণুপুরে ‘আরণ্যক’ বনবাংলোয় একদিনের বসন্ত উৎসব হল রবিবার। একজনকে ‘বসন্তকন্যা’ সাজিয়ে আবির ছড়িয়ে শালগাছের তলায় দিনভর চলল অনুষ্ঠান। বসন্ত বিষয়ক গানে, নাচে ও কবিতায় যোগ দিয়েছিলেন স্থানীয় কবি-শিল্পীরা।

সংক্ষেপে
বরাবাজারের পুইজাংগা গ্রামে সম্প্রতি বাউল সম্মেলন হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও বাংলাদেশ থেকেও বাউল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা যোগ দিয়েছিলেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.