|
|
|
|
সুটিয়া গণধর্ষণ কাণ্ড |
‘প্রতিবাদী মঞ্চ’র সভাপতিকে খুনের চেষ্টায় মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গাইঘাটা |
সুটিয়া গণধর্ষণের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ‘প্রতিবাদী মঞ্চ’-এর সভাপতি ননীগোপাল পোদ্দারকে খুনের চেষ্টায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনার প্রায় এক বছর পরে পরিতোষ মৃধা ওরফে সোমেন নামে ওই দুষ্কৃতী বুধবার বিকেলে ধরা পড়ে পুলিশের হাতে। ধৃতের কাছ থেকে ১০ কিলোগ্রাম গাঁজাও উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের ১৪ মার্চ রাত ১০টা নাগাদ উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায় সুটিয়া বাজারে দোকানে বসে গল্প করেছিলেন ননীগোপালবাবু। একটি ট্যাক্সি ও দু’টি মোটর সাইকেলে করে দুষ্কৃতীরা সেখানে হাজির হয়। তারা ননীগোপানবাবুকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তাঁর সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তি এক দুষ্কৃতীকে জাপটে ধরে আটকানোর চেষ্টা করলে তাঁর মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আঘাত করে দুষ্কৃতীরা। এর পরে ননীগোপালবাবুকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তারা। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি কোনওরকমে দোকানের মধ্যে ঢুকে পড়লে দুষ্কৃতীরা বোমা ছোড়ে। বোমা-গুলির শব্দে আশপাশের লোকজন বেরিয়ে এলে দুষ্কৃতীরা বোমা ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায়। পুলিশের বক্তব্য, গণধর্ষণের মামলায় যাতে ননীগোপালবাবু সাক্ষ্য দিতে না পারেন সে জন্যই তাঁকে খুন করার চেষ্টা হয়েছিল। ওই ঘটনায় জড়িত বাকিদেরও গ্রেফতার করা হবে।
পুলিশ জানায়, ধৃত পরিতোষের বিরুদ্ধে ননীগোপালবাবুকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ ছাড়াও খুন, বেআইনি অস্ত্র রাখা-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। কয়েক বছর আগে গোবরডাঙা হিন্দু কলেজ সংলগ্ন এলাকায় কৃষ্ণ নামে এক ব্যাক্তিকে সে কুপিয়ে খুন করেছিল বলে অভিযোগ। ননীগোপালবাবুর উপরে হামলার অভিযোগে পুলিশ মাস দুয়েক আগে বিদ্যা মজুমদার নামে নামে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। সে এখন সংশাধনাগারে। পুলিশের দাবি, যে কোনও ‘অপারেশনে’ গুলি চালাতে পারদর্শী পরিতোষই সেদিন ননীগোপালবাবুকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
২০০২ সালের জুলাই মাসে সুটিয়ার গণধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। প্রতিবাদী মঞ্চ গড়ে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন স্থানীয় মানুষ। মূলত প্রতিবাদী মঞ্চের দুই সদস্য ননীগোপালবাবু এবং জিতেন্দ্রনাথ বালা-সহ কয়েকজনের চেষ্টাতেই গণধর্ষণের ঘটনাটি জানাজানি হয়। মঞ্চ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পাঁচটি মামলায় সাতজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। এ চাড়া আরও ৩৩টি মামলা বিচারাধীন।
মঞ্চের সম্পাদক বরুণ বিশ্বাস বলেন, “সাক্ষীরা যাতে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে ভয় পান সে জন্য দুষ্কৃতীরা এখনও সক্রিয়। তবে পরিতোষ গ্রেফতার হওয়ায় সুটিয়ার মানুষ খুশি।” |
|
|
|
|
|