উদ্ধার ২১ কিলোগ্রাম গাঁজা
হাবরায় পুলিশের জালে তিন দুষ্কৃতী
পুলিশের হাতে ধরা পড়ল দুই সুপারিকিলার। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা থানার পুলিশ স্থানীয় রাজবল্লভপুর এলাকা থেকে মঙ্গলবার বিকেলে তাদের গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, ধৃত মিন্টা বিশ্বাস ও বোচা সিংহ রায়ের কাছ থেকে ২১ কিলোগ্রাম গাঁজাও উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃতদের জেরা করে মঙ্গলবারই অশোকনগর থেকে তাদের এক সাগরেদকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তার নাম ছোটাকালী। জেলার পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, “ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন, তোলাবাজি, বোমাবাজি, চুরি-সহ নানা সমাজবিরোধী কাজকর্মের অভিযোগ রয়েছে। ধৃতজের জেরা করে আরও দুষ্কৃতীদের ধরার চেষ্টা চলছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মিন্টা ও বোচা হাবরার শ্রীনগর এলাকার মানুষের কাছে দীর্ঘদিন ধরেই ‘ত্রাস’। কয়েকবছর আগেও এলাকার মানুষ ওই দু’জনের বিরুদ্ধে কোথাও মুখ খুলতে সাহস পেতেন না। এলাকার একটু সম্পন্ন গৃহস্থ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত তোলা আদায় তাদের পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
ধৃত তিন দুষ্কৃতী। ছবি: শান্তনু হালদার।
কেউ তোলায় দিতে রাজি না হলে তাঁদের হুমকি দিত, শাসাত তারা। এমনকী বাড়ির সামনে বোমাবাজি, গুলি চালানোর মতো ঘটনাও ঘটত আকছার। বছর তিনেক আগে অতিষ্ঠ মানুষজন ওই দু’জনের বিরুদ্ধে একজোট হন। গড়ে তোলেন ‘শান্তি কমিটি’।
এক সময় মিন্টা ও বোচার বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে তাদের এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তারই ‘বদলা’ নিতে মিন্টা ও তার দলবল ‘শান্তি কমিটি’র এক সদস্য ভোলাকে খুন করে। যদিও মিন্টা ও তার দলবলের এমন হুমকিকে পাত্তা না দিয়ে রুখে দাঁড়ান এলাকার মানুষ। তাঁদের প্রতিরোধের মুখে আর এলাকায় ঢুকতে পারেনি মিন্টা। এর পর বোচা দুর্গাপুরে ও মিন্টা বারাসতে থাকত। সম্প্রতি তারা ফের এলাকা দখল করতে সক্রিয় হয়ে ওঠে।
পুলিশ জানায়, গত ২৬ মার্চ শ্রীনগরের বাসিন্দা ও হাবরা পুরসভার সাফাইকর্মী গোবিন্দ বিশ্বাস দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখন হন। ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি আসতেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনা এবং সম্প্রতি হাবরা এলাকায় বোমবাজি ও গুলি চালানোর ঘটনার তদন্তে নেমে মিন্টা ও বোচার কথা জানতে পারে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, শ্রীনগর এলাকায় অন্য এক দুষ্কৃতীদলের পাণ্ডা মনতোষকে খুন করাই ছিল মিন্টাদের উদ্দেশ্য। ঘটনার সময় গোবিন্দবাবুর পাশেই ছিল মনতোষ। দুষ্কৃতীরা মনতোষকে খুন করতেই গুলি চালিয়েছিল। কিন্তু তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে জখম হন গোবিন্দবাবু। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালের ২০ মার্চ হাবরা থানা এলাকায় এবং ২৬ অগস্ট অশোকনগর থানা এলাকায় দুই ব্যক্তিকে মিন্টা ও তার দলবল খুন করে। এক পুলিশ কর্তা জানান, মিন্টা ও বোচা শ্রীনগর এলাকায় এতটাই ‘ত্রাস’ ছিল যে অনেকে পুলিশকে না জানিয়ে ওদের তোলা দিতে বাধ্য হতেন। তোলাবাজির পাশাপাশি টাকার বিনিময়ে খুন করাটাও পেশা করে নিয়েছিল ওরা। এ দিন মিন্টা ও বোচার গ্রেফতারের কথা জানার পর স্বাভাবিকবাবেই স্বস্তি নামে শ্রীনগর এলাকায়। সম্প্রতি হাবরা থানা এলাকায় বেশ কিছু চুরি-ডাকাতি, কেপমারি, বোমাবাজির ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করতেও শুরু করেছিলেন। কিন্তু গত কয়েকদিনের মধ্যে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী, যাদের মধ্যে দাগী দুষ্কৃতীও রয়েছে ধরা পড়ায় সাধারণ মানুষ তাঁদের উপর আস্থা ফিরে পাচ্ছেন বলে দাবি পুলিশের।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.