শহর জুড়ে গাছের গায়ে পেরেক পুঁতে বিজ্ঞাপনের বোর্ড ঝোলানোর প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় কোচবিহারে পরিবেশপ্রেমী মহলে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, সরকারি জমিতে সবুজায়ন প্রকল্পে লাগানো গাছ তো বটেই রাস্তার ধারে প্রাচীণ গাছগুলিতেও পেরেক পুঁতে দেদার বিজ্ঞাপনের বোর্ড টাঙানো হচ্ছে। এরমধ্যে বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি সরকার অনুমোদিত একাধিক সংস্থার বোর্ডও রয়েছে। দিনের পর দিন বোর্ডের সংখ্যা বাড়ছে। খোদ রাজ্যের বনমন্ত্রীর শহরে এমন ঘটনা ঘটতে থাকলেও প্রশাসনের কোনও হেলদোল না থাকায় বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “গাছে লোহার পেরেক পুঁতে বিজ্ঞাপন দেওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। শীঘ্রই জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে ওই প্রবণতা বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিতে বলব।” আর জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “সরকারি বিজ্ঞাপন ওই ভাবে ঝোলানোর কোনও প্রশ্নই নেই। |
একাংশ এজেন্সির দায়িত্বপ্রাপ্তরা গাছে বোর্ড লাগিয়েছেন। পুরসভা ও পূর্ত দফতরকে ওই ব্যাপারে ব্যাবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” পরিপ্রেমীদের অভিযোগ, জেলায় রাজ্যের সবথেকে কম মাত্র ১.৬৮ শতাংশ বনভূমি রয়েছে। রাজাদের আমলে লাগানো তল্লি, পাম, নাগকেশরের মত বহু গাছ ইতিমধ্যে নানা কারণে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার উপরে বোর্ড ঝোলানোয় আরও অনেক গাছ নষ্ট হতে বসেছে। শহরের জেনকিন্স স্কুল, সুনীতি অ্যাকাডেমি, নৃপেন্দ্রনারায়ণ স্কুল লাগোয়া রাস্তায় প্রচুর বোর্ড লাগানো হয়েছে। স্টেশন মোড় এবং লাগোয়া এলাকায় সরকারি প্রকল্পের বিজ্ঞাপন গাছে পেরেক পুঁতে ঝোলানো হয়েছে। এমনই অবস্থা শহরের বিভিন্ন রাস্তার গাছগুলির। ওই ভাবে পেরেক দিয়ে গাছে বিজ্ঞাপনের বোর্ড বা ফ্লেক্স ঝোলানো হলে গাছের কাণ্ড ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাতে ফাটল ধরে গাছটি শুকিয়ে মরে পর্যন্ত যেতে পারে। কোচবিহার নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার স্টাডি গ্রুপের সম্পাদক অরূপ গুহ বলেন, “গাছে যেভাবে পেরেক দিয়ে বিজ্ঞাপন ঝোলানো হচ্ছে তা দুশ্চিন্তার। প্রশাসনকে বহুবার জানিয়ে লাভ হয়নি। এই প্রবণতা রুখতে লিফলেট বিলি এবং এলাকায় ভিত্তিক সভা করা হবে।” হেরিটেজ সোসাইটির কোচবিহার শাখার মুখপাত্র অরূপ জ্যোতি মজুমদার বলেন, “রাজাদের আমলে রাস্তার ধারে গাছ লাগানো হয়েছিল। সেগুলি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে প্রচার অভিযান ছাড়াও ১৮ এপ্রিল বিশ্ব হেরিটেজ দিবসে নাগরিক কনভেনশন করা হবে। সচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া হবে।” |