বড় বড় ট্রাকগুলো যে ভাবে পড়ে রয়েছে, দেখে মনে হচ্ছে কেউ যেন খেলনা গাড়ি উল্টে দিয়েছে। উড়ে গিয়েছে বাড়ির ছাদ। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বড় বড় গাছ। উত্তর টেক্সাসের বেশ কিছু শহরে এখন এটাই ছবি। স্থানীয় সময় রাত ৮টা নাগাদ বেশ কয়েকটি শক্তিশালী টর্নেডো আছড়ে পড়ে ডালাস, কেনডেন, আর্লিংটন, ল্যাঙ্কাস্টার-সহ বেশ কিছু শহরে। তবে, পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হলেও এখনও কোনও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। |
টর্নেডোর তাণ্ডবে লন্ডভন্ড টেক্সাসের ফর্নি শহর। বুধবার এপি-র ছবি। |
মার্কিন আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, অন্তত ৬ থেকে ১২টি টর্নেডো আছড়ে পড়ে ওই শহরগুলিতে। এক প্রত্যক্ষদর্শী জনাথন কুকের কথায়, “সে সময় আমি ডালাসের ফোর্ট-ওর্থে ছিলাম। সকাল থেকেই বৃষ্টির সঙ্গে ছিল ঝোড়ে হাওয়া। হঠাৎই রাতের দিকে এক সময় সে সব উধাও হয়ে গেল। প্রবল শব্দের সঙ্গে আচমকা দেখি আকাশের মেঘ যেন পাক খেতে খেতে ক্রমশ সরু হয়ে মাটিতে নেমে আসছে। মুহূর্তের মধ্যে সামনে যা ছিল, সব ছিন্নভিন্ন করে দিল।” পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, ট্রাক্টর এবং ট্রেলার পার্ক করে রাখার একটি জায়গায় তাণ্ডব চালায় টর্নেডো। ১৫ থেকে ২০ হাডার পাউন্ড ওজনের এক একটি ট্রাক্টর নিমেষে আকাশে তুলে আছড়ে ফেলে। কেউ হতাহত না হলেও ওই পার্কিংয়ে রাখা গাড়িগুলির প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। ডালাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্রে জানানো হয়েছে, শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে ১১০টি বিমানের। খারাপ আবহাওয়ার জন্য ৪০০-র বেশি বিমান বাতিল করা হয়। বিমানবন্দরে আটকে রয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। কাল রাত পর্যন্ত উত্তর টেক্সাসে প্রায় ৪৭ হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। আর্লিংটন পুলিশের মুখপাত্র বলেন, “প্রবল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এখনও মৃত্যুর খবর মেলেনি। তবে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।” দমকল এবং পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, টর্নেডোয় যা ক্ষতি হয়েছে, তা এখনই বলা শক্ত। রেড ক্রসের হিসেব অনুযায়ী, ল্যাঙ্কাস্টারেই ক্ষতি হয়েছে অন্তত ৬৫০টি বাড়ির। উদ্ধার কার্যে গতি আনতে কার্ফু জারি করা হয়েছে সেখানে।
টেক্সাসের লেফটেন্যান্ট গভর্নর ডেভিড দেওহার্স্ট জানিয়েছেন, আগামী কিছু দিন টেক্সাসের আবহাওয়া বেশ খারাপ থাকবে। এপ্রিল মাস এমনিতেই সব চেয়ে বেশি টর্নেডো-প্রবণ। চলে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত। তবে মার্কিন আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, টেক্সাসে অন্য বছরের থেকে এ বার বেশিই টর্নেডো হতে চলেছে। |